|
|
|
|
নেতাজির জমি ফেরত নিল ওড়িশা সরকার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জমি-চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন হওয়ায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে পুরীতে থাকা দেড় বিঘা জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিল ওড়িশা সরকার। ৯৭ বছর আগে ওড়িশা সরকার বাড়ি বানানোর জন্য নেতাজির পরিবারকে ওই জমিটি দিলেও সেটি ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ওই জমির উপর তৈরি বাড়িটিরও অবস্থা শোচনীয়। তাই জমিটি নিজেদের হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজস্ব দফতর। ভবিষ্যতে ওখানে নেতাজির স্মারক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওড়িশা সরকার।
১৯১৬ সালে পুরীর জেলাশাসক ত্রিশ বছরের লিজে প্রায় দেড় বিঘা জমি সুভাষচন্দ্রের পিতা জানকীনাথ ও মা প্রভাবতী বসুর নামে দিয়েছিলেন। মূলত বসবাস করার উদ্দেশ্যেই নেতাজির পরিবারকে ওই জমিটি লিজে দেওয়া হয়। তথ্য বলছে, এর পর ১৯৪৬ সালে সুভাষচন্দ্র বসু, তাঁর তিন ভাই ও ছয় খুড়তুতো ভাইয়ের নামে ওই লিজটির পুনর্নবীকরণ হয়। কিন্তু পুরী প্রশাসনের বক্তব্য, ১৯৮২ সালে ওই চুক্তিটির ফের যখন নবীকরণের সময় আসে, তখন কোনও অজ্ঞাত কারণে ওই লিজ থেকে সুভাষচন্দ্র বসু, তাঁর ভাই সুরেশচন্দ্র ও শৈলেশচন্দ্র বসুর নাম বাদ পড়ে। এখন ঘটনাটির তদন্তে নেমে রাজস্ব দফতর মনে করছে, পরিকল্পিত ভাবে সেই সময়ে ওই নামগুলি বাদ দেওয়া হয়েছিল। কে বা কারা ওই কাজ করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও তার পাঁচ বছরের মধ্যে ১৯৮৭ সালে জমি বন্দোবস্ত আইন অনুসারে ওড়িশা সরকার ওই জমির চুক্তিপত্রে সুভাষচন্দ্রের নাম অন্তর্ভুক্ত করে।
কিন্তু ওই জমিটি নিয়ে অভিযোগ ওঠায় সম্প্রতি তদন্ত শুরু করে রাজস্ব দফতর। তাতে দেখা যায়, লিজে নাম থাকা বসু পরিবারের কেউ ওই জমিতে থাকতেন না। উল্টে আশি-নব্বইয়ের দশকে ওই জমিতে হোটেল-ব্যবসা ফেঁদেছিলেন এক চিনা ব্যক্তি। তিনি কী ভাবে ওখানে হোটেল খুললেন, তদন্ত করা হচ্ছে। রাজস্ব দফতর অবশ্য জানিয়েছে, এক দশক আগেই সেই হোটেলটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই জমিতে তৈরি বাড়িটিও কার্যত ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। যদিও সেখানে এক ব্যক্তি ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করছিলেন। তিনি ঠিক কার ভাড়াটে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্ত-রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজস্ব কমিশনার অরবিন্দ পাধে যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, “জমি ও জমির উপর থাকা বাড়িটি হোটেল হিসেবে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে ওই বাড়িটিতে এক জন ভাড়াটে রয়েছেন। ফলে জমি সংক্রান্ত চুক্তির চরিত্র পরিবর্তন হয়েছে। নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির এই অবস্থায় পড়ে থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক।” |
|
|
|
|
|