অবৈধ নির্মাণ নিয়ে ব্যবস্থা না-নেওয়া, আর্থিক লেনদেন-সহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পরে বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ বদল করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, সেবক রোড, চানাপট্টি-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকার অবৈধ নির্মাণের অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ের দিনই। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে বিরোধী বামেরা ওই প্রশ্ন তুলে সরব হন। এমনকী, এ দিন অবৈধভাবে বেশ কিছু বিল্ডিং-এর নকশা অনুমোদন করা হচ্ছে বলে অভিযোগে প্রতিবাদ করেন বামেরা। তাতে সামিল হন কংগ্রেস-তৃণমূলের কাউন্সিলরদের একাংশও। ৭ বাড়ির নকশার অনুমোদন আটকে যায়। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত দাবি করেন, “শুধু তাঁদের মেয়র পারিষদদের সিদ্ধান্তে সেগুলি পাশ করানো হচ্ছিল এমন নয়। তাতে ‘বিল্ডিং কমিটি’র অনুমোদন রয়েছে। বহুতল নির্মাণের অনুমোদনের ক্ষেত্রে যে কমিটিতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার-সহ প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি রয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতে সে সব অনুমোদিত হয়েছে।” বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বিল্ডিং কমিটির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
যেখানে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে এত বিকর্ত চলছে তার মধ্যেও কেন এ ভাবে অবৈধ কাজ বোর্ড মিটিংয়ে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জেরে অনুমোদন করানোর চেষ্টা হচ্ছে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম মতো রাস্তা চওড়া না-থাকালেও এ দিন ২, ৪, ২৪, ৪১, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন বহুতলের নকশা অনুমোদন করানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক বলেন, “নিয়ম মতো বহুতলের সামনে ২০০ বা ৩০০ মিটার পর্যন্ত রাস্তা যতটা চওড়া থাকা উচিত দেখা যাচ্ছে কোনও অংশ কম চওড়া রয়েছে। সেটাই বাস্তুকাররা ধরেন। তাই বিষয়টি বিবেচনা করা যায় কি না তা ভেবে দেখা দরকার।”
শিলিগুড়ির শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে আদর্শ মহাবিদ্যালয় ও লাগোয়া ‘ল্যান্ডমার্ক’, চানাপট্টি এলাকার একটি বাড়ি, বর্ধমান রোড এবং সেবক রোডের একাধিক অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হবে পুরসভা বারবার শহরবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মেয়র আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের বিনা নকশায় ভবন তৈরির ব্যাপারে আপত্তি করেছেন। এতদসত্ত্বেও প্রভাবশালী নেতাদের একাংশ কেন বেআইনি নির্মাতাদের পাশে দাঁড়াতে মরিয়া তা নিয়েই রহস্য দানা বাঁধছে। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সঞ্জয়বাবু বলেন, “লেনদেনের অভিযোগ ঠিক নয়। ২৬৭টি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। সব ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কিন্তু, কবে কাজ হবে সেই প্রশ্নের সদুত্তর মেয়র কিংবা মেয়র পারিষদ, দিতে পারেননি। |