|
|
|
|
কিনারা হয়নি স্কুলে ধর্ষণেরও |
খুন দুই শিশু, দিল্লি সেই আতঙ্কের রাজধানী |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
নাবালিকাকে ধর্ষণের পর এ বার অপহরণ করে দুই শিশুকে খুন করা হল দিল্লিতে। মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের শত প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পরিস্থিতির যে কোনও বদল নেই, ফের প্রমাণ মিলল তার।
আজ দিল্লির প্রগতি ময়দান এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে মনসিজ ও ইয়াশবি নামে বছর ছয়েকের ভাই-বোনের মৃতদেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মানডাওলি এলাকার এক কনভেন্ট স্কুল চত্বর থেকেই দিন চারেক আগে অপহৃত হয়েছিল তারা। ঘটনার জেরে আজ উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। সুবিচারের দাবিতে, ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ দেখায় মানডাওলি থানার সামনে।
গত মঙ্গলবার আর পাঁচটা দিনের মতোই স্কুলে গিয়েছিল মনসিজ-ইয়াশবি। রোজই স্কুল থেকে ওই দুই ভাই-বোনকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতেন তাদের মা। তবে সে দিন দেরি হয়ে যায় তাঁর। রহস্যজনক ভাবে কেউ সেদিন তাঁদের বাড়ির দরজা আটকে দিয়েছিল। পুলিশের ধারণা, পরিকল্পনা মাফিকই মনসিজ ও ইয়াশবির মাকে তালাবন্দি করা হয়েছিল। মনসিজদের বাবা একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, ঘটনার দিন মনসিজ ও ইয়াশবিকে নিতে এসেছিল কোনও পরিচিত ব্যক্তি।
গত কয়েক দিনে অপহৃতদের পরিবারের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করেছিল দুষ্কৃতীরা। মুক্তিপণ বাবদ দাবি করা হয়েছিল ৩০ লক্ষ টাকা। কোথায় কখন সেই টাকা দিতে হবে এ কথাও জানিয়েছিল তারা। অপহৃতদের পরিবারের আশা ছিল দুষ্কৃতীদের খপ্পর থেকে শীঘ্রই ওই দুই শিশুকে উদ্ধার করে আনবে পুলিশ। তাই অপহরণকারীদের ধমকানিতে কান দেননি তাঁরা। ২৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে অপহরণকারীদের ফোন আসা বন্ধ হয়ে যায়। এর পর শনিবার, মনসিজ ও ইয়াশবিকে খুন করে তাদের মৃতদেহ প্রগতি ময়দান সংলগ্ন এলাকায় ফেলে রেখে যায় দুষ্কৃতীরা।
গত কালই প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলপুরী এলাকার একটি পুরসভা পরিচালিত স্কুল চত্বরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা। এখনও পর্যন্ত যার কোনও কিনারা করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মনসিজ ও ইয়াশবির মৃত্যুতে ফের প্রশ্নের মুখে রাজধানীর স্কুলগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মঙ্গলপুরীতে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে এখনও বিশেষ কোনও সূত্র হাতে আসেনি পুলিশের। ফলে, এখনও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ অব্যাহত। প্রায় ২০০ জনকে জেরা করেছে পুলিশ। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ধর্ষিতার দেওয়া বিবরণের ভিত্তিতে অপরাধীর একটি ছবি আঁকানোর চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। স্কুলের কোনও কর্মীর জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
ওই স্কুলের পাঁচ কর্মীকে সাসপেন্ড করেছেন উত্তর দিল্লির পুরসভা কমিশনার পি কে গুপ্ত। এই ঘটনা নিয়ে তদন্তের জন্য একটি পাঁচ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। উত্তর দিল্লির পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলিতে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু ব্যবস্থার সুপারিশ করতেও কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে তারা।
দিল্লি গণধর্ষণের পরে রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে। ফলে, দিল্লির আইন-শৃঙ্খলার দায় এড়াতে চেয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সরকার। পুলিশ তাঁর নিয়ন্ত্রণে না এলে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে তিনি কৈফিয়ত দিতে রাজি নন বলে স্পষ্টই জানিয়েছিলেন শীলা। এই দু’টি ঘটনার পরে সেই বিতর্ক ফের মাথাছাড়া দেবে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক শিবিরের। |
|
|
|
|
|