|
|
|
|
মুক্তিপণের লোভেই অপহরণ |
দিল্লির শিশুদের খুন করেছিল কাকাই |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দিল্লির দুই ভাইবোনকে অপহরণ করে খুনের রহস্যভেদ করল পুলিশ। জানা গেল, ঘটনার পিছনে রয়েছে ওই দুই শিশুর কাকা এবং তার বন্ধুরা। এখন তারা পুলিশের জালে। তবে এক বন্ধু পলাতক।
আগেই পুলিশ সন্দেহ করেছিল, অপহরণকারীরা বাচ্চা দু’টির পরিচিতই ছিল। তাই স্কুল থেকে তাদের সঙ্গে বেরিয়ে গিয়েছিল নিশ্চিন্তে। ঠিকই আঁচ করেছিল পুলিশ। জেরার মুখে অপরাধীরা জানিয়েছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তারা অপহরণের ছক কষেছিল। কিন্তু সে দিন সাত বছরের মনসিজ ও তার বোন ইয়াশবি স্কুল যায়নি। তাই তখনকার মতো ছক বানচাল হয়ে যায়।
এর ঠিক তিন দিন পরে তারা নতুন করে ছক কষে। এ দিন আর কোনও সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি। স্কুলছুটির সময় মনসিজের মা যাতে তাদের আনতে যেতে না পারে, তাই আগেই বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল অভিযুক্ত অমিত সিংহ। ছুটির পর ধীরেসুস্থে বাচ্চাদের স্কুলে থেকে নিয়ে যায় সে। এর পর পাণ্ডবনগরে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করে। সেখান থেকেই প্রথম মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে দুপুর দু’টো নাগাদ।
এর পর মনসিজ ও ইয়াশবিকে মেহ্রৌলিতে নিয়ে যায় অমিতরা। তার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মিলেনিয়াম পার্কে। কিন্তু পরে অমিত বুঝতে পারে, বাচ্চা দু’টোকে সামলানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠছে। পার্কেই ইয়াশবিকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করে অমিত। কিন্তু ব্যর্থ হয়। এ বার দুই ভাইবোনকে নিয়ে সে চলে যায় প্রগতি ময়দানে। পাথরে মাথা থেঁতলে খুন করে তাদের দেহ সেখানে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে যে যার বাড়ি ফিরে যায়। ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি, দু’দিন ধরে ক্রমাগত মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করতে থাকে তারা। কিন্তু মনসিজদের গলা শোনাতে না পারায় শেষমেশ টাকাটা আর হস্তগত করতে পারেনি।
২২ বছরের অমিত জানত মনসিজ ও ইয়াশবির বাবা-মা জমিজমা বিক্রি করে বেশ কিছু টাকাপয়সা হাতে পেয়েছে। চটজলদি টাকা কামাতেই অপহরণের পথটাই বেছে নিয়েছিল অমিত ও তার তিন বন্ধু। ডিসিপি প্রভাকর জানান, জমিজমা বিক্রি করে মনশিজদের পরিবার লাখ তিরিশেক টাকা পায়। এ দিকে, অমিত ও তার চার বন্ধু হন্যে হয়ে টাকা উপায়ের পথ খুঁজছিল। জুয়া ও অন্য কিছু কারণে তারা অনেক টাকা খুইয়েছিল। চুক্তি হয়েছিল, মুক্তিপণের টাকা থেকে অমিতের তিন বন্ধু দু’লাখ টাকা করে নেবে। বাকিটা যাবে অমিতের পকেটে। পরিকল্পনা মাফিকই এগিয়েছিল সব। কিন্তু যে বুথ থেকে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করে তারা, সেখান থেকেই সূত্র পায় পুলিশ। সন্দেহ পড়ে অমিতের উপর। তাকে জেরা করেই অন্য সঙ্গীসাথীদেরও ধরে ফেলে পুলিশ।
কয়েক মাসে বার বার কাঠগড়ায় রাজধানীর নিরাপত্তা। আজ রহস্য ভেদ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত বলেন, আইনশৃঙ্খলা অভাব থাকতে পারে। তবে এই ঘটনায় পুলিশকে নিশানা করা ঠিক নয়। |
|
|
|
|
|