সম্পাদক সমীপেষু...
পুরুষতন্ত্র অবশ্যই দায়ী
সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়ের (‘যত দোষ, পুরুষতন্ত্রর?’, সম্পাদক সমীপেষু, ১১-২) প্রশ্নের উত্তরে বলি, হ্যঁা, ‘শহরের অত্যাধুনিক সমাজব্যবস্থা’র মধ্যে বেড়ে-ওঠা ছেলেদের মধ্যেও মেয়েদের প্রতি যে চূড়ান্ত অশ্রদ্ধার সংস্কৃতির দিকে সে আঙুল তুলেছে, তার জন্যও সর্বতোভাবে পুরুষতন্ত্রকেই দায়ী করা যায়। ‘পুরুষতন্ত্র’ কোনও একটি দৃশ্যমান কদর্য দানব নয়। আমাদের সমগ্র সামাজিক কাঠামোরই রন্ধ্রে রন্ধ্রে তা মিশে আছে। ফলে, ‘জেন ওয়াই ছেলেদের’ মধ্যেও ‘পুরুষতন্ত্রের ধারণা’ প্রবল ভাবেই প্রযোজ্য। নারী যে পুরুষের যৌন-খেলার অবজেক্ট মাত্র, তা ‘মাল’ কথাটি থেকেই অত্যন্ত পরিষ্কার।
এবং মনে রাখতে হবে, এই সংস্কৃতি নতুন নয়। সমস্ত ভারতীয় জনমানসে এই ধারণার শিকড় এতটা গভীর যে, তা খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। সৌরদীপকে আমার প্রশ্ন, ‘জেন ওয়াই’ যে পপুলার কালচারের ভেতর বেড়ে ওঠে (নাক উঁচু করলেও, যা আমাদের সমস্ত ধারণার ওপরেই প্রভাব ফেলে, বিশেষত যখন আমাদের বেশির ভাগ সময়ই এই বিনোদনমুখী সংস্কৃতির সংস্পর্শে কাটে), তার ভাষা, বা চরিত্রায়ণ ইত্যাদি, তা সিনেমায় হোক বা অন্যত্র, কি ‘স্বাভাবিক’ ভাবেই পুরুষতান্ত্রিক নয়? ‘আইটেম সং’-এর বক্তব্যই হোক বা ‘মাচো’ ছেলেদের ‘ব্যাড-বয়’ চরিত্র একান্ত ভাবেই তা পুরুষতান্ত্রিক। ‘প্লে বয় ইমেজ’টি ভারতীয় জনতার অত্যন্ত প্রিয়, এবং তা সে নিরন্তর তার চার দিকের সংস্কৃতি থেকে গ্রহণ করতেই থাকে।
আর একটি প্রবল রোগ, যা ইংরেজ ভারতে ছেড়ে রেখে গেছে। তা হল শিভালরি। এই শিভালরি কিন্তু ‘শ্রদ্ধা’ নয়। কো-এড স্কুলে পড়া সত্ত্বেও অত্যন্ত কনডিসেন্ডিং ভাবে ‘আরে! ও তো মেয়ে, ছেড়ে দে!’ বলে মেয়েদের প্রতিযোগিতার বাইরে রাখে, তারা হিরো নয়, তারা মাচো পুরুষএবং দারুণ ভাবেই ‘পুরুষতন্ত্রের’ শিক্ষার্থী। পত্রলেখক মা-বাবার একসঙ্গে অফিস যাওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু, অধিকাংশ সংসারে সমপরিমাণ কাজ করে বাড়ি এসে রান্না চাপান কিন্তু সেই মা-ই। যখন বাবা বুঁদ হন খবরের বা খেলার চ্যানেলে।
বস্তুত, শোয়িং হার প্রপার পজিশন-এর মন্ত্রটাই আঁকড়ে প্রতিটি পুরুষ রাস্তায় নামে ধর্ষণ তার ভয়ঙ্করতম এক্সপ্রেশন মাত্র। সৌরদীপ ঠিকই বলেছেন যে, শিক্ষাই একমাত্র ওষুধ হতে পারে এই রোগের। তবে তা ভ্যালু এডুকেশন হিসেবে নয়। প্রতিটি শিক্ষাক্রমে খুব প্রাথমিক স্তর থেকেই ফেমিনিজিমের শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থা বোঝার পাঠ ইত্যাদি বলবত্‌ করা দরকার। ঠিক যেমন মর্যাল সায়েন্স বা এনভায়রনমেন্টাল এডুকেশন খুব বেসিক স্তরেই পড়ানো হয়। এবং অবশ্যই, সামগ্রিক শিক্ষার বিস্তারের প্রয়োজন, যা সৌরদীপ বলেছেন।
পুলিশ বিভাগ ও গণতন্ত্র
দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মতো পুলিশ বিভাগের স্বাধীনতারও বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়।
পুনশ্চ
‘ভবিষ্যত্‌ গড়ার কারিগর’ (১৯-২) শিরোনামের পত্রলেখক হিসাবে কয়েকটি কথা লেখা জরুরি।
আমার পাঠানো মূল পত্রটির শেষের দিকে বেশ কিছুটা অংশ বাদ পড়ায়, একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ব্যক্তিগত জীবনের বারোমাস্যাই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই অংশে সংক্ষেপে আমার বক্তব্য ছিল এ রকম:
১) শিক্ষকদের জেনারেল ট্রান্সফার চালু করার সময় অভিজ্ঞতার পাশাপাশি, স্কুলের দূরত্ব এবং দুর্গমতাও যেন বিচার্য হয়।
২) শিয়ালদা থেকে সকাল ৫টা ১৮ এবং ৭টা ৪৫ মিনিটের মাঝে হাসনাবাদগামী একটি আপ ট্রেন এবং হাসনাবাদ থেকে বিকেল ৪টা ১৫ এবং ৫টা ৫০ মিনিটের মাঝে শিয়ালদাগামী ডাউন ট্রেনের অত্যন্ত আবশ্যিকতা রয়েছে।
৩) কাছারিঘাট এবং শুলকুনির মাঝে কাটাখালি নদীতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ অথবা নদী/খালটির সংস্কারের আশু প্রয়োজন রয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.