|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ১... |
|
কোথায় যেন মায়া থেকে গেল |
গৌতম ভদ্র |
ইতিহাসের জনজীবন ও অন্যান্য প্রবন্ধ, দীপেশ চক্রবর্তী। আনন্দ, ১৫০.০০ |
ইতিহাস একটা বিশেষ ‘বিদ্যা’, একটা বিশেষ ‘ডিসিপ্লিন’। অন্যান্য বিদ্যার মতোই কম-বেশি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পড়তে বুঝতে শিখতে হয়, প্রাতিষ্ঠানিক অভ্যাসে ও চর্চায় বিদ্যাটির নানা প্রকরণ ও কেতাও রপ্ত করতে হয়। ওই সব প্রকরণে অল্পবিস্তর দক্ষ হলেই ‘ইতিহাসবিদ’ বা ‘ঐতিহাসিক’ তকমাটি পাওয়া যায়, ঠিক যে ভাবে অনেকেই ‘ভূতত্ত্ববিদ’ বা ‘নৃতাত্ত্বিক’ বলে আখ্যাত হন। বিদ্যা-ব্যবসায়ে এই সবই সাদামাটা অভিজ্ঞতার কথা। যে কোনও পেশাদারি জ্ঞানকাণ্ডই এই বিশারদদের অসংখ্য খণ্ড খণ্ড বৈষয়িক কর্ম দিয়েই তৈরি। কিন্তু গোল বাঁধে, যখন ওই বিশেষ ‘বিদ্যা’ বিষয়টাকে নিয়েই সার্বিক ভাবে চিন্তা করতে হয়। যে বিদ্যায় যিনি বিশারদ, যে বিদ্যার প্রকরণে ও প্রয়োগের পেশাদারি অভ্যাসে যাঁর সিদ্ধি, সেই বিদ্যাকেই সার্বিক অর্থে ভাবা তো তার পক্ষে নিছক বিষয়-বিশেষের আলোচনা নয়। বরং সেখানে বিষয়ীকে, খোদ বিশারদকেও আত্মউপস্থাপনার একটি গত গাইতে হয়। তখন বিষয়ের সূত্রে বিষয়ী আর নিরপেক্ষ নন, বরং সাপেক্ষ। ওই সাপেক্ষতার নানা সূত্রে বিষয় ও বিষয়ীর একাধিক টানাপড়েন নিয়ে সচেতন না থাকলে যে কোনও বিদ্যার নিজস্ব নিত্য ও নৈমিত্তিক রূপ অন্যদের দেখানো যায় না, বিদ্যার স্বাতন্ত্র্যের ক্ষেত্রটিকেও দাগানো যায় না। এই তীক্ষ্ণ সচেতনতাই দীপেশের লেখা প্রবন্ধাবলির প্রধান গুণ।
বিষয়রূপে ইতিহাসচর্চায় দীপেশের প্রবেশ ভিন্ন ব্যবসা ও ব্যবহার থেকে, দীপেশ তা ভূমিকাতেই মনে করিয়ে দিয়েছেন। সেখানে দীক্ষা, শিক্ষা ও ইতিহাসবিদ্যা তথা ব্যবসা কথাগুলি তিনি ব্যবহার করেছেন। সেই কথনেই কলেজে পদার্থবিদ্যা পড়া, পরে আইআইএম-এ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি, এবং সেই আদাড়েই ঐতিহাসিক বরুণ দে’র পড়ানোর উৎসাহে ও তত্ত্বাবধানে ইতিহাস দীক্ষা ও চর্চার নানা অভিজ্ঞতা দীপেশ চিত্তাকর্ষক ‘অ্যানেকডোট’ বা কথাকণিকায় বলেছেন। বস্তুত এই সংকলনের প্রায় প্রত্যেকটি প্রবন্ধেই দলিল ও গ্রন্থভিত্তিক পড়াশোনার সঙ্গে দীপেশ কিছু না কিছু ‘কথাকণিকা’ মিশিয়েছেন। এগুলি অনেক সময়ই