উৎপাদন বন্ধের নোটিসে কর্মহীন দেড়শো শ্রমিক
রেলের স্লিপার তৈরির একটি বেসরকারি কারখানায় সাময়িক উৎপাদন বন্ধের নোটিস দিল কর্তৃপক্ষ। যার জেরে কর্মহীন হয়ে পড়লেন কারখানার দেড়শো জন স্থায়ী শ্রমিক। রামপুরহাটের চাঁদমারি মাঠ এলাকায় অবস্থিতি রেলের ওই কারখানায় গত ১ মার্চ নোটিস জারি করে সাময়িক ভাবে উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে। স্থায়ী শ্রমিকেরা ছাড়াও কারখানার দেড়শো জন অস্থায়ী শ্রমিকও আগেই কাজ হারিয়েছেন। গত দেড় মাস আগে কারখানার একটি ‘শিফট্’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। কারখানার ম্যানেজার সতীশ সিংহের দাবি, “এক মাস ধরে স্লিপার তৈরির প্রধান কাঁচামাল সিমেন্টের যোগান নেই। স্থায়ী শ্রমিকদের কোনও কাজ না হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানি তাঁদের এক মাসের বেতন দিয়েছে। গত একমাস ধরে অপেক্ষা করার পরে এখন সিমেন্ট কোম্পানি বলছে, যোগান দিতে পারবে না।” এ ছাড়াও রেলের কাছ থেকে নতুন মাল সাপ্লাইয়েরও অর্ডার নেই বলে তাঁদের দাবি। এই সব কারণেই কর্তৃপক্ষ সাময়িক ভাবে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে সতীশবাবুর দাবি।
যদিও কর্তৃপক্ষের দাবির সঙ্গে একমত নন কারখানার তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি নবগৌরাঙ্গ দাস। তাঁর অভিযোগ, “২০১২ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে শ্রমিকদের নতুন বেতন কাঠামো তৈরি হওয়ার কথা। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেও সেই বেতন কাঠামো গড়ে তুলতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।” গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে কারখানার মালিক এবং দু’টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হয়। নবগৌরাঙ্গবাবুর দাবি, আলোচনায় কারখানার মালিকের তরফে স্থায়ী শ্রমিকদের জন্য মাসে ৩০০ টাকা বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকেরা তা মেনে নেননি। তার বদলে শ্রমিকদের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি ওঠে। তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে ফের আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করার আবেদন করেন। সমস্যার সমাধান না করে কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিক ভাবে গত ১ মার্চ উৎপাদন বন্ধের নোটিস জারি করেছে বলে নবগৌরাঙ্গবাবুর অভিযোগ।
অবশ্য কারখানার উৎপাদন বন্ধের কারণ নিয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যার সঙ্গেই সহমত পোষণ করেছেন কারখানার সিটু প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা সঞ্জীব বর্মণ। তিনি বলেন, “যত দূর জানি কাঁচামাল যোগানের অভাবের কারণেই ওই কারখানার উৎপাদন সাময়িক ভাবে বন্ধ।” অন্য দিকে, সঞ্জীববাবুরও দাবি, “ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে কর্তৃপক্ষের দেওয়া শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব আমরা মেনে নিইনি। তবে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ তো ফের আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক আলোচনায় ফলপ্রসু কিছু বের হয় কিনা।” শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি খুব তাড়াতাড়ি আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন সতীশবাবুও।
এ দিকে, রামপুরহাট মহকুমা সহকারি শ্রম কমিশনার অসিতবরণ রায় বলেন, “সিমেন্টের যোগানের অভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষ সাময়িক ভাবে উৎপাদন বন্ধ রাখার নোটিশ দিয়েছেন। কারখানা খুললে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে দুই শ্রমিক সংগঠনের দাবি মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তিবদ্ধ করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.