ফের প্রকাশ্যে এল চাপড়ায় তৃনমূলের গোষ্ঠীবিবাদ। বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বার বার শাসক দলের অর্ন্তদ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন বিধায়ক রুকবানুর রহমানের পছন্দের আব্দুর রসিদ মল্লিককে সভাপতি পদে না চেয়ে দলের একাংশের বিরোধীতা। ক্ষুব্ধ নেতারা এই মর্মে জেলা সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছেন। ৪৯ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত ওই চিঠিতে একাধিক পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান সহ বেশ কয়েক জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরও সই রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, রুকবানুর রহমান নিজের স্বার্থে ‘চরম স্বজনপোষনকারী’ রসিদ মল্লিককে ব্লক সভাপতি করতে চাইছেন। প্রসঙ্গত, চাপড়া ব্লকে এই মুহূর্তে কোনও সভাপতি নেই। যুযুধান দুই পক্ষ বলে পরিচিত আব্দুর রসিদ মল্লিক ও অমরনাথ সিংহ রায় যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন। আব্দুর রসিদ মল্লিক চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের পর দলবদল করে তিনি তৃণমূলে ভেড়েন। এই নব্যতৃণমূলীকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। ব্লক তৃণমূলের অন্যতম আহ্বায়ক অমরনাথ সিংহ বলেন, “আব্দুর রসিদ মল্লিকের ব্লক সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনার কথা আঁচ করে বেশিরভাগ নেতাকর্মীই প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। বিধায়ক ব্যক্তিগত স্বার্থে তাঁকে ব্লক সভাপতি করার উদ্যোগ নিচ্ছেন।” চাপড়া-২ পঞ্চায়েত প্রধান কবীর আশাবুল বলেন, “রসিদ চূড়ান্ত স্বজনপোষনের সঙ্গে যুক্ত। তাই আমরা তাঁর সভাপতি হওয়া আটকাতে দলনেত্রীর শরনাপন্ন হয়েছি। তিনি সভাপতি হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে দলত্যাগের হিড়িক পড়ে যেতে পারে।” রুকবানুর রহমান অবশ্য এত কিছুর মধ্যেও সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন রসিদ মল্লিককে। তিনি বলেন, “রসিদ মল্লিকই সভাপতি পদে একমাত্র যোগ্য প্রার্থী। সেই মত আমি দলকে জানিয়েও দিয়েছি। আসলে জনভিত্তি নেই এমন কিছু নেতা সভাপতি হতে চাইছেন। তাঁরাই এ সব চিঠি চালাচালি করছেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “আব্দুর রসিদ মল্লিক সভাপতি হতে পারে জানিয়ে কিছু নেতা আমাকে চিঠি দিয়েছেন। বিষয়টি দলনেত্রীকেও যখন জানানো হয়েছে তখন তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।” আর এই পুরো ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন আব্দুল রসিদ মল্লিক। চাপড়াতে অবশ্য শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল অভিনব নয়। মাস খানেক আগেই রসিদ মল্লিকই সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দেগে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির পদ থেকে ইস্তাফা দিতে চেয়েছিলেন। দলীয় হস্তক্ষেপে অবশ্য তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত শেষমেশ প্রত্যাহার করে নেন। |