তাঁর নিজস্ব, একেবারে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, কয়েকটা পারিবারিক সূত্রে লভ্য, দুয়েকটা আবার বন্ধু বা সহকর্মীদের কাছে শোনা। এই মিশেলের কাজটা কেবল প্রাকরণিক নয়, বরং ভালমতোই তত্ত্বনির্ভর। ‘স্মৃতি ও বাঙালির কালচার’ বা ‘ইতিহাসের রকমফের’ নামে ভাবনাউদ্রেককারী প্রবন্ধে তাঁর বক্তব্যই হল গণপরিসরে আমাদের দেশজ অতীতচিন্তা অনেকটাই বংশস্মৃতিনির্ভর বা মহান কীর্তিকথা, পারিবারিক ও কুলকীর্তি-পঞ্জিতে সেই সব স্মৃতি কথাকণিকার আকারে জীবন্ত থাকে, গণপরিসরের অতীতচর্চার প্রয়োজনে তা ভেসে ওঠে, আবৃত্ত ও পরিবর্ধিত হয়। এইগুলি প্রাতিষ্ঠানিক আর্কাইভস-নির্ভর কেঠো ইতিহাসবিজ্ঞানে ‘রস’ সৃষ্টি করে। বিষয়ীর সাপেক্ষতা ও আসক্তি কথাকণিকা ও ঐতিহাসিক গালগল্পে মূর্ত হয়। পক্ষান্তরে, কালিক দূরত্ববোধ ও যে কোনও রাগবিরাগ থেকে ঝাড়া হাত-পা নিরপেক্ষতাই উনিশ শতকীয় দলিল নির্ভর অতীতচর্চার ভিত্তি, পেশাদারি অর্থে ইতিহাস ‘বিদ্যা’টির জাত লক্ষণ। এই দুই বিপরীত মনোভাবী চর্চার অন্বয় ও ব্যতিরেক সম্পর্ক গণপরিসরের ইতিহাসচিন্তার মধ্যে কি সমবায়ী সম্ভাবনা বা সংঘাতের শঙ্কার তৈরি করে, সেই সব সমস্যার সূত্র অন্বেষণ করেন দীপেশ।
অতীতচিন্তা নানা রকমের, প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষ দলিলভিত্তিক সত্যসন্ধানী ইতিহাসচর্চা একটি বিশেষ অতীতচিন্তা, উনিশ শতকের শেষে ও বিশ শতকের প্রারম্ভে এ দেশে জাঁকিয়ে বসেছিল। তাই সংকলনের দুটো বড় প্রবন্ধই এই পর্ব ঘিরে, আলোচনার কেন্দ্রে এ দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাসবিদ্যার পুরোধাপুরুষ যদুনাথ সরকার আর তাঁর ইতিহাসচর্চা ও জীবনচর্যা। নথি, রচনা ও পত্রসংকলন থেকে অনুপুঙ্ক্ষ তথ্যের ভিত্তিতে ও যদুনাথের ইতিহাস রচনার সুবাদে জনপরিসরে ইতিহাসবিদ্যার ভূমিকা নিয়ে একটি চিন্তাসমৃদ্ধ বিবৃতি দীপেশ তৈরি করেছেন। দেখিয়েছেন কী ভাবে যদুনাথের ইতিহাসচর্চার প্রভাতী মুহূর্তগুলি জনপরিসরে স্বদেশি ইতিহাস লেখার উৎসাহ ও আবেগের পর্ব, যখন স্বদেশের ইতিহাস লেখা, পড়া আর শোনানোই হয়ে উঠল জাতীয় কর্তব্য। এই পরিমণ্ডলেই পেশাদারি ইতিহাসচর্চার প্রকরণে দুরুস্ত হয়ে রাগদ্বেষহীন বিষয়ীরূপে ঐতিহাসিক সত্য খুঁজে বার করা ও বাংলা ও ইংরেজিতে জনপরিসরে তা হাজির করাই ইংরেজি সাহিত্যের তরুণ অধ্যাপক যদুনাথ সরকারের ব্রত হয়ে ওঠে। পেশাদারি প্রকরণ ছাড়া ঐতিহাসিক সত্য জানা সম্ভব নয়, নিজের পেশার প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে অকুতোভয়ে নিরপেক্ষ ভাবে সত্য প্রকাশ ও প্রচার করাই ঐতিহাসিকের চরিত্রলক্ষণ। দক্ষতা অর্জন করতে হবে, চরিত্র তৈরি করতে হবে। পেশাদারি নৈপুণ্য ও চরিত্রবলে বলীয়ান ঐতিহাসিকের রচনাই জনগণকে শিক্ষিত ও উদ্বুদ্ধ করতে পারে। ভারতে গণরাজনীতির প্রসারে ও নানা প্রতিষ্ঠানের উত্থানে এই সহজ সম্পর্কের সুখস্বপ্ন বেশি দিন টেঁকেনি। পুনের মরাঠি জাতিগর্বে গর্বিত এক দঙ্গল পেশাদার ঐতিহাসিক যদুনাথের স্থিতধী ইতিহাসচর্চার ভিত্তিকে নানা ভাবে টান দেন, ইলাহাবাদের ফারসি বিশারদ পণ্ডিতরাও ছেড়ে কথা বলেননি। গণরাজনীতির দলাদলি পেশাদারি চর্চার অঙ্গনকেও আচ্ছন্ন করেছিল। জাতপাতের রাজনীতি, নানা কৌম স্বার্থের মধ্যে একক নিখাদ ঐতিহাসিক সত্য খোঁজার পেশাদারি নিরঙ্কুশ দাবিকেই দীর্ণ করে তুলল, ওই সত্যের জিগির তুলে নানা ইতিহাসকার স্বীকৃত ঐতিহাসিক প্রকরণের যাথার্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেন, ‘ইতিহাস-উৎসাহ’ বা ‘ইতিহাস ক্ষুধা’, দীপেশের ভাষায় ‘ইতিহাস যুদ্ধে’ পরিণত হল। ‘স্যার যদুনাথের সান্নিধ্যে, গ্রন্থাগারে’ প্রবন্ধে ক্লান্ত ঐতিহাসিকের চিত্র দীপেশ তুলে ধরেছেন, অথচ শ্রান্তি নিয়েও পেশার দায়বহনে ও বিষয়ের প্রতি দায়িত্বপালনে সেই ঐতিহাসিকের কোনও দ্বিধা ছিল না। পেশাদার ঐতিহাসিক নিজেই যেন এক মানবিক ট্র্যাজিক চরিত্রে রূপান্তরিত হচ্ছেন। সমাজবিজ্ঞানের আওতা ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত চিঠির বয়ানে ধরা-পড়া গত শতকের এক ঐতিহাসিককে আর্কাইভস পাঠপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই শতকের গবেষক স্পর্শ করেন। স্পর্শকাতরতার মধ্য দিয়ে ইতিহাসবিদ্যা মেদুর হয়ে উঠল, সব বিশ্লেষণের শেষে কোথায় যেন মায়া থেকে গেল।
জনপরিসরে ইতিহাস নামে বিদ্যার অখণ্ডরূপ চৈতন্যটি কী ভাবে নানা খণ্ড কর্মকাণ্ডের আকার পায় সেই অনুসন্ধানে প্রমুখ এক ঐতিহাসিকের সাধনার বিশ্লেষণই যথেষ্ট নয়। তাই মূল পরিক্রমার বাইরে একাধিক প্রবন্ধে দীপেশ নানা আশপাশ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। যেমন, স্বমেহন বলে অভ্যাসটির ইতিহাস কী ভাবে লিখতে