সন্ধ্যা হলেই বসছে মদের আসর। মদের দোকানের পাশেই বাইক দাঁড় করিয়ে বোতল হাতে হুল্লোড় করছে একদল যুবক। পাশ দিয়ে কোনও তরুণী বা মহিলা হেঁটে গেলেই ভেসে আসছে কটূক্তি। সবজি বিক্রেতাদের কাছ থেকে তোলা আদায়ে নামছে মদ্যপরা। পুলিশের গাড়ি ইতিউতি ঘুরে বেড়ালেও মদ্যপদের ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মনোভাবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দারা। সোমবার দুপুরে জলপাইমোড়ের সবজি বাজারের কাছে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। মদের দোকানে ভাঙুচর চালান মহিলাদের একাংশ। মহিলারা দাবি তোলেন, হয় মদের দোকান বন্ধ করা হোক নতুবা সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিক পুলিশ-প্রশাসন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ সুপার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বেআইনি ভাবে কোথাও মদের আসর বরদাস্ত করা হবে না। যে সব জায়গাকে ঘিরে অভিযোগ উঠেছে সর্বত্র পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হবে। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখব। পাশাপাশি নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পেলেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।”
এ দিন জলপাইমোড়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সেখানে থাকা একটি মদের দোকানের সামনে সন্ধ্যার পর থেকে আসর বসে। দোকানের ভিতরেও মদের আসর বসানো হয়। ওই দোকানের সামনে সবজি বাজার বসে। মদ্যপ যুবকরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোর করে সবজি আদায় করেন। অনেকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এ ছাড়া সেখান দিয়ে যাওয়া মহিলাদের লক্ষ্য করে কটুক্তি করা হয়। রবিবার সন্ধ্যায় এক মহিলাকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করার পরই ক্ষোভ চরমে উঠে। এদিন সকাল থেকেই দোকানের সামনে জড়ো হন বাসিন্দারা। বিক্ষোভের জেরো দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দা যুবক চঞ্চল অধিকারী বলেন, “মদ্যপ অবস্থায় কিছু যুবক এলাকায় দুষ্কর্ম করে। তোলা আদায় থেকে মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়। কেউ বাধা দিতে গেলে মদ্যপরা যুবকরা ভয় দেখায়। এর বিরুদ্ধেই আন্দোলনে নামা হয়েছে।” ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহ বলেন, “বহুদিন থেকেই আমি মদের দোকান বন্ধ করার জন্য দাবি করে আসছি। কিন্তু কেউ কান দিচ্ছে না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।”
শুধু ওই এলাকাতেই নয়, স্টেশন ফিডার রোড, বিধান মার্কেট, হিলকার্ট রোড সংলগ্ন একটি গলির ভেতর থাকা মদের দোকান সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সন্ধ্যার পর মদ্যপদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল বলেন, “বহুদিন থেকে ওই অবস্থা চলছে। মাঝে আমরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে যাই। তার পরে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়। আবারও নানা অভিযোগ আসছে। পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে ফের কথা বলব।” ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরক নান্টু পালও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “এরকম অবস্থা কোনও ভাবেই মানা হবে না। আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” |