শুভজিৎ-খুন কাণ্ড
তিরিশ লক্ষ টাকার আশায় খুন, জেরায় বলল অভিযুক্ত
ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র শুভজিৎ হালদারকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত উত্তম বিশ্বাসকে রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার দুপুরে হুগলির চণ্ডীতলার পাঁচঘরা দক্ষিণপাড়ায় ধৃত যুবকের বাড়ির পাশের খড়ের গাদা থেকে শুভজিতের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল।
ধৃতকে সোমবার শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতের এসিজেএম রতন দাসের এজলাসে তোলা হলে বিচারক তার পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। অপরাধের কথা কবুল করেছে ওই যুবক।
কিন্তু কেন খুন? সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি পুলিশের কাছে।
শুভজিৎ।
প্রাথমিক জেরার পরে তারা জানিয়েছে, বাড়িতে এসে শুভজিৎ চেঁচামেচি করার কারণেই তাকে খুন করেছে বলে দাবি করেছে উত্তম। যদিও পুলিশ এই যুক্তিতে এখনও বিশ্বাসী নয়। ধৃত যুবক জানিয়েছে, প্রথমে শুভজিতকে খুন করে তারপর মুক্তিপণ চেয়ে এসএমএস করেছিল উত্তম। সোমবার উত্তম নির্বিকার মুখে জানায়, প্রথমে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ চাইলেও পরে ৩০ লক্ষ টাকায় সে রাজি ছিল। পুলিশের অনুমান, শুভজিতের বাবা গোকুল হালদার পেশায় মুদির দোকানি। সম্প্রতি জমি বিক্রি করে তিনি কিছু টাকা পেয়েছিলেন। সে কথা জানতে পেরেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে উত্তম। এসডিপিও রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, খুনে ঘটনায় ব্যবহৃত জ্যাকেটটি উদ্ধার হয়েছে। আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা দিয়েছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র এগার বছরের শুভজিৎ টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরে ব্যাগ রেখে ধৃত উত্তমের বাড়ি গিয়েছিল। অভিযোগ, সে সময়ে গলায় জ্যাকেটের অংশ পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শুভজিৎকে খুন করে দেহটি বাড়ি-লাগোয়া খড়ের গাদায় লুকিয়ে পালিয়ে যায় উত্তম। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে শুভজিতের বাবা গোকুলবাবু চণ্ডীতলা থানায় ডায়েরি করেন।
পুলিশের হেফাজতে ধৃত উত্তম।
ঘটনার পরের দিন, ২৭ ফেব্রুয়ারি, প্রতিবেশী এক যুবকের মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে উত্তম। চেপে যায় খুনের কথা। তার পর একই ভাবে আরও একজন প্রতিবেশীকে এসএমএস করেও একই কথা জানায় সে। এসএমএস পাওয়ার পরেই উত্তমের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করেন শুভজিতের বাবা। এরপর উত্তম ফোন বন্ধ করে দেয়। টাওয়ারের অবস্থান জানার জন্য পুলিশের পরামর্শে এসএমএসের মাধ্যমেই চলতে থাকে দরাদরি। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার গোকুলবাবুকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে উত্তম।
রবিবার বেলার দিকে উত্তমের বাড়ি লাগোয়া খড়ের গাদা থেকে শুভজিতের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ভাঙচুর হয় উত্তমের বাড়িতে। দেহ আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। উত্তমের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে এবং উত্তমের মা ও স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রবিবারেই চণ্ডীতলা থানার ওসি সংগ্রাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গাইঘাটায় যায়।

ছবি: প্রকাশ পাল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.