বিকেল পর্যন্ত অন্ধকারে ‘গুলি’ চালাতে হয়েছে ট্রেভর জেমস মর্গ্যানকে! লাগলে ফাটকা। না লাগলে ঝটকা।
কল্যাণী থেকে শিলিগুড়ি তোলপাড় হয়ে গেলে কী হবে, শিল্ডের ‘চমকপ্রদ রহস্য’ যে তখনও আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কে বন্দি! খুব আশ্চর্য শোনালেও, বাস্তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা পরেও ইস্টবেঙ্গল ধোঁয়াশায় ছিল তাদের নতুন প্রতিপক্ষকে নিয়ে। অবশেষে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সোমবার বিকেলে যখন ওএনজিসি-র নাম ঘোষণা হল, তখন একটা গোটা দিন প্রায় চলে গিয়েছে। ম্যাচের ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরি করা তো দূরের কথা, সারাদিন পেন-চিডিদের কী ফর্মেশনে অনুশীলন করাবেন, তা নিয়েই সংশয়ে হাবুডুবু লাল-হলুদের সাহেব কোচ। পুরোটাই যেন গোলকধাঁধা!
তবে রাজ্য ফুটবল সংস্থার চূড়ান্ত অপেশাদারিত্ব সত্ত্বেও হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে কী চলবে ইস্টবেঙ্গলের? নতুন ‘অতিথি’ দলের নাম যাই হোক না কেন, লাল-হলুদ ব্রিগেডকে তো প্রস্তুত থাকতেই হবে। হয়তো সে জন্যই আই লিগের ছয় নম্বর দল ওএনজিসি-র নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করার আগেই ফুটবলারদের সহনশক্তি এবং দম বাড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন মর্গ্যান। সবুজ ঘাসের পরিবর্তে হোটেলের সুইমিং পুলে। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের বদলে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেটের পিচে। |
ব্যাটসম্যান চিডি। ফিল্ডার গুরবিন্দর। সোমবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক |
সোমবার সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা সুইমিং পুলের জলেই কাটালেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। চলল দীর্ঘক্ষণ চোর-চোর ও বল খেলা। লাঞ্চের পরে বিকেলে একেবারের অন্য রূপে পাওয়া গেল মর্গ্যান-বাহিনীকে। পায়ে ফুটবলের বদলে হাতে ক্যাম্বিস বল। হায়দরাবাদে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা যখন শেষের মুখে, তখন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে উইকেট-ব্যাট-বল নিয়ে ক্রিকেটের বাইশ গজে ইস্টবেঙ্গল। মর্গ্যান একাদশ বনাম সঞ্জু প্রধান একাদশ। মজার ব্যাপার হল, ফুটবল কোচের রোয়াবি মেজাজ ক্রিকেট মাঠেও ফুটে উঠল। ব্যাটে-বলে তো বটেই গুরবিন্দর সিংহের একটা অসাধারণ উচু ক্যাচও নিলেন মর্গ্যান। চিডি প্রথমে কোন হাতে ব্যাট করবেন বুঝে উঠতে না পারলেও, শেষমেশ বাঁ-হাতি আর ডান-হাতির মাঝামাঝি একটা স্টান্স নিলেন। কিন্তু প্রথম বল-এ আউট হয়েই ছুটলেন বোলারকে মারতে। যাই হোক, হাসি-ঠাট্টার মধ্যেই মর্গ্যান একাদশ হারিয়ে দিল সঞ্জুদের।
লাল-হলুদ শিবিরে এ দিন বিনোদনের কোনও অভাব ছিল না। ছুটির মেজাজকে ভরপুর উপভোগ করলেন চিডি-বরিসিচরা। কিন্তু শিল্ডের প্রস্তুতি? মর্গ্যান সাংবাদিকদের মুখোমুখি না হলেও, অন্দরমহলের যা খবর, তাতে সকালে পুল সেশনের পরে মূলত স্টেডিয়ামের মাঠ নিয়েই আলোচনা হয় ফুটবলারদের সঙ্গে। পাথর-মাঠকে সামলাতে উপযুক্ত প্রেসক্রিপশনের সন্ধানে। ঘাসে জল দেওয়া হলেও, রোলার নেই স্টেডিয়ামে। বহুদিন ধরেই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। নিট ফল, অসমান মাঠেই খেলতে হবে টিমগুলোকে। তবে বিদেশি দল না থাকায় কি বাড়তি কোনও সুবিধা হবে ইস্টবেঙ্গলের? লাল-হলুদের সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরির দাবি, “সুবিধা-অসুবিধা বলতে পারব না। তবে ওএনজিসি আসায় এ বার আমাদের গ্রুপে তিনটে আই লিগের দল হয়ে গেল। দিল্লিতে তো ওদের কাছেই হারতে হয়েছিল আমাদের।”
|
আইএফএ শিল্ড
মোহনবাগান-পুণে এফসি (কল্যাণী, ৩-০০),
প্রয়াগ ইউনাইটেড-পৈলান অ্যারোজ (শিলিগুড়ি, ২-৩০)।
|