|
|
|
|
আপত্তি অসমের কথা ভেবে |
ছিটমহল হস্তান্তর নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির, অস্বস্তিতে কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঢাকা সফরের এক দিন আগে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির বিরোধিতা করল বিজেপি।
দিল্লিতে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকের শুরুতে বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ বলেন, “তিস্তা চুক্তির পাশাপাশি কেন্দ্র ছিটমহল হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে ভারতকে ১৩ হাজার একর জমি বাংলাদেশকে ছেড়ে দিতে হবে। আর বিনিময়ে পাবে মাত্র ৩ হাজার একর জমি। দশ হাজার একর জমির ক্ষতিপূরণ কী ভাবে হবে, সরকারের কাছ থেকে
তার জবাব মেলেনি।”
দেশের ঘরোয়া রাজনীতিতে বিরোধিতা থাকলেও বিদেশনীতির ক্ষেত্রে তা সাধারণ ভাবে ছায়া ফেলে না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে মনমোহন সরকারকে বারবারই বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে তিস্তা চুক্তিটি এখনও স্বাক্ষর করতে পারেনি দিল্লি। এ ক্ষেত্রে আপত্তির কারণ পশ্চিবঙ্গের স্বার্থ। দেশের প্রধান বিরোধী দল এ বার প্রশ্ন তুলল জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রসঙ্গ তুলে। যদিও তাদের মূল ভাবনাও বিশেষ একটি রাজ্যকে ঘিরে। রাজ্যটি হল অসম।
রাষ্ট্রপতির এই সফরে তিস্তা ও স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে বিজেপি-র আজকের অবস্থান কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলল সরকারকে।
এস এম কৃষ্ণ বিদেশমন্ত্রী থাকার সময় থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রশ্নে বিজেপি-কে পাশে পেতে চাইছে কেন্দ্র। কারণ, এই বিষয়টিতে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশের অনুমোদন প্রয়োজন। বিজেপি-র সাহায্য ছাড়া যা কিছুতেই সম্ভব নয়। কৃষ্ণের পর সলমন খুরশিদ যখন বিদেশমন্ত্রী হন, তখনও তিনি সাউথ ব্লকে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। পরে সলমন জানান, বিজেপি-কে নিয়ে খুব একটি সমস্যা হবে না। ওই চুক্তি শুধু সময়ের অপেক্ষা। সলমনের ইঙ্গিত ছিল, বিজেপি-র কাছ থেকে তাঁরা কিছুটা ইতিবাচক বার্তাই পেয়েছেন।
বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, স্থলসীমান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের চেয়েও সমস্যা বেশি অসমকে ঘিরে। অসমের বিজেপি নেতৃত্ব এই ছিটমহল হস্তান্তরের ঘোর বিরোধী। সে রাজ্যের অসম গণ পরিষদও এর বিরোধিতা করছে। ফলে চুক্তিটি নিয়ে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের ততটা আপত্তি না থাকলেও স্থানীয় রাজনৈতিক কারণে অসমের নেতারা এর বিরোধিতা করছেন। সংসদের অধিবেশন শুরুর আগে সংসদীয় মন্ত্রী কমলনাথের ডাকা সর্বদল বৈঠকেও বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি জানিয়ে দিয়েছিলেন, অসমের নেতাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে। বিজেপি সূত্রের মতে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই রাজনাথ আজ চুক্তিটির বিরোধিতা করলেন। ছিটমহল হস্তান্তরের সরাসরি বিরোধিতা না করলেও অসমের বিরোধের কথাটা মনে করিয়ে দিয়ে বন্দুকটা রেখে দিলেন সরকারের ঘাড়েই। |
|
|
|
|
|