কলকাতা ছাড়তেই বাংলা শিবিরের স্যাঁতসেতে ভাবখানা কেটে গেল! আর তাতেই গত বারের চ্যাম্পিয়নরা বিজয় হাজারে ট্রফির সেমিফাইনালে।
সামি আহমেদ, বীরপ্রতাপ সিংহ, লক্ষ্মীরতন শুক্লরা ঝাঁপিয়ে পড়তেই রবিন উত্থাপ্পা, মণীশ পাণ্ডে, স্টুয়ার্ট বিনিরা উধাও। গোটা কর্নাটক গুটিয়ে গেল ১২৭ রানে।
জবাবে দুই ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা ও শ্রীবৎস গোস্বামীর জুটি একাই ১২৮। আর তাতে ১০ উইকেটে জিতে বাংলা এ বার দিল্লির সামনে। যার মানে লড়াইটা কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের টিমের সঙ্গে বাংলার।
বাংলার কাছে কর্নাটকের দশ উইকেটে হারটা অঘটন কি না, তা নিয়ে তর্ক থাকলেও অসমের কাছে সদ্য রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন মুম্বইয়ের হার যে বড় অঘটন, সেটা তর্কাতীত। এ দিন নিজেরা ১৭৮ রানে শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অসম পালটা মুম্বইকে ১৫১ রানে গুটিয়ে দিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিল।
লক্ষ্মী-মনোজরা আবার বিশাখাপত্তনমগামী বিমানে যে একরাশ উদ্বেগ নিয়ে উঠেছিলেন দলের ব্যাটিং নিয়ে, সেই উদ্বেগ বৃহস্পতিবার অনেকটাই কেটে গেল ঋদ্ধি, শ্রীবৎসরা গোড়াতেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসায়। সন্ধ্যায় টিম হোটেল থেকে ফোনে লক্ষ্মীরতন বললেন, “চিন্তা তো ছিলই। তবে জানতাম, ব্যাটসম্যানরা এই দুঃসময় থেকে বেরিয়ে আসবে।” মনোজ তিওয়ারি তো আগাগোড়া একই কথা বলে আসছেন। এ দিন জয়ের পর টুইট করেছেন, “দারুণ জয় পেলাম। কারও নাম বলব না। সবার জয়। এখনও বেশ কিছু পথ বাকি।”
জয়ের ভিতটা অবশ্য বাংলার পেসারদের তৈরি। বিজয় হাজারের গত কয়েকটা ম্যাচেই যা করে আসছেন তাঁরা। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লক্ষ্মী। সিদ্ধান্তটা যে সঠিক, তার প্রমাণ শুরুতেই দিলেন সামি, বীরপ্রতাপরা। |
কর্নাটক ওপেনার লোকেশ রাহুল ও তিন নম্বরে নামা সতীশকে ১৩ রানের মধ্যে ফিরিয়ে দিয়ে। অপর ওপেনার, জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলের মারকুটে ব্যাটসম্যান রবিন উত্থাপা উইকেটে সাড়ে ন’ওভার টিকে ছিলেন বটে। কিন্তু সেই ৫১ মিনিটে মাত্র ১৩ বল খেলেন তিনি। প্রায় ছটফট করতে করতে যখন বীরপ্রতাপের বলে উইকেটকিপার ঋদ্ধির গ্লাভসে বন্দি হন, তখন উত্থাপার সংগ্রহ মাত্র আট। মণীশ পাণ্ডে ৩৪ বলে ২৮ করে শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বীরের প্রতাপে তাঁকেও ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়। এক সময় কর্নাটক ছিল ৫৭-৬। কর্নাটক স্কোরবোর্ডে দু’অঙ্কের রান মাত্র চার ব্যাটসম্যানের। যাঁদের তিন জনই লোয়ার অর্ডারের। ধস নামানো শুরু করেছিলেন সামি (৩-৩২)। সেই কাজটাকে এগিয়ে নিয়ে যান বীরপ্রতাপ (৩-৪০)। তাঁর ব্যাটন পরে হাতে নেন লক্ষ্মী (২-২০)। সঞ্জীব, ইরেশরাও খালি হাতে ফেরেননি। প্রায় আঠারো ওভার বাকি থাকতেই বিপক্ষ ইনিংস শেষ।
পোর্ট ট্রাস্ট ডায়মন্ড জুবিলি স্টেডিয়ামে বাংলা ড্রেসিংরুম তখন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। ব্যাট হাতে নেমে ২৯তম ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যান ঋদ্ধিমান (৯৩ বলে ৫২) ও শ্রীবৎস (৭৯ বলে ৭০)। যার ফলে বাকি ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা হল না। ছিটেফোঁটা চিন্তা বলতে এ টুকুই।
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কর্নাটক ১২৭ (মণীশ ২৮, সামি ৩-৩২, বীরপ্রতাপ ৩-৪০, লক্ষ্মী ২-২০)
বাংলা ১২৮-০ (শ্রীবৎস ৭০ নঃআঃ, ঋদ্ধিমান ৫২ নঃআঃ) |