মা ও দুই মেয়েকে আটকে রেখে শ্লীলতাহানির নালিশ
রস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানের ‘আপত্তিকর’ ছবি ফেসবুকে আপলোড করার অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। যে দুই কিশোরীর বাড়ির আত্মীয়দের এমনটা অভিযোগ, তাঁরা ওই যুবকের দুই বোন, মাকে আটকে রেখে শ্লীলতাহানি, মারধর করেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই কিশোরীর বাবাদের। ঘটনায় রাজনীতির রঙ লেগেছে। ধৃতেরা সিপিএম কর্মী হিসাবেই পরিচিত। অন্য দিকে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন যিনি, তিনি স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী।
ঘটনাটি হাসনাবাদ থানার মুরারিশা এলাকার। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকের ছবিতে আপত্তিকর কিছু পায়নি তারা। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শ্লীলতাহিনি, জোর করে আটকে রাখা, হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উভয় পক্ষই অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি সাইবার ক্রাইমের আওতায় পড়ে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ওই যুবকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারে সরস্বতী পুজো হয়েছিল। সেখানে পড়ান স্থানীয় এক তরুণী। তাঁর ভাই কিছু ছবি তুলে পরে ফেসবুকে দিয়েছিলেন। রটে যায়, ওই ছবি আপত্তিকর। অভিযোগ, দুই কিশোরীর ছবি সুপার ইম্পোজ করে আপত্তিকর কাজ করা হতে পারে বলে হুমকি দিচ্ছিলেন যুবকটি।
গত ২৬ তারিখ ওই যুবকের দিদি দুই কিশোরীকে বাড়িতে পড়াতে গেলে তাঁকে আটকে রেখে কটূক্তি করা হয় বলে অভিযোগ। শ্লীলতাহানিও করা হয়। পরে দিদির খোঁজে ওই বাড়িতে হাজির হন যুবকের আর এক বোন। তাঁকেও আটকে রেখে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে হেনস্থা, শ্লীলতাহানি করা হয়। পরে তাঁদের মা যান ওই বাড়িতে। একই অবস্থার শিকার হতে হয় তাঁকেও। পরে ‘নির্যাতিতা’ দুই তরুণীর মা থানায় ফোন করেন। পুলিশ এসে উদ্ধার করে দুই বোন ও তাঁদের মাকে।
দুই তরুণীর মা মহিলা তৃণমূলের স্থানীয় নেত্রী। তাঁর বক্তব্য, “আমি ওই দুই কিশোরীর বাড়ির লোককে বলেছিলাম, আমার ছেলে যদি কোনও দোষ করে থাকে, তা হলে ওকে ডেকে সালিশি বসিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নিন ওঁরা। আমার দুই মেয়ে ও আমাকে আটকে রেখে এ ভাবে হেনস্থা করে কী লাভ? কিন্তু ওঁরা কোনও কথা শুনতে চাননি। আমাদের বিস্তর নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে।” সিপিএমের স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যও ঘটনার সময়ে দুই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ নিয়ে হেনস্থায় মদত দেন বলে অভিযোগ।
ওই যুবকের বিরুদ্ধে পর দিন, ২৭ ফেব্রুয়ারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কোচিং সেন্টারের দুই ছাত্রীর বাবা। এ দিকে, ২ মার্চ থানায় অভিযোগ করেন নিগৃহীতা দুই তরুণী ও তাঁদের মা। যার ভিত্তিতে পর দিন পুলিশ গ্রেফতার করে দুই কিশোরীর বাবাদের। তাঁদের ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বসিরহাট মহকুমা আদালতের বিচারক। দুই তরুণীর মা বলেন, “আমাদের লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। যে কারণে প্রথমটায় থানায় অভিযোগ জানানোর সাহস পাইনি।”
অন্য দিকে দুই কিশোরীর পরিবারের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে অভিযোগ আনা হচ্ছে। হুমকি-শ্লীলতাহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। অভিযুক্ত যুবকের দিদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল মাত্র। গোলমালের খবর পেয়ে স্থানীয় সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য এসেছিলেন। তাঁকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে কলকাতার নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। ওই দুই পরিবারের আরও দাবি, আলোচনার জন্য দুই কিশোরীর বাবাকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। সেখানেই গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। সে কথা অবশ্য মানতে চায়নি পুলিশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.