ফের একশো দিন কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল সিপিএম পরিচালিত লাভপুরের দাঁড়কা পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। কয়েক মাস আগেও একশো দিন প্রকল্পে দু’টি পুকুর কাটা নিয়ে ওই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। যার জেরে জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল প্রধানকে। পলাতক রয়েছেন পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট। এ বার একশো দিন কাজের প্রকল্পে উপকরণ সরবরাহ করা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে স্থানীয় এক ঠিকাদার। প্রধান অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন রাস্তায় মোরাম ও ল্যাটেরাইট সরবরাহ করার জন্য দরপত্র ডাকা হয়। স্থানীয় এক ঠিকাদার কাজি গোলাম বদরুদ্দিনের অভিযোগ, “দরপত্রে কারচুপি করে ওই সব জিনিসপত্র সরবরাহের বরাত পাইয়ে দেওয়া হয় দিলীপ রায় নামে পছন্দের এক ঠিকাদারকে।” শুধু তাই নয়, উপকরণ সরবরাহের জন্য দিলীপবাবুকে দেড় লক্ষ টাকা বেশি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
পঞ্চায়েতের নথি থেকেই জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪৭৩ টাকার উপকরণ সরবরাহ করেছেন বলে দিলীপবাবু দাবি করেছেন। আয়কর-সহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৬৪,৮৬৩ টাকা বাদ যাওয়ার কথা। সেই হিসেবে দিলীপবাবুর পাওনা দাঁড়ায় ১৫ লক্ষ ৩২ হাজার ৬১০ টাকা। কিন্তু ছ’দফায় তাঁকে ১৬ লক্ষ ৮২ হাজার ৬১১ টাকা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী ওই ঠিকাদারের দাবি, “আসলে প্রধান অসাধু কিছু পঞ্চায়েত কর্মী ও ঠিকাদারের সঙ্গে আর্থিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে এই সব কাণ্ড করেছেন।” দিলীপবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পঞ্চায়েত প্রধান সেরি বিবি বলেন, “ভুল করে ওই ঠিকাদারকে বেশি টাকা দেওয়া হয়েছিল। ভুল ধরা পড়ার পরে তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে কাকে কেমন কাজ দেওয়া হবে তা পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত ক্রমে স্থির হয়। কোনও রকম দুর্নীতি হয়নি।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “অভিযোগকারী ওই ঠিকাদার যৎসামান্য উপকরণ সরবরাহ করে মোটা টাকা দাবি করেন। সেই বিল না দেওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “ওই অভিযোগ হাতে হাইনি। পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। দুর্নীতি প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |