বালি ভর্তি লরি উল্টে মারা গেলেন এক মোটরবাইক আরোহী ও লরির খালাসি। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও সাতজন। রবিবার দুপুরে পানাগড়-মোড়গ্রাম ৯ নম্বর রাজ্য সড়কের ত্রিলোকচন্দ্রপুর মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মোটরবাইক আরোহীর নাম ভিকি পাসোয়ান (২৭)। পানাগড় রেল পাড়ের বাসিন্দা তিনি। লরির খালাসি বিনোদ মুর্মু’র (১৮) বাড়ি অন্ডালের বনবহালে। ঘটনার পরে এলাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের পাকাপাকি ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে ঘণ্টা দুয়েক যান চলাচলও ব্যহত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর আড়াইটা নাগাদ অজয়ের পাড় থেকে বালি নিয়ে একটি লরি পানাগড়ের দিকে আসছিল। সেই সময়ে ত্রিলোকচন্দ্রপুর মোড় বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন অনেকে। |
উল্টে পড়ে রয়েছে লরিটি। কাঁকসায় তোলা নিজস্ব চিত্র। |
মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভিকি পাসোয়ান। লরিটি হঠাৎ ত্রিলোকচন্দ্রপুর মোড়ের কাছে উল্টে যায়। লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ভিকি। মারা যান লরির খালাসি বিনোদও। দুই মহিলা-সহ জখম হন আরও সাত জন। তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। জখমদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা হয়েছে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। আসে পুলিশও। জখমদের উদ্ধার করে প্রথমে কাঁকসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের স্থানান্তর করা হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। স্থানীয়রা জানান, দ্রুত গতিতে আসা লরিটি দু’বার পাল্টি খেয়ে একটি মাটির দোকানের গায়ে উল্টে পড়ে। সামনের একদিকের চাকা খুলে বেরিয়ে যায়। ভেঙেছে বাসের সামনের কাচের জানালাও। দোকানঘরটিরও কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে বেশ কিছুক্ষণ যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। কিন্তু যান নিয়ন্ত্রণের কোনও পাকাপাকি ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া লরিতে অতিরিক্ত ওজন রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে গিয়ে যানবাহনের গতি আরও কমিয়ে দেওয়া হয়। ফলে যানজট আরও বাড়ে বলে তাঁদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার হাল খারাপ হয়ে গিয়েছে। তার উপর পুলিশ ও পরিবহন দফতরের কড়াকড়িতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যাচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গতি বাড়িয়ে দেন চালক। কিন্তু রাস্তা খারাপ থাকায় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যানবাহনগুলি। এ দিনও পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে কাঁকসা থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। তাঁদের দাবি, রাস্তা সংস্কার হওয়ার পরে নিয়ন্ত্রিত ভাবে যানবাহন পরীক্ষা করা হলে এমন পরিস্থিতি হবে না। সাধারণ মানুষেরও ভোগান্তি কমবে। কমবে বিপদের আশঙ্কাও। তবে পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের দাবি, নিয়ম মেনেই ওই রাস্তায় যানবাহন পরীক্ষা করা হয়। |