ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
হাওয়া অফিসে যে দিন জয়েন করি, ডিউটি অফিসার ছিলেন গোবিন্দবাবু। জিজ্ঞাসা করলেন, আগে কাজ করেছ কিছু? বললাম, ভূমি সংস্কারের কানুনগো। উনি বললেন, মাটি করেছ, এ বার আকাশ করবে। আসমান-জমিন তো তোমারই দখলে হে। আকাশটাকে ঠিক মতো বোঝার চেষ্টা করবে, বুঝলে? মেয়েছেলে আর আকাশ ভারী শক্ত।
উনি আমার বস। অ্যাসিস্ট্যান্ট মেটেয়রলজিস্ট। আমি হলাম অবজার্ভার। আকাশে কতটা কী মেঘ, কোন দিক থেকে বাতাস বইছে, কত জোরে, তাপ, চাপ, আর্দ্রতা সব ঘণ্টায় ঘণ্টায় মাপতে হত। প্রত্যেক বিমানবন্দরের সঙ্গে একটা করে হাওয়া-অফিস থাকে। ওরা বলে মেট অফিস। মানে মেটেয়রলজিকাল অফিস। আমি দমদম বিমানবন্দরে ছিলাম। বড় ম্যাপের মধ্যে আইসোবার আঁকতে আঁকতে গোবিন্দবাবু গান করতেন ‘নীল শাড়ি নিঙাড়িয়া শ্রীমতী চলে।’ একটা গানেরই ওই একটাই লাইন বারবার গাইতেন। আমি বলতাম, একটাই গান কেন গাইছেন স্যর? আর গান নেই? উনি বলতেন, আরে, একটা গান কোথায়, একটা লাইনই তো গাইছি, আগে একটা লাইন ঠিকঠাক গেয়ে নিই, পারফেক্ট হোক, তবে তো পরের লাইনে যাব।
সুকুমার রায়ের কবিতার দু’টো লাইনও আওড়াতেন মাঝেমধ্যে ‘শুনেচ কি ব’লে গেল সীতারাম বন্দ্যো?/ আকাশের গায়ে নাকি টকটক গন্ধ?’ জিজ্ঞাসা করতেন, কী হে, তুমি আকাশের গায়ে কোনও গন্ধ-টন্ধ পাও? আমি বলতাম, না স্যর, তেমন কিছু পাই না। উনি বলতেন, পাবে, পাবে, যে দিন আকাশ সিদ্ধ হবে, সে দিন পাবে। বৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর যদি আকাশটাকে চেটে দেখতে পারো, দেখবে কেমন মিষ্টি। বুঝলে ভাই, হিউমিডিটির একটা গন্ধ আছে। বাতাস যখন নাইন্টিফাইভ পার্সেন্ট হিউমিডিটি ক্রস করে যায়, নিশ্বাস নিয়েই বুঝতে পারি। ড্রাই-বাতাসও বুঝে যাই। ওয়াচ কোরো বৈশাখের বৃষ্টি, মানে নরওয়েস্টার রেন-এর গন্ধ, আর মনসুন রেন, মানে আষাঢ়-শ্রাবণের বৃষ্টির গন্ধটা আলাদা। শুধু গন্ধ কেন, পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে ওয়েদার অবজার্ভেশন করতে হয়। সাইক্রোমিটার, রেনগেজ, উইন্ড ভেন ও সব আছে, থাক। আমাদের শরীরের মধ্যেই সব যন্তর ফিট করা আছে। সে সব যন্তর অপারেট করাও কঠিন নয়। ইচ্ছেটাই দরকার। আমি তো ভাই বৃষ্টির সময় ডিউটি না থাকলে আমাদের কোয়ার্টারের বারান্দায় টিনের শেডে বৃষ্টির শব্দ শুনে বুঝে যাই একষট্টি না সাতষট্টি।
