তদন্তে দাবি সিআইডির
মুন্নার নির্দেশেই অস্ত্র মজুত পার্টি অফিসে
শুধু গোলমাল পাকানোই নয়, গার্ডেনরিচ কাণ্ডের দিন রামনগর লেনের তৃণমূনের সেন্ট্রাল পার্টি অফিসে তাঁর শাগরেদদের আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করার নির্দেশও দিয়েছিলেন বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্না। তদন্তে নেমে এখন এমনটাই দাবি করছে সিআইডি। তদন্তকারীরা বলছেন, অন্তত ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩০টি বোমা সেখানে রাখা হয়েছিল।
গোয়েন্দাদের বক্তব্য, ইবনে, সুহানের মতো শাগরেদদের বছর দুয়েক আগে থেকেই অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন মুন্না। তা নিয়ে মহল্লায় ঘুরেও বেড়াত তারা। ঘটনার দিন মুন্না তাদের সব রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি হয়ে আসার নির্দেশ দেন। হরিমোহন ঘোষ কলেজের সামনে ইকবালের দলের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা মোক্তারের দলের ঝামেলার পরে মহম্মদ ইবনে, শেখ সুহানের মতো হামলাকারীরা ধানখেতি মসজিদের উল্টো দিকে মুন্নার ওই পার্টি অফিসে ঢুকেছিল। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসেই গুলি চালাতে শুরু করে তাঁরা।
সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, “আমরা কিছু ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি। তাতে দেখা যাচ্ছে, ঘটনার দিন কিন্তু প্রথমেই দু’পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র বা বোমা নিয়ে জড়ো হয়নি। প্রথমে গালিগালাজ চলতে থাকে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হঠাৎই কংগ্রেসের তমাল দত্ত ও তৃণমূলের আনোয়ার নামে এক জনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। ফতেপুর ভিলেজ রোডের দিকে মুন্নার সঙ্গী চুড়ি ফিরোজ পর পর দু’টি বোমা ফাটিয়ে মোক্তারের দলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দু’পক্ষের মাঝখানে থাকা গার্ডেনরিচ থানার ওসি-র নেতৃত্বাধীন পুলিশের দলকে সে দিকে কৌশলে সরিয়ে নিয়ে যায়। শুরু হয় সংঘর্ষ।”
পুলিশেরই একটি সূত্রের খবর, তবরেজ আনসারি নামে তৃণমূলের এক জন হঠাৎই কংগ্রেসের দিকে থাকা এক যুবকের গালে থাপ্পড় কষায়। ওই দৃশ্য ভিডিও ফুটেজে না পেলেও গোয়েন্দারা কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে তা জেনেছেন। এর পরেই হাতাহাতি শুরু হয় এবং শেষমেশ গুলি চলে, বোমা পড়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, সে দিন সব মিলিয়ে সাত রাউন্ড গুলি চলেছিল এবং অন্তত সাতটি বোমা ছোড়া হয়। সিআইডি-র বক্তব্য, সুহান একাই সে দিন চার রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল। যার প্রথমটি লাগে তাহের হোসেন নামে মুন্নারই পক্ষে থাকা এক যুবকের হাতে, দ্বিতীয়টি তাপস চৌধুরীর বুকে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ গুলি ওই একই বন্দুক থেকে বেরোলেও কারও গায়ে লাগেনি বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
হঠাৎ গুলি চলার মতো পরিস্থিতি হল কেন? এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, “মুন্নাকে ধরলেই জানা যাবে। ইবনে, সুহানেরা জেরায় জানায়, মুন্নাই তাদের গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুন্নার ধারণা, মোক্তারের লোক-অস্ত্রবল দু’টোই সে দিন বেশি ছিল। তাই প্রথমেই গুলি করে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে চেয়েছিল। কিন্তু দলের তাহেরকে সুহান কেন গুলি করল, সেটাও মুন্নাকে ব্যাখ্যা করতে হবে।”
সিআইডি জেনেছে, ইবনে, সুহানদের অস্ত্র নিয়ে ঘোরার খবর নিয়মিত ভাবে পুলিশের কাছে আসত। তার পরও কেন সেই সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়নি? কলকাতা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, “কখন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সুহানেরা কোথায় যাচ্ছে, সবই জানতাম। কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য তখন কিছু করতে পারিনি। তাপস চৌধুরীর মৃত্যু সে পরিস্থিতি বদলেছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, রামনগর লেনের ওই পার্টি অফিসটি মুন্নার শ্যালকদের মালিকানাধীন দু’টি বহুতল দিয়ে আড়াল করা। গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পর থেকে মুন্নার দুই শ্যালক ফেরার। পলাতক ছেলে অনিলও। তবে সিআইডি-র খবর, মুন্না উত্তরপ্রদেশে পালিয়ে গেলেও তাঁর ছেলে অনিল আসানসোলের কাছে কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.