মেসি-যুগ শেষ? বিশ্বাস করি না।
সারা দুনিয়ার মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে, মেসির দাপট কি কমে আসছে? শনিবার রাতে ওর পারফরম্যান্স দেখে সে কথা মনে হওয়ার কোনও উপায় নেই। যে ভাবে আর্জেন্তিনীয় তারকার পায়ে বল পড়তেই গোটা বার্সেলোনা বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল, তাতে এক বারও মনে হয়নি যে মেসি ফুরিয়ে যাচ্ছে।
বরং শনিবার লা লিগার এল ক্লাসিকো দেখে বারবার মনে হল, পুরো বার্সেলোনা দলটাই কেমন মেসিকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। এটাই খারাপ। এটাই বার্সার সাম্প্রতিক ব্যর্থতার কারণ। মেসির পায়ে বল পেলে তবেই বার্সেলোনাকে তেড়েফুঁড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। মাঠের বাইরে থেকে যখন পরিষ্কার ব্যাপারটা বোঝা যাচ্ছে, তখন বিপক্ষই বা বুঝবে না কেন? আসলে বার্সেলোনার খেলা দেখার পর প্রত্যেক কোচই ওদের বিরুদ্ধে মোটামুটি এক স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছে। মেসিকে আটকাও, ম্যাচ বার করো। |
৯০ মিনিটের মেসি |
|
• ০-১৭ মিনিট: সে ভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। • ১৮ মিনিট: প্রথম ঝলকানি, তাতেই গোল।
মার্কারকে ফাঁকি দিয়ে।
• ২০ মিনিট: নিজেদের বক্সে নেমে পেপেকে ট্যাকল। |
• ৩২ মিনিট: ফের গোলে শট।
• ৫২ মিনিট: অসাধারণ ক্রস আলভেসকে।
• ৫৭ মিনিট: আরও একটা নিখুঁত
ক্রস। এ বার ভিয়াকে।
• ৬০ মিনিট: কড়া ট্যাকলে মাটিতে। |
|
মেসিকে
আটকানোর ছক |
মার্কার তো ছিলই, পাশাপাশি বল ধরলেই ঘিরে ধরছিলেন
তিন থেকে চার ডিফেন্ডার। মেসিকে আটকেই বার্সাকে থামিয়ে দেওয়া হল। |
মেসি ছুঁলেন
স্টেফানোকে |
অ্যালফ্রেডো ডি’স্টেফানোর এল ক্লাসিকো রেকর্ড ছুঁলেন মেসি।
মাদ্রিদের হয়ে
বার্সার বিরুদ্ধে ১৯৫৩ থেকে ’৬৪ ৩০ এল ক্লাসিকোয়
১৮ গোল ডি’স্টেফানোর।
মেসির ১৮ গোল ২৫ ম্যাচে। |
|
আসলে মেসি তো এখন শুধু এক জন ফুটবলার নয়, মেসি রীতিমতো একটা বিষয়। যাকে নিয়ে সমানে গবেষণা করে চলেছেন বিপক্ষের কোচ, খেলোয়াড়রা। তাই মেসির কোনও কিছুই আর অজানা নেই কারও কাছে। ওর সব কিছুই এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। তাই একটা ম্যাচ খেলতে নামার আগেই মেসি কী কী করতে পারে, তা নিয়ে আলাদা ক্লাস হয়ে যাচ্ছে ফুটবলারদের। শনিবারের ম্যাচেই দেখছিলাম, মেসির পায়ে বল পড়লেই বিপক্ষের ডিফেন্স নিজেদের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে গুছিয়ে নিচ্ছে। ফলে মেসির আক্রমণের চেষ্টা কিছুক্ষণের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া বার্সেলোনার শেষ কয়েকটা ম্যাচে দেখছি, মেসিকে সাপোর্ট দেওয়ার মতো ফুটবলাররা ফর্মে নেই। ফলে টিমটাকে ভুগতে হচ্ছে। মেসিকে এখন নতুন কিছু করে দেখাতে হবে টিমকে বাঁচাতে গেলে।
এ দিন যখন গোলটার পিছনে ওর একক দক্ষতাটাই কাজে লাগল। ম্যাচে সেই প্রথম বারই এক মুহূর্তের জন্য অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল আর্জেন্তিনার তারকা। রিয়াল ডিফেন্সের সেই অসাবধানতাকেই কাজে লাগিয়ে কেল্লা ফতে। যে ভাবে দ্বিতীয়ার্ধে এক বার আলভেস আর একবার ভিয়াকে নিখুঁত বল বাড়াল, তার পর ওকে দুর্দান্ত গোল-মেকারও বলা যায়। এর পরেও কী করে বলি মেসি ফুরিয়ে যাচ্ছে? |