কোর্টের প্রস্তাব ধূলাগড়
বাস টার্মিনাস সরেনি কেন, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
সপ্ল্যানেড এবং বাবুঘাট থেকে ভিন্ রাজ্যের ও দূরপাল্লার বাস টার্মিনাস সরিয়ে ধূলাগড়ের অব্যবহৃত ট্রাক টার্মিনাসে নিয়ে যেতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতিরা চান, কলকাতায় একটি বড় টার্মিনাস তৈরির জায়গা না মিললে শহরের চারটি জায়গায় লোকাল বাসের জন্য অবিলম্বে ছোট ছোট টার্মিনাস তৈরি করুক রাজ্য। ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (নিরি)-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০০৭ সালে হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে এসপ্ল্যানেড থেকে বাস টার্মিনাস সরিয়ে নিতে বলে। রাজ্য ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেখানেও হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। ২০১১ সালে কোনও সময়সীমা না দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, বাস টার্মিনাস সরাতেই হবে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য আদালতকে জানায়, সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাস টার্মিনাস সরানো হবে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের শুভ্রতা অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত হাইকোর্টে যে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন, মঙ্গলবার তার শুনানি ছিল। সুভাষবাবু এ দিন আদালতে বলেন, “এসপ্ল্যানেড থেকে বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে কোনও চেষ্টাই নেই রাজ্যের।” বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, বাবুঘাটে দূরপাল্লার বাসগুলো এমন ভাবে দাঁড় করানো থাকে, যে তাঁদেরও যাতায়াতে অসুবিধা হয়।
বাবুঘাট বাসস্ট্যান্ড, এখন যেমন।—নিজস্ব চিত্র।
সুভাষবাবু বলেন, শৌচাগার বা বিশ্রামাগারের মতো ন্যূনতম পরিকাঠামো ছাড়াই বাবুঘাটে বছরের পর বছর ওই টার্মিনাস চলছে। মানুষের বর্জ্যে গঙ্গার দূষণও বাড়ছে। বাবুঘাট থেকে ভিন্ রাজ্যের দূরপাল্লার বাস ছাড়া অনেক লোকাল বাসও ছাড়ে। কিন্তু সেখানে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের প্রায় কোনও ব্যবস্থাই নেই। এসপ্ল্যানেডের গুরুত্বপূর্ণ বাস টার্মিনাসটিরও প্রায় একই হাল। ছোট ছোট হোটেল, দোকান আর গুমটিতে ভরা সে জায়গা সামান্য বৃষ্টিতেই নরকের চেহারা নেয়।
হাইকোর্টে বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানায়, সুপ্রিম কোর্ট কোনও সময়সীমা নির্দিষ্ট করেনি বলে রাজ্য তাকে যেন নিশ্চেষ্ট থাকার ছাড়পত্র ভেবে না নেয়। এসপ্ল্যানেড থেকে সরিয়ে শহরের চার জায়গায় টার্মিনাস তৈরি এবং আন্তঃরাজ্য ও দূরপাল্লার বাস টার্মিনাস ধূলাগড়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি রাজ্যকে সক্রিয় ভাবে বিবেচনা করতে হবে। রাজ্য সরকারের দুই কৌঁসুলি সমরাদিত্য পাল এবং বিকাশ মুখোপাধ্যায় আদালতের কাছে আবেদন করেন, আদালত এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট নির্দেশ দিলে রাজ্য সরকারের সুবিধা হবে।
সুভাষবাবু জানান, এসএসকেএম থেকে হো চি মিন সরণির মুখ পর্যন্ত ভিক্টোরিয়ার পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে অবাধ যান চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে তদানীন্তন পুলিশ কমিশনার হলফনামা দিয়ে হাইকোর্টকে জানান। ভিক্টোরিয়া চত্বরে দূষণ কমাতে হাইকোর্ট ট্রাফিক অবাধ করার নির্দেশ দেয়। তা-ও এখনও কার্যকর হয়নি। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের কী পরিকল্পনা তা জানাতে বলে আদালত এ দিন আবারও পুলিশ কমিশনারকে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।
ধূলিকণা এবং কার্বনের দূষণ থেকে বাঁচাতে ভিক্টোরিয়ার চারপাশে তিন স্তরের একটি সবুজ বলয় তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেখানে কী গাছ লাগানো হবে, তা সুপারিশ করে একটি রিপোর্ট তৈরি করে দেন বটানিক্যাল গার্ডেনের বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু ভিক্টোরিয়া কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ কার্যকর করেননি। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন বলে, সবুজ বলয় তৈরির ব্যাপারে ভিক্টোরিয়া কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত কী করেছেন, তা হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানাতে হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.