পারি, অতি ব্যক্তিগত গোপন কাহিনির ইতিহাস কী ভাবে গণপরিসরে ব্যক্ত হয়, অন্তত পাশ্চাত্যে, তারই মনোজ্ঞ পর্যালোচনা উপস্থাপিত করেছেন। উদ্দেশ্য পরিষ্কার। পাশ্চাত্যে পেশাদারি ইতিহাস-চর্চার নানা গূঢ় প্রশ্নকে নৈপুণ্যের সঙ্গে বিচার করে এ দেশের বিধি, নীতি ও প্রথা কোন তত্ত্বের বিবর্তনসূত্রে ধরা যায় আর আমাদের ইতিহাসের নিজস্বতাকে নির্ণয় করা যায়, সেই চিন্তা এই ইতিহাসভাবনার অঙ্গ। শেষ প্রবন্ধেও এই ভাবনার টান। তাঁর সাম্প্রতিক আগ্রহের বিষয় ‘পৃথিবীর উষ্ণতাবৃদ্ধি ও মানুষের ইতিহাস’, কারণ পরিবেশ বিতর্ক আমাদের সমাজে গ্রাহ্য ইতিহাসের সংজ্ঞা ও মান পাল্টে দিচ্ছে। জনগ্রাহ্য ইতিহাসে সভ্যতায় প্রগতির আগমার্কা চিহ্ন শিল্পবিপ্লবের সূচনা। অথচ ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস ও পরিবেশবাদীদের গবেষণা থেকে ক্রমশ জানতে পারছি যে পরিবেশ বিপর্যয়ের সূচনা ওই পর্ব থেকেই, ওই কালক্ষণেই প্রজাতি হিসেবে আধুনিক মানুষের বিপন্নতা শুরু। ফলে মানুষের ইতিহাসে প্রাকৃতিক ইতিহাস ঢুকে পড়লে আলোচনার ধরতাই ও ক্রমটাই পাল্টে যায়। বিশ্বায়নপ্রসূত বিশ্লেষণী কাঠামোয় আর পুরো ছবি ধরা পড়ে না, প্রজাতি হিসেবে মানুষের বাঁচা না বাঁচার সম্ভাবনা গণপরিসরে ইতিহাসবিদ্যা আলোচনার মাত্রাকেই আমূল বদলে দিতে পারে।
দীপেশের ইতিহাসভাবনার গুরুত্ব হল প্রশ্ন উসকে দেওয়ায়, সমাধান বাতলানোতে নয়। প্রবন্ধগুলি পড়তে পড়তে মনে হয় যে খোঁজার তাগিদেই উত্তরের রাশ টানা হয়েছে, উত্তর উহ্য থেকেছে। এ দেশে ইতিহাসের জনজীবনের ইতিবৃত্ত তো ব্যাপকার্থে আধুনিকতার আগমন ও অগ্রগমনের কাহিনির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আধুনিক চিন্তায় পৌরাণিক সময় ও ঐতিহাসিক সময়ের স্পষ্ট উচ্চারিত বিভাজন তো একেবারে উনিশ শতকীয় যুক্তি শিক্ষার ফল, ভারতীয় জনজীবনের অনেক অধিকার ও দাবিই গণতন্ত্র ও নাগরিক সমাজের শতকব্যাপী অসম বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এই জানাশোনা ইতিহাসের পাশে এও খেয়ালে আসে যে গণপরিসরে মহাভারতীয় মহাকালিক চিন্তা অধুনার নীতিবোধ ও ঐতিহ্যকে জারিত করে, দৈনন্দিনতার মধ্যে চারিয়ে থাকে। আবার নানা অভ্যাস ও বাজারি বিনোদনের মাধ্যমে ওই অধুনাই ঐতিহ্যকে বেছে নেয়, রক্ষণশীলতা বা প্রগতিবাদের নামে বিপর্যস্ত করে। পাশ্চাত্য