নকল দলিল-পরচা বানিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে কৃষিঋণ পাইয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরামবাগ আদালতের এক আইনজীবীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম প্রভাস ঘোষ, বাড়ি আরামবাগ পুর এলাকার ইন্দিরাপল্লিতে। তিনি পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের তিরোল শাখার তালিকাভুক্ত আইনজীবী।
গত শুক্রবারই ভুয়ো নথি দিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই ব্যাঙ্কের তৎকালীন সহকারী ম্যানেজার অরূপকুমার দাসকে। জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা অরূপবাবু বর্তমানে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের একটি ব্যাঙ্কে কর্মরত। কর্মস্থল থেকেই তাঁকে ধরে পুলিশ। এ দিকে, রবিবার ধৃত আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। জালিয়াতিতে অভিযুক্ত আর এক আইনজীবী পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃত অরূপকে ২ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, গত ১ ফেব্রুয়ারি তিরোল অঞ্চলের চণ্ডীবাটি গ্রামের মির্জা আবদুল রউফ নামে তিরোলের ওই ব্যাঙ্কের এক গ্রাহক থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান, জমি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের মতো বহু চাষি কৃষিঋণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বরং জমি না থাকা সত্ত্বেও অবৈধ দলিল-পরচা পেশ করে ঘুষের বিনিময়ে ঋণ পেয়েছেন কয়েক জন। বোরা গ্রামের এমন চার ঋণ প্রাপকের নামও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি। প্রশাসনের কাছেও এই অভিযোগ দায়ের করেন রউফ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত দিলীপ রায়, অনন্ত মালিক, শ্রীকান্ত মালিক ও রমাপ্রসাদ রায় ব্যাঙ্কে যে নথিপত্র পেশ করেছিলেন, সে সব জাল। সেই সব তথ্য নিজে এলাকায় গিয়ে খতিয়ে না দেখেই বৈধতার ছাড়পত্র দিয়েছিলেন ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট অফিসার। আইনজীবীও তদন্ত না করে ‘সাচির্ং সার্টিফিকেট’ দিয়ে দেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি দিলীপ ও রমাপ্রসাদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় ব্যাঙ্কের অফিসার ও ওই আইনজীবীকে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ম্যানেজার শান্তিসাধন মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশি তদন্তে সর্বতো ভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। বিষয়টি আপাতত আদালতের বিচারাধীন।” |