সম্প্রতি দার্জিলিঙের জিমখানায় দলের তরাই-ডুয়ার্সের নেতাদের বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করার ঘোষণা করেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। এলাকায় গিয়ে সভা, বৈঠক শুরু করতে নেতাদের নির্দেশও দেন গুরুঙ্গ।
মোর্চা সূত্রের খবর, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা জন বার্লার সঙ্গে সমঝোতা করে ভোটে লড়তে চাইছেন মোর্চা নেতারা। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে দু’তরফের নেতারা আগামী বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসতে চলেছেন। সেখানে আসন সমঝোতা নিয়েও কথা হতে পারে। বানারহাটের লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে বৈঠক হওয়ার কথা। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনোদ ঘাতানি বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে বৈঠক হচ্ছে।”
পরিষদের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যস্তরের নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পর জন বার্লা মোর্চা ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ডুয়ার্সে সংগঠন মজবুত করার উদ্যোগ নেয় মোর্চা। কিন্তু গত তিন মাসে পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবে’র সঙ্গে সুসম্পকের্র জেরে তৃণমূলের সঙ্গে জন বার্লা গোষ্ঠীর যোগাযোগ গড়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জন বার্লার বৈঠকও হয়। ডুয়ার্সে এসে মুখ্যমন্ত্রী বার্লা গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা শুক্রা মুণ্ডার বাড়িতে যান। এ দিকে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে মোর্চার। এই অবস্থায় জন বার্লার গোষ্ঠীর সঙ্গে মোর্চার বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয় সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।
শুধু মোর্চা নয়, ডুয়ার্সের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বৈঠক হবে বলে জন বার্লা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মোর্চা ছাড়াও ডুয়ার্সের সমস্ত পিছিয়ে পড়া উপজাতি যেমন মেচ, রাভা সম্প্রদায়েরও প্রতিনিধিরা থাকবেন।” তবে তৃণমূলের সঙ্গে এই বৈঠকের জেরে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ায় আশঙ্কা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন বার্লা। তাঁর কথায়, “তৃণমূলের ক্ষুদ্ধ হওয়ার কারণ নেই। আমরা কথা বলছি বলেই যে জোট করছি তা নয়। আলোচনার রাস্তা সকলের সঙ্গেই খোলা রাখছি।” সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের বানারহাট, বীরপাড়া, নাগরকাটায় জন বার্লা গোষ্ঠীর কিছুটা প্রভাব রয়েছে।
বৈঠক নিয়ে খোঁজখবর রাখলেও প্রকাশ্যে কিছুই বলতে চাইছেন না তৃণমূল এবং আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতারা। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “সব দিকে নজর রাখলেও দলীয় নির্দেশ ও নীতি মেনেই পঞ্চায়েতের লড়াই করার বিষয়টি স্থির করা হবে।” আর পরিষদের ডুয়ার্স কমিটির সম্পাদক রাজেশ লাকড়া বলেন, “ডুয়ার্সের মানুষ অনেক সচেতন হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা জানেন কাকে ভোট দিতে হবে। তাই ওই ধরণের জোট বা আঁতাত নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরাও পঞ্চায়েত ভোটে লড়ব। কীভাবে আমরা লড়াই করব তার ঘোষণা পরবর্তীতে করা হবে।” |