বাবা ও মাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াগঞ্জ থানার বাঘন গ্রাম পঞ্চায়েতের কেওটাল এলাকায়। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম অমল মণ্ডল (৬১) ও ছবি মণ্ডল (৫৫)। বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদের বাড়ির রান্নাঘর থেকে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে। সেখান থেকেই নিহতদের ছেলেকে ধরে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম অজিতেশ মণ্ডল। পুলিশ রক্তমাখা একটি ক্রিকেট স্ট্যাম্প উদ্ধার করেছে।
পুলিশের দাবি, জেরায় ওই যুবক তার বাবা ও মাকে পিটিয়ে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। ধৃতকে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক অঞ্জনকুমার সেনগুপ্ত ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার জানান, অভিযুক্তের হয়ে কোনও আইনজীবী আদালতে না দাঁড়ানোয় বিচারক অজিতেশকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী এই দিন বলেন, “মানসিক ভারসাম্যহীনতার জেরেই অজিতেশ তার বাবা ও মাকে উইকেট দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে। তাই তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার দরকার পড়েনি।” প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় এক বছর আগে স্থানীয় চাঁদবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অবসর নেন অমলবাবু। স্ত্রী ছবিদেবী গৃহবধূ ছিলেন। তাঁদের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে অজিতেশ সবথেকে ছোট। বড়ছেলে পেশায় গাড়ি চালক। আট বছর আগে মেয়ে ঝুম্পাদেবীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অমলবাবু ও ছবিদেবী অজিতেশকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। বছর পঁচিশের অজিতেশ সাত বছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করতে না পেরে পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। এরপরই সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। সারাদিন সে বাড়িতেই থাকত। তার চিকিৎসাও চলছিল। গত রাতে রান্নাঘরে বাবা-মাকে স্ট্যাম্প দিয়ে সে মাথায় বাড়ি মারে। বাধা দিতে গিয়ে দুই জন হাতেও চোট পান। এর পর অজিতেশ রান্নাঘরের দরজা ভিতর থেকে আটকে দিয়ে গ্যাস ওভেন রাখার কংক্রিটের স্ল্যাবে ওপর ঘুমিয়ে পড়ে। এদিন সকালে বাসিন্দারা অমলবাবুর বাইরের ঘরের দরজা খোলা দেখেন। ঘরের টিভি ও ফ্যান চলছিল। কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে অমিতেশবাবু সেখানে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও এমন ঘটনা ঘটাবে তা বাবতেই পারছি না। শেষ পর্যন্ত ভাইয়ের বিরুদ্ধে বাবা- মাকে খুনের অভিযোগ জানিয়েছি।” স্থানীয় বাসিন্দা শুভ চৌধুরী ও প্রণব দেবশর্মা জানান, অজিতেশ এর আগেও বাবা মায়ের সঙ্গে গোলমাল করত। একাধিক বার বাসিন্দারা গিয়ে তাকে শান্ত করত। |