|
|
|
|
মহিষাদলে মুক্ত মঞ্চ, পরিকল্পনা এইচডিএ-র |
দেবমাল্য বাগচি • হলদিয়া |
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ঐতিহ্যবাহী মহিষাদলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান লেগেই রয়েছে। কিন্তু কিছু প্রেক্ষাগৃহ থাকলেও এলাকায় একটিও মুক্ত মঞ্চ নেই। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এ বার হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ) হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে একটি মুক্ত মঞ্চ নির্মাণ করতে চলেছে। সম্প্রতি পর্ষদের ১০৩তম বোর্ড মিটিংয়ে মুক্ত মঞ্চ গড়ার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির বিপরীতে পূর্ত দফতরের জমিতে এই মঞ্চ গড়ে তোলা হবে বলে পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে পূর্ত দফতরের অনুমতি আদায় করেছে উন্নয়ন পর্ষদ। শীঘ্রই ওই জমিতে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হবে। এইচডিএ-র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক (সিইও) পি উলগানাথন বলেন, “মানুষের চাহিদার কথা ভেবেই আমরা মুক্ত মঞ্চ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে আশা করছি।”
মহিষাদলে মুক্ত মঞ্চ তৈরি হওয়ার খবরে খুশি এলাকার সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষজন। এলাকার ‘শ্রুতিশৈলী’ নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক অরিজিৎ বসু বলেন, “এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এখানে মুক্তমঞ্চের খুব প্রয়োজন ছিল। তবে পরিকল্পনা স্তরে যেন আটকে না যায় প্রকল্পটি। দ্রুত মুক্ত মঞ্চটি গড়ে উঠুক, এটাই আমরা চাই।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিষাদলে ব্লক উন্নয়ন অফিস ও পঞ্চায়েত অফিসের বিপরীতে সেতুর নীচে প্রায় ১ একর ৬৯ ডেসিমেল জায়গা রয়েছে পূর্ত দফতরের। অধিগৃহীত ওই জমিটি ষাটের দশক থেকেই পড়ে রয়েছে। গত বছরের গোড়ায় স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার ওই এলাকা পরিদর্শনের পর জমিটিতে মাছের অত্যাধুনিক পাইকারি বাজার গড়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। যদিও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এইচডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জমিরই প্রায় ৭৫ ডেসিমেল জায়গায় আপাতত গড়ে তোলা হবে মুক্ত মঞ্চটি। আনুমানিক বরাদ্দ প্রায় ৪ লক্ষ টাকা।
তবে জমির সামনের দিকে ঢোকার মুখে পূর্ত দফতরের জায়গাতেই বেশ কিছু অবৈধ দোকানঘর রয়েছে। সেগুলি সরাতে গেলে গণ্ডগোল বাধার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাজার কমিটির তরফে জয়দেব দাসের হুঁশিয়ারি, “মুক্ত মঞ্চের জন্য আমরা দোকান ছেড়ে দিতে রাজি আছি। কিন্তু আমাদের অন্যত্র ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।” এইচডিএ-র তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, মুক্ত মঞ্চের পরিকল্পনা অনুযায়ী দোকানঘরগুলির কোনও ক্ষতি হবে না।
এইচডিএ-র এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিএম। মহিষাদলের সিপিএমের জোনাল সম্পাদক শরত কুইল্যার কথায়, “লক্ষ্মণ শেঠ সাংসদ থাকাকালীন সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়তে চেয়েছিলেন। তৃণমূলের বিরোধিতায় তা হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে চমক দিতে এইচডিএ এখন এই পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে, যা বলছে তা যদি সত্যিই করতে পারে, অবশ্যই ভাল।” মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা মিশ্র বিরোধীদের কটাক্ষ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “সাংস্কৃতিক পরিবেশ আছে। অথচ এলাকায় কোনও মুক্ত মঞ্চ নেই। তাই এই উদ্যোগ। বিরোধীরা অপপ্রচারে গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই।” |
|
|
|
|
|