পঞ্চায়েত ভোটে উত্তর দিনাজপুর জেলায় রাজনৈতিক সুবিধা পেতেই তৃণমূল সরকার উদ্বাস্তুদের জমির দলিল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য জানিয়েছিলেন, ৭ মার্চ খাস জমিতে বসবাসকারী রায়গঞ্জ ব্লকের ৬১৭টি উদ্বাস্তু পরিবারকে রাজ্য সরকার জমির দলিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রায়গঞ্জের ব্লকের ৮টি উদ্বাস্তু কলোনীর ওই উদ্বাস্তু পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। কলোনীগুলির মধ্যে ৭টি উদ্বাস্তু কলোনীই পড়েছে কংগ্রেস পরিচালিত বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায়। একটি কলোনি তৃণমূলের দখলে থাকা রায়গঞ্জ পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের অভিযোগ, “কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দে রাজ্য সরকার উদ্বাস্তুদের পুর্বাসন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। কংগ্রেসের শক্তঘাঁটিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ভিত মজবুত করতেই রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে কাজে লাগিয়ে উদ্বাস্তুদের জমির দলিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” আর সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অপূর্ব পালের অবশ্য দাবি, “বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই জেলার কয়েক হাজার উদ্বাস্তু পরিবারকে জমির দলিল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এতদিন তা ঝুলিয়ে রাখে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে অমল আচার্য জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে উদ্বাস্তুরা খাস জমিতে বসবাস করছেন। কংগ্রেস ও সিপিএম জমির দলিল দেওয়ার আশ্বাস দিয়েই নিজেদের ভোট বাড়িয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই কংগ্রেস-সিপিএম অপপ্রচার করছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেই মানুষ এর জবাব দেবেন!
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার উদয়পুর শিল্পীনগর, হরেকৃষ্ণ, কসবা বামন, লক্ষ্মণীয়া কান্তোর, মহিপুর, নারায়ণপুর ও অরবিন্দ কলোনীর খাস জমিতে বসবাসকারী ৪৮৪টি উদ্বাস্তু পরিবারকে জমির দলিল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তৃণমূলের দখলে থাকা রায়গঞ্জ পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগরের ১৩৩টি উদ্বাস্তু পরিবারকেও জমির দলিল তুলে দেওয়া হবে।
এ দিন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে দলিল পাওয়ার বিষয়টি জেনে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন শক্তিনগরের উদ্বাস্তু বাসিন্দারা। তাঁরা আবির খেলা ও মিষ্টি বিলিতে মেতে ওঠেন। |