|
|
|
|
মোদীকে বিঁধতে কংগ্রেসের অস্ত্র এ বার চিদম্বরম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জাতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর অভিষেক মুহূর্তে তাঁর উন্নয়মমুখী ভাবমূর্তিকে নস্যাৎ করতে আসরে নামলেন কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। কংগ্রেস তো বটেই, মনমোহন সিংহ-সরকারের তরফেও দাবি করা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদী গুজরাতের বিপুল উন্নয়ন করেছেন বলে যা দাবি করা হচ্ছে, তা আসলে অতিকথন।
কংগ্রেসের এই মোদী-বিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পি চিদম্বরম। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তাঁর এ বারের বাজেট-বক্তৃতাতেও গুজরাতের নাম না করে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, এমন অনেক রাজ্য রয়েছে, যেখানে আর্থিক বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘু, তফসিলি জাতি-উপজাতি, মহিলা ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির কোনও উন্নতি হয়নি। আজ চিদম্বরম গুজরাতের নাম করেই বলেছেন, “গুজরাত-মডেল বলে কিছু নেই। প্রত্যেক রাজ্যই নিজের প্রয়োজন মতো কিছু আর্থিক নীতি নেয়। কখনও ভাল ফল মেলে, কখনও খারাপ। গুজরাতেরও ভাল-মন্দ রয়েছে। অপুষ্টি, মহিলাদের উন্নয়ন, তফসিলি জাতি-উপজাতির উন্নয়নে যথেষ্ট খামতি রয়েছে। আশা করব, গুজরাত সরকার এই খামতিগুলো মেটানোর চেষ্টা করবে।”
মোদীকে সরাসরি আক্রমণ না করে গুজরাতের উন্নয়ন নিয়ে চিদম্বরমের প্রশ্ন তোলা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দু’টি। বিজেপিতে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর দাবিদার হয়ে ওঠার পথে মোদীর প্রধান হাতিয়ারই হল তাঁর আমলে গুজরাতের উন্নয়ন। বিজেপি-সভাপতি রাজনাথ সিংহও এই গুজরাত মডেলের প্রশংসা করেই তাঁকে জাতীয় পরিষদের মঞ্চে স্বাগত জানিয়েছেন। তাই সেই সুশাসনকেই নিশানা করছেন চিদম্বরম। আর একটি কারণ হল, এর আগে মোদীর লগ্নিবান্ধব নীতির প্রশংসা করেছিলেন চিদম্বরম। আর সেই প্রশংসাকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই অস্ত্র করেছিল বিজেপি। এ বার তাই চিদম্বরম পাল্টা আক্রমণাত্মক। তিনি বোঝাতে চাইছেন, মনমোহন-সরকার শুধুই আর্থিক বৃদ্ধির কথা বলছে না। বরং বৃদ্ধিতে ভর করে সকলের জন্য উন্নয়নের কথা বলছে। এখানেই গুজরাত-মডেলের সঙ্গে মনমোহন-মডেলের পার্থক্য। চিদম্বরমের কথায়, “কেউ বড় বড় দাবি করতেই পারেন। কিন্তু ফলাফলটাই শেষ কথা। আমি অস্বীকার করছি না, গুজরাত অনেক জায়গাতেই উন্নতি করেছে। কিন্তু কোথাও অনুন্নয়ন থাকলে সেটাও দেখা উচিত।”
মোদী-চিদম্বরম দ্বৈরথ অবশ্য এখানেই থামছে না। আগামিকাল নেট দুনিয়াতেও মোদীর সঙ্গেই ছায়াযুদ্ধে নামছেন চিদম্বরম। বাজেটের পরে সব অর্থমন্ত্রীই শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করেন। চিদম্বরমও এ সব করছেন এবং তার পাশাপাশি ‘গুগল প্লাস-হ্যাংআউট’-এ নেট-নাগরিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন বাজেট সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য। এই প্রথম কোনও ভারতীয় অর্থমন্ত্রী বাজেট নিয়ে ইন্টারনেটে আমজনতার মুখোমুখি হচ্ছেন। এবং সেখানেই আসছে মোদীর সঙ্গে তাঁর ছায়াযুদ্ধের প্রসঙ্গ। কারণ গত বছর অগস্টে গুজরাত বিধানসভার প্রচারে ‘গুগল প্লাস-হ্যাংআউটে’ নেট-নাগরিকদের মুখোমুখি হন মোদী। আমেরিকায় বারাক ওবামা বা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডের কাছে এ সব জলভাত হলেও এ দেশের রাজনীতিতে মোদীই প্রথম যোগাযোগের জন্য নেট-পথ বাছেন।
বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর দাবিদারকে তিনি যে ভাবে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, চিদম্বরমও কি কংগ্রেসে একই পদের দাবিদার হয়ে উঠছেন? একটি পত্রিকায় তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তুলে ধরা হয়। চিদম্বরমের সহাস্য উত্তর, “আমি এ সবে মজা পাই। ওই পত্রিকার বোধহয় এ বার বিক্রি কমবে!” |
|
|
|
|
|