ফের চালু হচ্ছে রাজ্যের চারটি তন্তুবায় সমবায় সমিতি। কালনা ১ ব্লকের গোয়াড়া ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুর এলাকায় রয়েছে এমনই দু’টি কেন্দ্র। এর সঙ্গে নদিয়ার চরমাজদিয়া এবং চরব্রহ্মনগরেও দু’টি সমবায় চালু হওয়ার কথা। শনিবার বিকেলে গোয়াড়ার ওই তন্তুবায় সমবায় সমিতির উৎপাদন কেন্দ্রের নবরূপায়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির, বস্ত্র ও ভূমি দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
আশির দশকে রাজ্যের তাঁতশিল্পের উন্নতির জন্যে ৮৫টি এমন সমবায় চালু হয়। যাঁদের নিজের তাঁত ছিল না, তাঁদের একত্রিত করে তাঁতের কাজ করানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। কাপড় বোনার সুতো দিত সমবায় সমিতি। কাপড় পিছু নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক বরাদ্দ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে বেশির ভাগ সমবায় আর্থিক ভাবে ধুঁকতে থাকে। তাঁতিদের বক্তব্য, নানা সংস্থায় বিক্রি হওয়া পণ্যের টাকা আটকে থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই মজুরি পেতে সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সমবায় ঋণে জড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ সমিতিই। ৮৫টি তাঁতবিহীন তন্তুবায় সমবায় সমিতির মধ্যে এখনও চালু রয়েছে মাত্র ৭টি। এই চারটি চালুর পরেও বন্ধ থাকছে ৭৪টি। |
প্রতিমন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, “এই সমবায়গুলিতে আপাতত ২০টি তাঁত বসানো-সহ কিছু উন্নয়ন করা হবে। তার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৮ লক্ষ টাকা। তাঁতিদের আগ্রহ দেখে ভবিষ্যতে আরও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কথা ভাবা হবে। এই চারটি সমবায় খুলতে খরচ হচ্ছে প্রায় কোটি টাকা।” তিনি জানান, এই সমবায়ে মূলত মোটা সুতোর শাড়ি বোনা হবে। প্রতিটির জন্য ৬০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হবে। সুতো পাকানোর জন্য পাওয়া যাবে ২০ টাকা করে মজুরি। প্রতি কাপড়ে মোট খরচ পড়বে ১৮৪ টাকা। ১০৪ টাকায় রেশন ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে এই শাড়ি। তাঁর দাবি, “এতে গরিব মানুষ যেমন সস্তায় শাড়ি পাবেন, তেমনই কর্মসংস্থানও হবে অনেকের। ত্রাণের লুঙ্গি, ধুতি, শাড়ি, চাদর বোনার কাজও হবে।” রাজ্যের তাঁত ও বস্ত্রশিল্প অধিকর্তা সুদীপ ঘোষ বলেন, “এ রাজ্যে তাঁতের চাহিদা রয়েছে। আশা করি, সরকারি সাহায্যে কালনার তাঁতশিল্পীরাও উপকৃত হবেন।” অনুষ্ঠানে ছিলেন তন্তুজের পরিচালন অধিকর্তা রবীন্দ্রনাথ রায়, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তি চাল-সহ অনেকেই। |