বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। সাম্প্রতিক অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে শুরু হয়েছে ভারতে অনুপ্রবেশ। সেই সুযোগে বেশ কিছু সন্দেহভাজন অপরাধী এ দেশে ঢুকছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের কট্টরপন্থী জামাত-ই-ইসলামের বেশ কিছু কট্টরপন্থীও রয়েছে। এই মর্মে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট পাঠাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাগুলিতে নজরদারি বাড়িয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই নির্দেশ মেনে সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ ও পুলিশের আলাদা নজরদারির পাশাপাশি যৌথ টহলদারির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনসল বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে আজই নির্দেশ এসেছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। সেই মোতাবেক আজই বিএসএফ ও পুলিশকে সেই নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” |
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে খবর, শাহবাগে জামাত-বিরোধী আন্দোলনের জেরে সাম্প্রতিক ঘটনায় বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর পরে বাংলাদেশে ব্যাপক ধড়পাকড় শুরু হয়েছে। এ দিকে, সংগঠন নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে জামাতের কট্টরপন্থীরা আগেভাগেই ভারতে ঘাঁটি গাড়তে চাইছে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, ঘোজাডাঙা ও হাকিমপুর সীমান্ত দিয়ে সেই কারণে অনুপ্রবেশ হঠাৎই বেড়ে গিয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কিছু লোককে জামাতের কট্টরপন্থী বলেই সন্দেহ করছে গোয়ন্দারা। রিপোর্টে সেই আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে।
এ দেশের বনগাঁ থেকে বসিরহাট পর্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকার ওপারেই রয়েছে বাংলাদেশের যশোহর, পুঁটখালি, সাতক্ষীরার মতো জেলাগুলি। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের ওই এলাকাগুলিতেই ঘাঁটি গেড়েছে জামাতের কট্টরপন্থীরা। কারণ, তাতে বেগতিক বুঝলেই পালানো যাবে।
দিন দু’য়ের আগেই পুঁটখালি থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢোকার সময় বেশ কয়েক জন জামাত কট্টরপন্থীকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র সমেত ধরে ফেলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এর পরেই পেট্রাপোল সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের বেনাপোলে শুক্রবারেই ব্যাপক বোমাবাজি করে জামাত কট্টরপন্থীরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ভয় দেখাবার জন্যই এই বোমাবাজি করা হয়। পুলিশ সুপার সুগত সেন অবশ্য এ দিন বলেন, “অনুপ্রবেশ রুখতে বনগাঁ ও বসিরহাটের এসডিপিও কে টহলদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌথ টহলদারি চলবে।”
সীমান্তে দায়িত্বে থাকা বিএসএফ এর ৪০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের এক কর্তা এ দিন বলেন, “বাংলাদেশে যখন থেকেই গণ্ডগোল শুরু হয়েছে তখন থেকেই আমাদের পাহারা জোরদার করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া আরও জোরদার হচ্ছে।” বাড়ানো হচ্ছে প্রতিটি ব্যারাক, প্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারে সশস্ত্র রক্ষী ও রাত ক্যামেরা নিয়ে নজরদারি। ইছামতী নদীর মতো জলাভুমিতে স্পিড বোটে নজরদারিও বাড়ানো হবে বলে জানা গিয়েছে। |