নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
লাগামছাড়া দূষণই হলদিয়ায় নতুন শিল্পের বাধা। তাই সেখানে শিল্প স্থাপনে লাগাম টেনেছে কেন্দ্র। শুধু হলদিয়া নয়, বার্নপুর, হাওড়ার লিলুয়া ও বামনগাছির মতো এলাকায় নতুন শিল্প স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টও। শুক্রবার তারা জানায়, সরকারের এই নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাদের কিছু করার নেই। মামলাটি করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানিয়ে দিয়েছিল, হলদিয়া, বার্নপুর, হাওড়ার লিলুয়া ও বামনগাছিতে নতুন করে শিল্প স্থাপন করা উচিত নয়। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রও রাজ্যকে জানায়, ওই সব অঞ্চলে নতুন শিল্প গড়া যাবে না। সাংসদ শুভেন্দুবাবু কেন্দ্রের এই নির্দেশ প্রত্যাহার করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানান। হাইকোর্ট এ দিন শুভেন্দুবাবুর দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে। কোর্টের বক্তব্য, এটি কেন্দ্রের নীতিগত সিদ্ধান্ত। সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে আবেদনকারী মনে করলে কেন্দ্রীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারেন।
মাত্রাছাড়া দূষণের কারণেই ওই সব অঞ্চলে আর শিল্প বাড়ানো চলবে না কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কেন্দ্রের অভিমত। পর্ষদ ২০১০ সালে রাজ্যকে জানায়, হলদিয়া-সহ তিনটি শিল্প এলাকায় দূষণ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। অবিলম্বে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেই সঙ্গে ওই সব এলাকায় শিল্প স্থাপন বন্ধ করে দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে পর্ষদের সঙ্গে চিঠি চালাচালি শুরু হয় রাজ্য সরকারের। তার পরেই রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদল হয়। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান হন শুভেন্দুবাবু। হলদিয়া-সহ ওই এলাকায় শিল্প স্থাপনে এই প্রতিবন্ধকতা কাটাতে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।
আবেদনকারীর তরফে এ দিন দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টির উপরে জোর দেওয়া হয়। বলা হয়, দূষণ কমানোর জন্য ইতিমধ্যেই হলদিয়ায় প্রচুর গাছ লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন শিল্প সংস্থাও নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ছাড়া দূষণ প্রতিরোধে অন্যান্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় হলদিয়ায় শিল্প স্থাপনে আগ্রহী বিভিন্ন সংস্থা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। নিষেধ প্রত্যাহার না-করলে সেখানে আর শিল্প হবে না। শিল্প প্রসারের স্বার্থেই ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া দরকার। ডিভিশন বেঞ্চ মামলা খারিজ করে জানিয়ে দেয়, এই বিষয়ে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করতে পারে না। |