নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবনের পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরি করে আগামী বুধবারের মধ্যে কলকাতায় পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। সেই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে অস্থায়ী ভবনে যথাযথ আসবাব পত্রের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে জলপাইগুড়িতে স্থায়ী ও অস্থায়ী বেঞ্চের পরিকাঠামো পরিদর্শন করেন হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল। রবিবার হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রণজিত কুমার বাগ তিন ঘণ্টা ধরে অস্থায়ী ভবনের বিভিন্ন ঘর ঘুরে দেখেছেন। বুধবার রাজ্যের পূর্ত দফতরের প্রধান বাস্তুকারকে বৈঠকে ডেকেছে হাইকোর্ট। বৈঠকে অস্থায়ী ভবন জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর নকশা চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থায়ী ভবনের ঘরগুলিকে কী ভাবে কাজে লাগানো হবে, সেটি খতিয়ে দেখতেই এ দিন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অস্থায়ী ভবন পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনের পরে অবশ্য তিনি বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। যা বলার সরকারের তরফে বলা হবে।” এ দিন রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবযানী ভট্টাচার্য-সহ পূর্ত দফতর ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ছিলেন। জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “হাইকোর্টের তরফে পরিদর্শন হয়েছে। আমাদের যেমন নির্দেশ দেওয়া হবে তেমন ব্যবস্থা করা হবে।”
হাইকোর্ট বা জেলা প্রশাসনের তরফে অস্থায়ী ভবনে সার্কিট বেঞ্চ চালুর সম্ভাবনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা না হলেও পরপর দুই দিনের পরিদর্শনের সময়ে প্রশাসনকে দেওয়া বিভিন্ন নির্দেশের ফলে দ্রুত বেঞ্চ চালু হতে পারে বলে আলোচনা শুরু হয়েছে শহর জুড়ে। অস্থায়ী ভবনে একটি নতুন অফিস বাড়ি আগামী ৬ মাসের মধ্যে তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রশাসনকে বলা হয়, হাইকোর্টের কাজ অস্থায়ী ভাবে শুরু হয়ে গেলে ফাইলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জায়গা কম পড়বে, সে জন্য নতুন বাড়ি। এজলাস ও বিচারপতিদের অফিস ঘরে কয়েকটি আসবাব পত্রের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সেগুলি নেহাতই মাঝারি ধরনের রদবদল বলে জানা গিয়েছে। এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রথমে ঠিক না থাকলেও, শনিবার পরিদর্শনে এসে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং অন্য সচিবরা ফিরে না গিয়ে থেকে যান। এ দিন অস্থায়ী ভবনে এসে রেজিস্ট্রার জেনারেল ভবনটির মাপজোক করেন। কোন ঘর কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, কোথায় কর্মীদের বসানো হবে, কত পরিমাণ জমি ফাঁকা রয়েছে, বিভিন্ন ঘরের আয়তন সবই খতিয়ে দেখেন। ফিরে গিয়ে তিনি প্রধান বিচারপতিকে রিপোর্ট দেবেন। বুধবার পূর্ত দফতরের প্রধান বাস্তুকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবে হাইকোর্ট প্রশাসন।
জলপাইগুড়ি বার আসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিনন্দন চৌধুরী বলেন, “উত্তরবঙ্গবাসীর স্বার্থে দ্রুত বেঞ্চের কাজ শুরু হোক চাইছি।” সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় কমিটির সদস্য সুজিত সরকার বলেন, “প্রধান বিচারপতির কাছে আমরা দ্রুত বেঞ্চ শুরুর আর্জি জানিয়েছি।” আর জেলার সরকারি অভিশংসক তথা তৃণমূল আইনজীবী সেলের সর্বভারতীয় সম্পাদক গৌতম দাস বলেন, “সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তার ধাপে ধাপে অগ্রগতি হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সুখবর পাব।” |