|
|
|
|
ত্রিপুরায় দলীয় কর্মীদের ক্ষোভের মুখে তরুণ গগৈ |
আশিস বসু • আগরতলা |
কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের নির্দেশে ‘নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস’-নিয়েরাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানাতে এসে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তরুণ গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন এক প্রতিনিধি দল। খোদ ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস অফিসেই কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হন এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক লুইজিনহো ফেলেইরো। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই ঘটনা দেখতে হয় এআইসিসি-র আর এক সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মনকে। উত্তেজিত দলীয় কর্মীদের হাত থেকে ফেলেইরোকে কোনও রকমে বের করে আনেন প্রদেশ সভাপতি। তারপরই নিরাপত্তা রক্ষী পরিবেষ্টিত হয়ে আসেন তরুণ গগৈ।
গণ্ডগোলের আঁচ আগে থেকেই হয়তো বুঝেছিলেন প্রদেশ নেতৃত্ব। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার আগেই কংগ্রেস ভবনের দোতলা থেকে ক্ষুব্ধ, উত্তেজিত, সন্ত্রাসের শিকার দলীয় কর্মীদের একতলায় পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রদেশ সভাপতি নিজেই এসে সাংবাদিকরা ছাড়া অন্যদের নীচে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। নিধার্রিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে শুরু হয় তরুণবাবুদের সাংবাদিক বৈঠক। বৈঠকের আগে থেকেই কংগ্রেস ভবন উপচে পড়ে ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার’ দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে। |
|
শনিবার আগরতলায় ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের
মুখে
অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক লুইজিনহো
কেলেইরো প্রমুখ। ছবি: উমাশঙ্কর রায়চৌধুরী |
তরুণ গগৈ জানান, ‘‘নির্বাচনোত্তর পর্যায়ে শাসক দলের কর্মীদের হাতে যে ভাবে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন, তাতে সনিয়া গাঁধী যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।’’ সনিয়া গাঁধীর নির্দেশেই রাজ্যপাল ডি ওয়াই পাটিলের সঙ্গে দেখা করেন এআইসিসির প্রতিনিধি দল। এ কথা জানিয়ে গগৈ বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে ত্রিপুরায় নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস বন্ধ করার উদ্দেশে উপযুক্ত ব্যবস্থার নেওয়ার অনুরোধ আমরা করেছি।’’তাঁর অভিযোগ, দলীয় কর্মীদের খুন, জখম ছাড়াও বাড়িঘর, দোকানপাটে আগুন লাগানো হচ্ছে। ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের ইজ্জত-সম্ভ্রম নষ্ট করা হচ্ছে। শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই কি রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ?’’ ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাকিল আহমেদও, ‘‘নির্বাচনের পরে সময়ে কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরায় লাল সন্ত্রাসের শিকার হন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকরা। শাসক দলের কর্মীরাই এতে ইন্ধন দেয়। দ্রুত মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নিতে বলার জন্য রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছি।’’ সাংবাদিক বৈঠকের পর নীচে নেমে দলের কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। মজলিশপুরের দীপঙ্কর দেবনাথ, খয়েরপুরের ঝন্টু দেবনাথ, আগরতলা পুরসভায় দলের কাউন্সিলর মিলন দাস, জয়নগরের শিবানী সেনগুপ্তরা এআইসিসির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিযোগ জানাতেই কংগ্রেস ভবনে এসেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা পারেননি। বিক্ষোভের কারণ মূলত সেটাই। দীপঙ্করের কথায়, ‘‘ভোটের ফল বেরোনর পর বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে শাসক দলের কর্মীরা। এখন প্রদেশ নেতৃত্বের কেউ ফোন ধরছেন না। বাড়ি ফিরতে পারছি না, পালিয়ে বেড়াচ্ছি গত দু’ দিন ধরে।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘সাব্রুম থেকে উদয়পুর প্রায় একই চিত্র।’ |
|
|
|
|
|