জেনকিন্স স্কুলকাণ্ডে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল শিক্ষা সেলের চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসুর কাছে রিপোর্ট দিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শনিবার তিনি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ছয় পাতার রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে জেনকিন্স স্কুলে মদের আসর বসানোর অভিযোগ ঘিরে শহরের বাসিন্দাদের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে উল্লেখ করে অভিযুক্তদের শাস্তির সওয়াল করেছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। পাশাপাশি দলের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও অভিযুক্তদের অন্যতম বিজন সাহা নিজেকে দলের শিক্ষক সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা পরিচয় দিতেন বলেও রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবু শিক্ষামন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পাঠানর কথা স্বীকার করলেও বিস্তারিত কিছউ বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “জেনকিন্স স্কুলের পুরো ঘটনা জানিয়ে রিপোর্ট পাঠিয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পবিত্রতা রক্ষার আর্জি জানিয়েছি।”
গত বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী জেনকিন্স স্কুলের টিচার্সরুমে মদ মাংসের আসর বসানোর অভিযোগ ওঠে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই ঘটনায় দুই শিক্ষক বিজন সাহা ও দিলীপ রায় ছাড়াও শিক্ষাকর্মী পীযূষ সরকারকে গ্রেফতার করে। গত শুক্রবার তারা ব্যাক্তিগত জামিনে থানা থেকে ছাড়া পান। ধৃতদের মধ্যে বিজন সাহা তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি স্কুল শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হওয়ায় অস্বস্তি বাড়ে তৃণমূলে।
দলীয় সূত্রের খবর, অস্বস্তি এড়াতে দলীয় মহলে যার ঘনিষ্ঠ বলে বিজনবাবু পরিচিত সেই তুফানগঞ্জের বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধান তো বটেই জেলা নেতারাও সবরকম সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। আরও একধাপ এগিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল গর্ভমেন্ট স্কুল টিচার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা মনোজ চক্রবর্তী দাবি করেন, বিজনবাবুকে সংগঠন থেকে ২০১০ সালে বহিস্কার করা হয়েছে। তৃণমূলের এক জেলা নেতা জানান, বিজনবাবু জেলা সভাপতির বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত হয়ে উঠলেও তাঁর সঙ্গে দলের কিছু নেতার ঘনিষ্টতার কারও অজানা নয়। এমনকি বৃহস্পতিবার রাতেও শিক্ষক সংগঠনের এক প্রবীণ নেতাকে ঘটনার পর কোতোয়ালি থানায় তদ্বির করতে দেখা গিয়েছে।
জেনকিন্স স্কুল কান্ডে কোচবিহারে ছাত্র শিক্ষক অভিভাবক মহলের ক্ষোভের ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। জেনকিন্স কান্ড সংক্রান্ত বিষয়ে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার চলছেই। আজ, সোমবার প্রশাসনের গড়া তদন্ত কমিটিও কাজে নামছেন। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক তথা তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান বিকাশ সাহা বলেন, “স্কুলে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করব।” |