ইতিহাসচর্চার ধারার ভেতর থেকে উদ্ভাবিত প্রশ্নাবলির ছকে ভারতের মতো দলিত দেশের অভিজ্ঞতা বিচার সৃষ্টিশীল জটিলতা তৈরি করে। প্রথমত, চিন্তাবর্গের ভাষান্তর ও বোধান্তরের সমস্যা। দেশজ অভিজ্ঞতায় ইতিহাস, পুরাণ, স্মৃতি এক পর্যায়ের শব্দ, ব্যবহারমাফিক অল্পবিস্তর পার্থক্য ঘটে অর্থে। গণপরিসরে ও পেশাদারি অঙ্গনে এই পার্থক্য বিচার ও গতায়াতের সূত্র ঠাওর করতে না পারলে ইতিহাসের জনজীবনে তর্কভাষার পরিসর স্পষ্ট হবে না।
আলোচনায় দীপেশ ‘রস’ শব্দটির অকুণ্ঠ প্রয়োগ করেছেন। ভারতীয় নন্দন ও ধর্মতত্ত্বে রস বড় ভারী শব্দ, আনন্দবর্ধন ও অভিনবগুপ্ত, রূপ ও শ্রীজীব গোস্বামীর কৃতিতে শব্দটি নানা অনুষঙ্গে ঋদ্ধ। কী ভাবেই বা এর ব্যঞ্জনার্থ উনিশ শতকীয় সাহিত্যিক বিচারে প্রতিসরিত হয়েছিল, আজকের বৈচারিক অভ্যাসেই বা শব্দটি কী বোঝায়? বার বার ইংরেজি থেকে বাংলায়, পেশাদারি জগৎ থেকে জনজীবনের অঙ্গনে, এক ভাবনার ভাষা ও বর্গ থেকে অন্য ভাষা ও ভাবনার চিন্তার বর্গে দীপেশের স্বচ্ছন্দ যাতায়াত। এই বর্গ-রূপান্তরে ভাবনার কোনও কোনও মাত্রা কি হারিয়ে যায়? নতুবা, এমন কি হওয়া উচিত যে ‘ধর্ম’, ‘দণ্ড’ বা ‘বিপর্যাস’, ‘উপপ্লবের’ মতো বর্গগুলি ঐতিহাসিক আলোচনায় নিজস্ব প্রতিস্পর্ধিতায় দাঁড়িয়ে থাকবে, ভাষান্তরের হাতছানি ও প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাহ্য করবে। দ্বিতীয়ত ইতিহাস তো মানবিক বিদ্যা, আধুনিকতার দায়ে বিদ্যাটি সমাজবিজ্ঞানে রূপান্তরিত, যুক্তির দায় তার পরে; বৈজ্ঞানিক যুক্তির সার্বত্রিক রূপ আছে। ওই সার্বত্রিকতার দিকেই যে কোনও বিশেষ ইতিহাসের যাত্রাপথ নির্দেশিত থাকে, পৌঁছনো বা না পৌঁছনো স্বতন্ত্র কথা। কিন্তু ইতিহাসের দৈশিক চরিত্রও থাকে, সেটা সংস্কৃতিতে নিজস্ব, দেশ দিয়ে বিশেষিত। সার্বত্রিক না দৈশিক, ইতিহাসচর্চা কোন দিকে ঝুঁকে থাকবে, ইতিহাসের জনজীবনের চরিত্র নির্ধারণে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস আলোচনায় বর্তমানমনস্কতার দায় অনেকটাই এই ঝুঁকে থাকার রাজনীতির ওপর নির্ভরশীল।
এই সব সমস্যার উত্তর খোঁজা বা দেওয়ার দায় একা দীপেশের নয়। গণপরিসরে দায়বোধকে চাগিয়ে তোলাই প্রবুদ্ধ ইতিহাস রচনার উদ্দেশ্য, অন্তত যদুনাথ সরকারের সেই বক্তব্যই ছিল। তাঁর স্মৃতিকে মনে রেখেই দীপেশকে ধন্যবাদ জানাই। |
|
|
|
|
|