|
|
|
|
হাতাহাতি, বিশৃঙ্খলায় শুরু আইএফএ শিল্ড |
প্রীতম সাহা • শিলিগুড়ি |
ইস্টবেঙ্গল-১ (চিডি)
পৈলান অ্যারোজ-০ |
মাঠে বলের লড়াই নয়। মাঠের মধ্যে হাতাহাতির লড়াই যেন বেশি নাটকীয় হয়ে উঠল শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে!
আগুনের ফুলকি অনেকক্ষণ ধরেই বেরোচ্ছিল। কিন্তু সেটা যে ম্যাচের পরে দাউদাউ করে জ্বলবে, টের পাওয়া যায়নি। যতক্ষণ না পৈলান স্টপার প্রণয় হালদার তেঁড়েফুঁড়ে মারতে ছোটেন মননদীপ সিংহকে!
ঘটনার সুত্রপাত বরিসিচের একটা কর্নার থেকে। যেটা বিপক্ষ মিডিও গণেশের গায়ে লেগে ফিরতে বরিসিচই ফের শট নিতে যান। গণেশ গায়ের জোরে বাধা দিলে উলটে রেফারি বরিসিচকেই হলুদ কার্ড দেখান। যা রেফারি সুব্রত বর্মনের নব্বই মিনিটে বহু ভুল সিদ্ধান্তের একটা। বিরক্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ মর্গ্যান বলেই ফেললেন, “এত খারাপ রেফারিং কখনও দেখিনি। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই এই! জানি না, পরের ম্যাচগুলোয় কী হবে? ফুটবলারদের উপর তো মানসিক চাপ তৈরি করছিলেন রেফারি।” |
|
দু’দলে হাতাহাতি। রবিবার ম্যাচের পর কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
অভিযোগ-পালটা অভিযোগের ঝড় বইতেই থাকে। ইস্টবেঙ্গল শিবিরের দাবি, “গোটা ম্যাচে অযথা লাথালাথি করছিল প্রণয়। তা ছাড়া ম্যাচের পরে ও মননদীপকে যে কেন ধাক্কা মারল বোঝা গেল না।” পৈলান শিবির আবার বলছে, “প্রণয় কিছু করেনি। মননদীপই আগে মারতে এসেছিল ওকে।” ম্যাচ কমিশনার এস সুরেশ অবশ্য খেলা শেষ হওয়ামাত্র ম্যাচের ভিডিও চেয়ে পাঠিয়েছেন। যার ভিত্তিতে কড়া রিপোর্ট জমা দিতে চলেছেন তিনি।
মাঠের ভেতর ফুটবলারদের হাতাহাতি। মাঠের বাইরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। আইএফএ শিল্ড ঘিরে কোনও উন্মাদনা চোখে পড়ল না শিলিগুড়িতে। ফেড কাপের সময়কার সেই জাঁকজমক ভাবটাই উধাও! গোটা শহর চক্কর দিলেও শিল্ডের একটা হোর্ডিং খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্টেডিয়াম সংলগ্ন হোটেলের কর্মচারি, দোকানদার, এমনকী সাধারণ পথচারিরা পর্যন্ত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে দেখছেন স্টেডিয়াম। “কী হচ্ছে দাদা! খেলা আছে না কি? কার খেলা?” স্টেডিয়ামে ব্যবস্থাপনাও তথৈবচ। কোনও নির্দেশিকা নেই। যে যেখান দিয়ে পাচ্ছে ঢুকে পড়ছে মাঠে। সাংবাদিক সম্মেলনের কোনও নির্দিষ্ট ঘর নেই। এক কথায় হ-য-ব-র-ল অবস্থা।
ফেড কাপের সঙ্গে অবশ্য একটা ব্যাপারে মিল আছে শিল্ডের। মাঠের সারফেস অবিকল এক। প্রচণ্ড শক্ত। জায়গায় জায়গায় অসমান বাউন্সের জন্য বল নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হচ্ছে ফুটবলাদের। ম্যাচের দিন মর্গ্যান মাঠে জল দেওয়ার জন্য বললেও, হেলদোল দেখাননি কর্তারা। নিটফল, চরম ভোগান্তি ফুটবলারদের। প্রথমার্ধে যাও বা বল গড়াল, বিরতির পরে শুধু ঢাই-ঢাই লাফ বলের। চিডি অবশ্য বুদ্ধিমানের মতো শুরুতেই গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে রেখেছিলেন। না হলে হয়তো তিন পয়েন্ট পাওয়া নিয়ে টানাটানি পড়ত লাল-হলুদের! মর্গ্যান বললেন, “পাথরের মতো শক্ত মাঠে ভাল ফুটবল আশা করা যায় না।! তিন পয়েন্ট এসেছে সেটাই অনেক!” সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, শিল্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্রিটিশ কোচের মন্তব্য, “এ রকম ভাবে টুর্নামেন্ট করার মানে হয় না। পরের ম্যাচ কাদের সঙ্গে জানি না। আদৌ হবে কি না তাও ঠিক নেই। আপনারা জানেন কার সঙ্গে পরের ম্যাচ আমাদের?”
দুঃখিত। আইএফএ-র মহিমা যে আইএফএ-ই জানে!
|
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, গুরবিন্দর, নওবা, ওপারা, রবার্ট, লালরিন্দিকা, পেন, সুবোধ, সঞ্জু, চিডি (বরিসিচ ৭৩ মিঃ), বলজিৎ (মননদীপ ৬৯ মিঃ)। |
|
|
|
|
|