|
|
|
|
দুই ‘দ্রোণাচার্যের’ সার্টিফিকেট |
‘বিদেশেও সফল হওয়ার ক্ষমতা আছে পূজারার’
‘ভরসা রাখলে ওপেনিং সমস্যা মেটাবে বিজয়’ |
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • হায়দরাবাদ |
চেতেশ্বর পূজারা-মুরলী বিজয় যখন রবিবাসরীয় দুপুরের উপ্পলকে ডুবিয়ে দিচ্ছেন চরম ক্রিকেট-রোম্যান্সে, তখন তাঁদের দুই ‘দ্রোণাচার্য’ বসে ভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানে। পূজারার ‘গুরু’ দেবু মিত্র ছিলেন কলকাতায়। বেহালায়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিজয়কে তুলে আনার পিছনে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য সেই ডব্লিউ ভি রামন দুপুরে বসে ছিলেন চেন্নাইয়ে, বাড়িতে টিভির সামনে। এবং রবিবারের দুই জাতীয় মহানায়কের ইনিংসের ময়নাতদন্তে বসে তাঁদের ‘গুরু’-রা ফোনে যা বললেন...
দেবু মিত্র: চিন্টুর (পূজারার ডাকনাম) সেঞ্চুরির পরপরই একটার পর একটা ফোন পাচ্ছিলাম। অর্ধেক ফোনের সারমর্ম একটাই। ছেলেটাকে কি এ বার পাকাপাকি ভাবে রাহুল দ্রাবিড় বলা যায়? অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করছে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে করছে, ডাবল সেঞ্চুরিও করল, বাকি আর কী থাকে? আমি একটাই কথা বলব, সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর আছে। ওখানে যদি এ রকম ফর্ম দেখাতে পারে, তা হলেই একমাত্র বলা যাবে ও রাহুল দ্রাবিড়ের ধারেকাছে পৌঁছনোর যোগ্য কি না। মনে রাখবেন, রাহুল দেড়শোটা টেস্ট খেলেছে। এত তাড়াতাড়ি ও সব তুলনাতে যাওয়ার যুক্তি নেই।
তবে এটাও একই সঙ্গে বিশ্বাস করি, দেশের মতো বিদেশের মাঠেও সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি করার ক্ষমতা আছে ওর। দেখুন, টেস্ট ক্রিকেটে আপনার সবচেয়ে দরকার পড়বে টেকনিক, টেম্পারামেন্ট। ভারতীয় দলে তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে ওর মতো আর কার সেটা আছে? দেশে ওই আপাতত যোগ্য তিন নম্বর। চেতেশ্বর পূজারা এখন কমপ্লিট প্লেয়ার। আগে পুল মারতে গিয়ে সমস্যায় পড়ত। কিন্তু এখন দেখছি, পুল বা হুক মারতে দু’বার ভাবছে না। আজ তো দেখলাম দেড়শো করছে সিডলকে হুক করে! এই অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে ওর সঙ্গে আমার বিশেষ কথা হয়নি। বিশ্বাস করি, যে ব্যাটসম্যান ফর্মে আছে, তাকে অহেতুক বিরক্ত করে লাভ নেই। যদি বোঝে কোনও সমসায় পড়ছে, নিজেই ফোন করবে। রাতে চিন্টুকে একটা এসএমএস করব। বলব, এ ভাবেই নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলে যাও। রান নিয়ে ভাবার দরকার নেই।
ডব্লিউ ভি রামন: এ বার নিশ্চয়ই সবাই বুঝতে পারছেন, মুরলী টেস্ট মেটেরিয়াল কি না। আমি আগে থেকেই জানতাম। ওর কেরিয়ার আমার হাতে শুরু হয়েছে। মানসিক কাঠিন্য ওর বরাবরই ছিল। যতই আইপিএলে ওকে নিয়ে হইচই হোক, জানতাম মুরলী জাত টেস্ট প্লেয়ার। চিপকে দ্বিতীয় ইনিংসে ওর আউট হওয়ার ধরন নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। আসলে বহু দিন পর ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেমেছিল। একটু সমস্যা তো হবেই। হায়দরাবাদ টেস্টের আগে ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। জিজ্ঞেস করেছিল, স্যর আমি পারছি না কেন? বলেছিলাম, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তুমি সেঞ্চুরি করেছিলে সেটা মাথায় রেখো। উইকেটে থাকার চেষ্টা কোরো।
আজ দেখলাম, সেটাই করল। অহেতুক হাঁকপাক করেনি। এই উইকেটে ব্যাট করাটা খুব সহজ ছিল না। ও সময় নিয়েছে, মাথা ঠান্ডা রেখে আস্তে আস্তে স্ট্রোক খেলেছে। আসলে মুরলী বুঝতে পেরেছে টেস্ট ক্রিকেটটা তাড়াহুড়ো করার জায়গা নয়। ভারত অনেক দিন ধরেই ওপেনিং নিয়ে ভুগছিল। সেই সমস্যা তো কিছুটা মিটল। ওর উপর বিশ্বাস রাখলে, মুরলী কিন্তু মর্যাদাটা ফিরিয়ে দেবে। |
|
|
|
|
|