মেটেয়রলজিকাল কমিউনিকেশনে কিছু আন্তর্জাতিক কোড আছে। ৫০ মানে খুব হালকা বৃষ্টি। ৯৯ মানে খুব ভারী বৃষ্টি। মেঘও বোঝানো হয় সংখ্যা দিয়ে। ১ মানে সিরাস, ৭ মানে স্ট্র্যাটাস, ৮ মানে কিউমুলাস, ৯ মানে কিউমুলোনিম্বাস বা সি.বি। সি.বি মানে বজ্রগর্ভ মেঘ। আবহাওয়াবিদদের কাছে সি.বি শব্দটার গুরুত্ব খুব বেশি। আবার, আকাশ কতটা মেঘে ঢেকে আছে, সেটাও সংখ্যায় বোঝানো হয়। ০ মানে মেঘমুক্ত আকাশ। ২ মানে আকাশকে আট ভাগ করলে তার দুই ভাগ মেঘে ঢাকা। ৮ মানে পুরো আকাশ মেঘে ঢাকা।
এরোপ্লেনের পাইলটরা টেক-অফ করার আগে মেট অফিসে এসে ব্রিফ নিয়ে যান। তাঁরা গোবিন্দবাবুকে ‘কেমন আছেন’ জিজ্ঞাসা করলে গোবিন্দবাবু কোড-এ জবাব দিতেন। যেমন, একদম জিরো ওয়ান এইট ওয়ান জিরো। মানে হল, মেঘমুক্ত আকাশ একশো আশি ডিগ্রি থেকে দশ নটিকাল মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে হাওয়া দিচ্ছে। মানে, দক্ষিণ থেকে ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে মানে, ফার্স্টক্লাস আছি!
আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার পদমর্যাদা ওঁর ছিল না। উনি তো অ্যাসিস্ট্যান্ট মেটেয়রলজিস্ট। পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা হল মেটেয়রলজিস্টদের। উনি কিন্তু আমাদের ফোরকাস্ট দিতেন। ‘বলে দিচ্ছি, আর এক ঘণ্টার মধ্যেই এমন ফগ হয়ে যাবে, পাইলটের প্লেন ছোটাতে কাহিল অবস্থা হয়ে যাবে।’ কুয়াশার কারণে ফ্লাইট ডিলে হলে ফোরকাস্ট মিলে গেল বলে আনন্দ পেতেন। সকালবেলা জিলিপি খাইয়ে দিতেন।
গোবিন্দবাবু পা ভাঙলেন। হাতেও চোট। পায়ে প্লাস্টার। কোয়ার্টারেই থাকেন। দেখতে গেলাম। ওঁর স্ত্রী বললেন, তোমরা একটু বোঝাও ওনাকে ফোরকাস্ট দেওয়া তো ওঁর কাজ নয়, অত মাইনে উনি পান না। কেন খামোকা ফোরকাস্ট দিতে যান?
জানলাম, দুপুরে অফিসে বলে এসেছিলেন বিকেলে ঝড়বৃষ্টি হবে। বাড়ি ফেরার সময় আকাশের দিকে তাকাতে তাকাতে ফিরছিলেন। গর্ত ছিল। গর্তে পড়ে গিয়ে...।
গোবিন্দবাবু বললেন, কিউমুলাসগুলো বড্ড বিট্রে করে ভাই। ওগুলো নিম্বাসগুলোকে নিজের কোলের ভিতর লুকিয়ে রাখে। কিউমুলাসের কোলে রাখা নিম্বাসছানাগুলোকে খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। মা আর ছানা মিলেই তো কিউমুলোনিম্বাস, না? আমায় দেখতে হবে না? সি.বি বড় রহস্যময় ভাই।
দেড় মাস পর লাঠি হাতে অফিসে এলেন। বললাম, এখন ফিট তো স্যর? বললেন, আমি তো ভাল, কিন্তু বাড়িতে পাঁচটা জিরো। ডিকোড করলে মানে দাঁড়ায় কোনও হাওয়া নেই। থমথমে অবস্থা।
কিছু দিন পর আবার দুঃসংবাদ। ষাঁড় গুঁতিয়েছে। আসলে, আগের দিন রাত্রে ডেন্স ফগ-এর ফোরকাস্ট করেছিলেন। সকালে উঠেই দেখেন ঘন কুয়াশা। ফোরকাস্ট মিলে যাওয়ায় মনের আনন্দে রাস্তায় হাঁটছিলেন। ষাঁড়টা তখনই...। কুয়াশায় ষাঁড়টাও দেখতে পায়নি গোবিন্দবাবুকে।


