|
|
|
|
মোদীর বক্তৃতা বাতিলও অস্ত্র কংগ্রেসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
অঘোষিত অভিষেকের পর নরেন্দ্র মোদী যখন বিজেপির কাণ্ডারী হয়ে উঠতে চাইছেন, তখন মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর বক্তৃতা বাতিল কংগ্রেসের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ন তুলে মোদীকে চেপে ধরার সুযোগ পেয়ে গেল তারা।
২৩ মার্চ পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ার্টন স্কুলের বার্ষিক অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল মোদীর। গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার পর আমেরিকা এখনও তাঁকে ভিসা দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেনি। তাই ভিডিও কনফারেন্সে বক্তৃতার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু অধ্যাপক ও ছাত্রদের তীব্র আপত্তিতে মোদীর সেই বক্তৃতা বাতিল করেছেন হোয়ার্টন কর্তৃপক্ষ। যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন গুজরাত দাঙ্গা ঠেকানোর ব্যাপারে মোদীর নিষ্ক্রিয়তাকে। আর এটাকেই কাজে লাগাচ্ছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আজ কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে মোদীর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী নারায়ণস্বামী বলেন, “আন্তর্জাতিক মহলে তিনি গ্রহণযোগ্য হচ্ছেন বলে মোদী যে দাবি করেন, এই বক্তৃতা বাতিলের ঘটনাতেই তার অসারতা স্পষ্ট।” মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সচিন সবন্ত এ দিন জানান, গুজরাতের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে মোদী যে বড়াই করেন, তা আসলে মহারাষ্ট্র-মডেলের সাফল্য। গত কাল জাতীয় পরিষদের মঞ্চে গুজরাতের সাফল্য নিয়ে মোদীর প্রচারকে গোয়েবলসীয়-কায়দা বলে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস।
যাঁকে মুখ করে দল ভোটে যেতে চাইছে, দলীয় মঞ্চে তাঁর অভিষেকের পরপরই এমন একটি ধাক্কায় অস্বস্তিতে বিজেপি শিবির। তবে প্রকাশ্যে তারা বিষয়টিকে লঘু করেই দেখাচ্ছে। দলের মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেন এ দিন বলেন, “আমেরিকায় বক্তৃতা করার জন্য মোদী নিজে থেকে তদ্বির করেননি। সেখানকার কর্তৃপক্ষই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আবার নিজেরাই তা বাতিল করেছে। এটি এমন কিছু বড় বিষয় নয়।” বক্তৃতা বাতিলের পর বিজেপির শরিক শিবসেনা নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী সুরেশ প্রভু হোয়ার্টনের সভায় উপস্থিত না থাকার সিদ্ধান্ত নেন। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শিল্পপতি গৌতম আদানিও তাঁর হোয়ার্টন সফর বাতিল করেছেন। ইতিমধ্যেই উদ্যোক্তারা মোদীর বদলে বক্তার তালিকায় এনেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। অন্য বক্তাদের মধ্যে থাকছেন শাবানা আজমি, জাভেদ আখতার, সচিন পায়লট।
মোদী-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এখন আমেরিকার সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখতে চাইছেন। ইওরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনের পর আমেরিকার এই স্কুলে বক্তব্য রাখতে পারলে মোদী অনেকটাই স্বস্তি পেতে পারতেন। সেই হিসাবে এটা তার পক্ষে বড় ধাক্কা। মোদী কাল যে ভাবে মনমোহন ও সনিয়াকে আক্রমণ করেছেন, তার কড়া জবাব দিয়েছে তারা। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “যে পরিবারটি স্বাধীনতার আগে থেকে দেশের জন্য আত্মত্যাগ করছে, তাদের নিয়ে মোদীর এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।” কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বলেন, “গাঁধী পরিবার আত্মবলিদানের প্রতীক। তাকে কুৎসিত আক্রমণ করছেন মোদী।” |
|
|
|
|
|