|
|
|
|
অভিযুক্ত ওসি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি, ক্ষোভ নেতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জামুড়িয়া |
অভিযোগ দায়ের করার পরে কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। মারধর ও হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত প্রাক্তন ওসি-র বিরুদ্ধে এখনও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, এই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠালেন আইএনটিটিইউসি নেতা সাধন রায়। পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে।
২০১০-এর পুরভোটে জামুড়িয়ায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন সাধনবাবু। তিনি অভিযোগ করেন, ভোটের আগে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়ায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কোর্ট স্থানীয় থানাকে সাধনবাবু ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা দিতে বলে। তখন জামুড়িয়ার তৎকালীন ওসি সৈকত রায় তাঁর জন্য এক জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেন।
সাধনবাবু অভিযোগ করেন, সে বছর ৩০ মে ভোটের দিন নিরাপত্তরক্ষীর সামনেই মনোজ দত্ত-সহ সিপিএমের কয়েক জন নেতা-কর্মী তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁর অভিযোগ, “ওই ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন ওসি সৈকত রায়। তিনি সেই সময়ে আমাকে রিভলবার দেখিয়ে খুনের হুমকিও দেন। প্রথমে আসানসোল হাসপাতাল, সেখান থেকে ইসিএলের কাল্লা হাসপাতাল ও পরে ভেলোরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়।”
ওই আইএনটিটিইউসি নেতার দাবি, ভেলোর যাওয়ার আগে ৪ জুন তিনি জামুড়িয়া থানায় বাড়ির লোকের হাতে থানায় লিখিত অভিযোগ পাঠান। কিন্তু ওসি সৈকতবাবু তা নিতে চাননি। তাই তৎকালীন পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত ভাবে আর্জি জানান। তাতেও ফল না হওয়ায় তিনি ১৮ জুন হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা করেন। বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস ২০১১ সালের ২৭ জুলাই ফের থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন। ওসি অভিযোগ না নিলে আসানসোল নিম্ন আদালতে যেতে বলা হয়। সাধনবাবুর আইনজীবী পার্থ ঘোষের দাবি, “আমরা চেয়েছিলাম, আদালত সরাসরি পুলিশকে মামলা শুরু করার নির্দেশ দিক। সিঙ্গল বেঞ্চ সেই আদেশ না দেওয়ায় আমার মক্কেল হাইকোর্টের ডবল বেঞ্চে আবেদন করেন।”
সাধনবাবু জানান, ২০১২-এর সেপ্টেম্বরে হাইকোর্ট জামুড়িয়া থানাকে মামলা শুরু করার নির্দেশ দেয়। তার পরে ৩ অক্টোবর তিনি থানায় অভিযোগ করেন, তাঁকে মারধরে কয়লা মাফিয়ারা অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। এর পরেও অভিযুক্ত প্রাক্তন ওসি ও অন্যদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। এ ব্যাপারে তিনি জানুয়ারিতে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন জানান। ফল হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দাবি সাধনবাবুর। চিঠিতে ওই ঘটনা ছাড়াও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন বলে জানান তিনি। জামুড়িয়ার সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত বলেন, “এই অভিযোগ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। পুলিশ তদন্ত করুক, কী ঘটেছে।” অভিযুক্ত জামুড়িয়ার প্রাক্তন ওসি সৈকতবাবু এখন উত্তর দিনাজপুরে কর্মরত। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “আদালতের নির্দেশে মামলা শুরু হয়েছে। তদন্ত চলছে।” |
|
|
|
|
|