• অনেক ক্ষণ ধরে হিসি পেয়েছে, মহানন্দে করতে গেলেন, ঠিক পাশের ইয়েটাতে এসে দাঁড়িয়ে গেলেন আপনার
বদমেজাজি বস। আপনার হিসি আটকে গেল। এ বার শুকনো-শাকনা দাঁড়িয়ে থাকার উদ্ভট মানে হবে না তো?
• ভোটে দাঁড়িয়েছেন এবং সব বাড়ির নীচে গিয়ে
হাতজোড় করে হাসি-হাসি মুখে তাকাচ্ছেন। তিন
তলার বারান্দা থেকে আনমনা লোক হড়াস
করে জঞ্জাল ফেলে দিল স্ট্রেট মাথায়।
• বহু ঠেকে শিখেছেন অমুক কোম্পানির ৩৮ নং
টি-শার্টটাই আপনার হয়, আর কিচ্ছুই ফিট করে না।
কিনতে গিয়ে দেখেন, সব আছে, ঠিক ওই সাইজটাই
আউট অব স্টক! সেল্সগার্ল হাত উলটে, ইংরিজিতে দুঃখিত!


৫০৮২

মোট যতগুলো
বস্তি আছে এ রাজ্যে
৩০৩

যত জন ‘ডুবুরি অতিথি’ উপস্থিত ছিলেন পোল্যান্ডবাসী ইভা স্ট্রারোনস্কা ও পাভেল বুর্কোস্কি-র ‘আন্ডারওয়াটার ম্যারেজ সেরিমনি’-তে
১৬৪৮

এ রাজ্যে যত জন নাগরিক পিছু
এক জন পুলিশকর্মী আছেন। গোটা
দেশে ৭৬১ জন নাগরিক পিছু এক জন
১০০

যত কোটি পেরিয়ে গেল বিশ্ব জুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা

৫০

শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে পড়াশোনার সময় দৈনিক যত মিনিট বাড়াল রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষত্
৪০০০০০০

কলকাতা শহরে প্রতি মাসে
যত টাকার জল অপচয় হয়
বলে জানাল কলকাতা পুরসভা

১৭৪২৫১৭০

এক হাজার কম্পিউটার টানা ৩৯ দিন চালিয়ে যত অঙ্কের দীর্ঘতম মৌল সংখ্যা খুঁজে পেলেন মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক কার্টিস কুপার


ভারতের যুবসমাজের মাত্র
যত শতাংশের প্রাতিষ্ঠানিক
কারিগরি প্রশিক্ষণ আছে

 

সী

চৌ
ধু
রী

চলতে গেলে রাস্তাঘাটে দারুণ খানাখন্দ
বাড়ছে আবার ট্রেনের ভাড়া,
চড়ছি না তাই। আর তা ছাড়া
থাকলে ঘরেই, কলকাতাটা
এমন কী আর মন্দ!

মন্ত্রীর কথা শুনে শুধু শুধু তোরা মাথা ঠুকলি।
কোনও বিভ্রাট নেই। মিডিয়া রটায় মিছে চুকলি।
যা চলছে পুলিশের সামনেই।
টিভি-ছবি? তার মোটে দাম নেই।
পরীক্ষা ঠিকঠাক। দেখিস না ছোট গণটুকলি।

লেটারিং বেটারিং
মাছ হটাও মধ্যবিত্ত বসাও

এই ছবির সংলাপ লিখেছেন সোমা বিশ্বাস, বাগুইআটি






First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.