ভূমিকম্প হয়েছে না সেতুর উপরে বোমা পড়েছে? খসে পড়া উড়ালপুলের অংশ দেখে তখনও বিস্ময় কাটেনি উল্টোডাঙার শ্রীকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দাদের।
রবিবার ভোরে ঘুম ভেঙেছে বিকট শব্দে। তার পরেই শ্রীকৃষ্ণপল্লির মানুষ ছুটে গিয়েছেন উড়ালপুলের কাছে। ভাল করে আলো ফোটেনি তখনও। ভিআইপি রোডের আলোয় স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন একটা উড়ালপুলের বাইপাসগামী রাস্তার পঞ্চাশ মিটারের মতো উধাও। একটা স্তম্ভ থেকে আরেকটা স্তম্ভের মাঝের অংশ অর্থাৎ রাস্তাটা নেই।
কোথায় গেল রাস্তা? স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল সর্দার বলেন, “অন্ধকারে ভাল করে ঠাহর করতে পারছিলাম না। পি সি সরকারের ম্যাজিকের মতো উড়ালপুলের ৫০ মিটারের মতো রাস্তা উধাও। সেতুর কাছে গিয়ে দেখি রাস্তাটা উল্টো হয়ে ঝুলছে। কিছুটা অংশ খসে পড়েছে নীচের খালে।” এমন ভাবে একটা সেতুর রাস্তা স্তম্ভের দু’দিক থেকে খসে পড়তে পারে তা ভাবতেও পারেননি তাঁরা। আর এক বাসিন্দা বলেন, “মনে হচ্ছিল কেউ এসে রাস্তাটাকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে।” |
দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় এলাকাবাসীর। রবিবার, উল্টোডাঙায়। ছবি: শৌভিক দে |
ওই উড়ালপুলের বাইপাসের দিকে পুলিশের ভ্যান টহল দিচ্ছিল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এক বাসিন্দা রাঘব মণ্ডল জানান, ঘটনাটি পুলিশের নজরে আনতে তাঁরাই উড়ালপুলের রাস্তা ধরে ছোটেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই চলে আসে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। আর এক প্রত্যক্ষদর্শী নির্মল দাস বলেন, “ভেঙে যাওয়া উড়ালপুলের কাছে গিয়ে দেখি সেতুর স্তম্ভের সঙ্গে আটকে ঝুলছে একটা ট্রাক। কেবিন থেকে আর্তনাদও কানে এল। কী ভাবে উদ্ধার করব, বুঝতে পারছিলাম না। ভয়ও পাচ্ছিলাম। ফের যদি কোনও অংশ ভেঙে পড়ে!” এক বাসিন্দা মন্টু যাদব বলেন, “আমাদের কয়েক জন কোনও রকমে কেবিন পর্যন্ত পৌঁছে তিন জনকে বার করে। একজনের মুখ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল।”
ততক্ষণে চলে এসেছে লেকটাউন থানার পুলিশ। বাসিন্দারাই আহতদের পুলিশের ভ্যানে তুলে দেন। পৌঁছয় দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সকালে আসেন নেতা-মন্ত্রীরাও। |