গ্যাসের লাইনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু হল হিমঘরের দুই কর্মীর। অসুস্থ হয়ে পড়েন আরও দু’জন।
সহকর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ধনেখালির পারাম্বুয়ার নামে ওই হিমঘরে বিক্ষোভ দেখান সহকর্মীরা। সামিল হন গ্রামবাসীরাও। পরে ধনেখালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আসে দমকলও। এদিন মহাকরণে টাস্কফোর্সের বৈঠক ছিল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানানো হয়। তিনি হিমঘর মালিকদের পাশে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়ে প্রশাসনকে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্যে সব হিমঘর বন্ধ। প্রতিটি হিমঘরেই মেরামতির কাজ চলছে। এখানেও কাজ চলছিল। তাতে নিযুক্ত ছিলেন সেখানকারই চার কর্মী। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি পাইপ লাইনে মেরামতির সময় সেটি থেকে হঠাৎ গ্যাস লিক করতে থাকে। |
কিন্তু লাইনটি চালু থাকায় পাইপ ফেটে দু’জন মারাত্মক জখম হন। শম্ভুনাথ সিংহ (৪৭) নামে এক কর্মীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। অন্য জনকে ধনেখালি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মারা যান তিনি। পুলিশ জানায় মৃত ওই কর্মীর নাম শুকদেব হাজারি (৫৭)। তিনি ওই হিমঘরে মেশিন বিভাগের কর্মী ছিলেন। পারাম্বুরা-সাহাবাজার পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও ছিলেন তিনি। মৃত অন্য জনের বাড়ি বিহারে। পুলিশ তাঁর বাড়িতে খবর পাঠিয়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা চলছে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে।
দমকল সূত্রের খবর, ওই হিমঘরে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। তা নিয়ে হিমঘর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেবে তারা। হিমঘরের দুই মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী। তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ দিকে, ঘটনা জানাজানি হতেই বিষাক্ত গ্যাসের আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। পুলিশ-দমকল আসার পরে বিক্ষোভ ছড়ায়। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করা হয়েছে মৃতদের পরিবারের তরফে। শুকদেববাবুর দাদা অনন্ত বলেন, “হিমঘর কর্তৃপক্ষ আমাদের ঘটনার কথা জানাননি। গ্রামের লোকেদের মুখে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি ভাই মারা গিয়েছে। হিমঘর মালিকের সাথে ভাইয়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না। তাই আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।” |