তিকিতাকার জবাব দিয়ে
ফের বার্সা-বধ রিয়ালের

রিয়াল মাদ্রিদ-২ (বেঞ্জিমা, র‌্যামোস)
বার্সেলোনা-১ (মেসি)
ত মঙ্গলবারের এল ক্লাসিকোর পরেই লিখেছিলাম, মেসিদের তিকিতাকা ফুটবল কিছুটা পড়ে ফেলা গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই শনিবারের ম্যাচ নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে। কারণ একটাই। বার্সার বিরুদ্ধে জেতার একটা অভ্যাস তৈরি হয়ে গিয়েছে কোয়েন্ত্রাও-র‌্যামোসদের। সেটা এত তাড়াতাড়ি সরে যাবে না। বের্নাবৌ-তে দেখলাম সেটাই হল। তবে বার্সেলোনা হারলেও ম্যাচটা ড্র রেখে ফিরতেই পারত। রেফারি মিগুয়েল পেরেজ একদম শেষ দিকে পেনাল্টি দিতে পারতেন বার্সার অনুকূলে। তবে একটা জিনিস দেখলাম, তিকিতাকা ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছে বার্সা।
কেন? বিগত কয়েক বছর ধরেই বার্সায় মেসি-ইনিয়েস্তাদের তিকিতাকা ফুটবলের উৎকর্ষ বোঝাতে বুয়েনস আইরেস থেকে ইয়োকোহামা সিটি বিশ্বের ফুটবল পণ্ডিতরা প্রচুর নিউজপ্রিন্ট খরচ করেছেন। কেউ কেউ তো মেসি এবং বার্সাকে ভিনগ্রহের ফুটবলার এবং দল হিসাবে চিহ্নিত করে ফেলেছিলেন। এটা বলার যথেষ্ট কারণও ছিল। এই কয়েক বছরে বিশ্বের কোনও ক্লাব বার্সেলোনার ফুটবলের ‘অ্যান্টিডোট’ খুঁজে পায়নি। এই যে হোসে মোরিনহো নিজেই নিজেকে ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান’-এর আখ্যা দিয়েছেন, উনিও তো প্রথম দিকে মেসি-জাভি-ইনিয়েস্তাদের আটকানোর ওষুধ বের করতে পারেননি। এ রকম কিছু আমাদের দেশের ফুটবলে হলে একেবারেই সময় নষ্ট না করে বলে দেওয়া হত, বার্সাকে আটকানোর দম নেই মোরিনহোর।
নিজের ফুটবল অভিজ্ঞতা থেকে জানি, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তুমি যত খেলবে, তত বেশি করে তাকে পড়ে নিতে পারবে। ঠিক এটাই হয়েছে মোরিনহোর ক্ষেত্রে। তিকিতাকা বন্ধ করতে নিজেদের অর্ধে ট্যাকল করার থিওরিটা মোরিনহোরই প্রখর ফুটবল মস্তিষ্ক থেকে বের হওয়া। যা এই মুহূর্তে ইউরোপের সব কোচের নোটবুকে ঠাঁই পেয়েছে।
গোল পেলেও জয় অধরাই মেসির। ছবি: রয়টার্স
শনিবার কিন্তু সেই রাস্তায় হাঁটেননি মোরিনহো। ৪-২-৩-১ ছকে রোনাল্ডোকে বাইরে রেখেই নেমেছিল রিয়াল। বল কাড়ো, পাস দাও, দৌড়োও, জায়গা নাও বোর্নাবৌতে এই জায়গা থেকে বেরিয়ে রিয়াল খেলাটা শুরুও করেছিল বেশ খোলা মনে। কারণ মোরিনহো জানেন সম্মান ছাড়া লা লিগার এই ম্যাচ থেকে পাওয়ার কিছুই নেই। তাই পদ্ধতি বদলে খেলা শুরু করেছিল কাকা-বেঞ্জিমারা। আক্রমণে যখন গেল, বার্সা রক্ষণে তখন কাকা, বেঞ্জিমা, মোরাতাদের সঙ্গে উঠে আসছিল পাঁচ জন। ডিফেন্স করার সময়ও তাই। চার ডিফেন্ডারের আগে দাঁড়িয়ে মেসি-ভিয়াদের আক্রমণ সামাল দিচ্ছিল কখনও মডরিচ। কখনও বা এসিয়েন। বার্সার বিরুদ্ধে ঠিক এর আগের ম্যাচটায় রক্ষণ থেকে প্রতি-আক্রমণভিত্তিক ফুটবল খেলেছিল মোরিনহোর দল। এ দিন কিন্তু তা করল না এক বারও। কাকা-রোনাল্ডো-র‌্যামোসদের শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল, আজ জিততেই নেমেছে রিয়াল। আসলে নেপথ্য কারণ একটাই। খুব ভাল ভাবে বার্সাকে পড়ে ফেলা।
এই গতিময় ফুটবলের ফসল বেঞ্জিমার গোল। মোরাতার বল লক্ষ্য করে ঠিক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল বেঞ্জিমা।
উলটো দিকে তিকিতাকা ছেড়ে বার্সা কিন্তু এ দিন তিন-চার টাচের পরই লং-বল খেলছিল। অবাক লাগছিল এটা ভেবেই যে বার্সার মতো দলও পরিস্থিতি বুঝে তিকিতাকা থেকে সরে এসেছে। মেসি গোলটা শোধও করল ওই লং বল থেকেই। তবে বলটা পেয়েই যে ভাবে র‌্যামোসকে ধোঁকা দিয়ে এলএম টেন গোলটা করে গেল, তা দেখলে কে বলবে তিন দিন ধরে জ্বরে কাবু ছিল এই ছেলেটাই।
মোরিনহো দেখলাম গোলটার পরেই মাঝমাঠকে আরও সঙ্ঘবদ্ধ করে ফেললেন। আর তার পরেই দ্বিতীয়ার্ধে খেদিরা আর রোনাল্ডোকে নামিয়ে আরও গতি বাড়িয়ে নিলেন। আর সেই গতিকে সামলাতে গিয়ে বার্সেলোনা সেই যে রক্ষণাত্মক খোলসে ঢুকে পড়ল, আর সেখান থেকে বেরোতে পারল না।
তবে একটা কথা মাথায় রাখতেই হবে। মেসিদের কিন্তু কোচ নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মোরিনহোর সৌজন্যে তিকিতাকার রহস্য অনেকটাই ভেদ হলেও মেসি জমানা শেষ বলে যাঁরা হইচই করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি কখনই একমত নই। কারণ মেসির প্রতিভার বিনাশ এত তাড়াতাড়ি হবে বলে মনে হয় না।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.