বিএসইউপি প্রকল্পের টাকা খরচ হয়নি। যেটুকু হয়েছে বলে খাতায়-কলমে দেখানো হয়েছে, তাতেও দুর্নীতি রয়েছে। এমনই সব অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার রানিগঞ্জ পুরসভায় বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল। তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলির নেতৃত্বে পুরপ্রধান সিপিএমের অনুপ মিত্রের হাতে একটি দাবিপত্রও তুলে দেওয়া হয়।
বিধায়ক অভিযোগ করেন, রানিগঞ্জ পুর এলাকায় বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ২০০৭ সালে ১৯ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা এবং ২০০৮-এ ৩১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়েছিল। তার মধ্যে ২০০৭-এ ৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা, ২০০৮-এ ১৪ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা পুরসভাকে কাজ করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। পুরসভা সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রথম বর্ষে ৭ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা কাজ শেষ হওয়ার ব্যাপারে ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা দিয়েছে। অথচ, সরকারি নথিতে দেখা যাচ্ছে ওই বছরের বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে তাঁরা ৩ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা দেওয়া হলেও কার্যক্ষেত্রে সেই কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ সোহরাব আলির। |
তৃণমূল বিধায়ক অভিযোগ করেন, এ ভাবে বরাদ্দকৃত টাকা খরচ না করে ফেলে রাখা হয়েছে। আবার যে টাকা খরচ হয়েছে বলে দেখানো হচ্ছে, তাতেও বিস্তর গরমিল রয়েছে। টাকা খরচ না করতে পারার ফলে বস্তিবাসীদের উন্নয়নও হচ্ছে না, অনুমোদিত বাকি টাকাও আসছে না। পুরপ্রধানের কাছে এই প্রকল্পের কাজ ঠিক মতো করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।
পুরপ্রধান অনুপ মিত্র অবশ্য জানান, প্রথম পর্যায়ে ৯৭৭টি বাড়ি তৈরির টাকা পাওয়া গিয়েছিল। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহাবীর কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকা ধসপ্রবণ হওয়ায় ৩৯১টি বাড়ি বাদ দিতে হয়েছিল। বাকি ৫৮৬টির মধ্যে ৪৮০টি গড়া হয়ে গিয়েছে। ৩০টির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৩০৬টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন মিলেছে। এর মধ্যে ৩৭০টির নির্মাণ শেষ। ২৭৪টি অর্ধনির্মিত এবং ৪৮টির নির্মাণকাজ প্রাথমিক পর্যায়ে। এ ছাড়া রাস্তা-সহ অন্য পরিকাঠামো তৈরির জন্য ২০১০ সালে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পূর্ত দফতরের ২০০৭-এর বাজারদর অনুযায়ী ধার্য টাকায় কোনও ঠিকাদার কাজ করতে চাননি। তাই কাজ করা যায়নি। বিধায়ক সোহরাব আলির অবশ্য দাবি, “২০১১ সালে নতুন করে দর বেড়েছে। তা-ও ওরা কাজ করতে পারেনি।” অনুপবাবু পাল্টা বলেন, “আমরা এই দর বাড়ানোর নিদের্শিকা হাতে পাইনি।” |