শ্রমিক বিক্ষোভে কাজ বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রে
বিভিন্ন রাজনৈতিক শ্রমিক সংগঠনের অবস্থান বিক্ষোভের জেরে বন্ধ থাকল ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ। ছাঁটাই হওয়া জমি-হারা ঠিকা শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে রঘুনাথপুরে নির্মীয়মান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সদর দরজা আটকে অবস্থান করে শ্রমিক সংগঠনগুলি। ওই প্রকল্পের মুখ্য বাস্তুকার জিতেন্দ্রকুমার সিংহ বলেন, “অবস্থান বিক্ষোভের জেরে এ দিন নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল।” পরে বিকেলে রঘুনাথপুরে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে এক বৈঠকের পর এ ব্যাপারে জট খোলে।
ওই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজ এথন প্রায় শেষ পর্বে। কয়েক মাস আগে দু’টি ঠিকা সংস্থা জমি-হারা ৯০ জনকে ছাঁটাই করে। সংস্থাগুলির যুক্তি ছিল, কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। তাই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত শ্রমিক রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলি তা মানতে চায়নি। সোমবার একই দাবিতে প্রকল্পের মূল বরাত পাওয়া সংস্থার স্থানীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল এসইউসি প্রভাবিত জমিহারা কমিটি। এ দিন সকাল থেকে এসইউসি বাদে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা নিয়ে গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি অবস্থান বিক্ষোভ করে। সামিল হয়েছিল বিক্ষুব্ধ জমিহারা কমিটিও। সদর দরজা আটকে অবস্থান শুরু করায় এ দিন প্রকল্প এলাকায় ঢুকতে পারেননি ডিভিসি-র আধিকারিকেরা। কাজে যোগ দেননি ঠিকা শ্রমিকেরা। কিছু ঠিকা শ্রমিক ঢোকার চেষ্টা করে বাধা পান।
ছাঁটাই শ্রমিকদের বহালের দাবিতে রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক সংগঠনগুলির বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
ওই প্রকল্পের সিটু নেতা হরেকৃষ্ণ শর্মার দাবি, “দু’টি সংস্থার ছাঁটাই করা জমি-হারা ৯০ জনকে পুনর্বহালের দাবি দীর্ঘদিন ধরে আমরা জানিয়ে আসছি ডিভিসি কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁরা আশ্বাস দিলেও নিয়োগের ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। তাই জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিগত ভাবে এ দিন কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছি আমরা।” একই সঙ্গে কমিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ ও ছাঁটাই সংক্রান্ত সুষ্ঠ নিয়োগনীতি প্রণয়নের দাবি করেছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা নারায়ণ মুর্মু, লালবাহাদুর সিংহ বলেন, “প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ পর্বে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও শুরু হয়নি। জমি-হারা ঠিকাশ্রমিকরা কাজ না পেলে সংসার চালাবে কী করে? নিয়োগনীতি দ্রুত তৈরি করতে হবে।” কমিটির ক্ষোভ, কাজ শেষপর্বে বলা হলেও বহিরাগত শ্রমিকদের বহাল রেখে ঠিকা সংস্থা বেছে বেছে স্থানীয় জমি-হারাদের ছাঁটাই করছে। ঠিকা সংস্থা দু’টি অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চায়নি।
ডিভিসি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথম পযার্য়ের কাজ শেষের মুখে হওয়ায় কিছু সংস্থা ইতিমধ্যে গুটিয়ে নিয়েছে। ফলে এই অবস্থায় প্রায় ৩০০০ জমি-হারা শ্রমিককে কাজে বহাল রাখা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকল্পের মুখ্য বাস্তুকার জিতেন্দ্রকুমার সিংহ বলেন, “ঠিকা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা জমিহারাদের প্রাধান্য দিই। দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজেও জমি-হারাদেরই নিয়োগের সময় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।” বিকেলে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ, ঠিকাদার সংস্থা ও জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে প্রশাসনের আধিকারিকেরা। বৈঠক শেষে মহকুমাশাসক প্রণব বিশ্বাস বলেন, “সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০ মার্চের মধ্যে একটি ঠিকা সংস্থা ছাঁটাই হওয়া ৪৪ জনকে কাজে বহাল করবে।” ডিভিসি সূত্রের খবর, বাকি শ্রমিকদের নিয়ে পরে আলোচনা হবে। জমিহারা কমিটির নেতা চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “সোমবারই ওই দুই সংস্থা ও ডিভিসি-র প্রতিনিধি আমাদের জানিয়েছিলেন আগামী সপ্তাহ থেকেই ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল করা হবে।” শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, আজ বুধবার থেকে ফের ডিভিসি-র প্রকল্পে স্বাভাবিক কাজ হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.