ওয়াকিবহাল সব পক্ষ, তবু নড়ে বসতে আঠারো মাস
অন্যত্র আগুন লাগলেও ভয়ে দিন গোনে বাজার
মরি-কাণ্ডের পরে প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গিয়েছিল মাস খানেক। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ছবিটা বদলায়নি এতটুকু। সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে আরামবাগ পুরসভার বড় বাজারগুলি। মানা হচ্ছে না অগ্নিবিধি। উন্নতি হয়নি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থারও।
অধিকাংশ সুপার মার্কেট শহরের মূল রাস্তার উপরে। ভিতরের ছবিটা প্রায় একই রকম। ঘিঞ্জি দোকান। অপরিসর রাস্তা। মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে বিদ্যুতের তার। এবং আবর্জনা। সর্বত্রই রান্নাও চলে জোরকদমে।
শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা আরামবাগ বাসস্ট্যান্ডের গায়েই বিজয় মোদক সুপার মার্কেট। তিনতলা ওই বাজারে ১৫০টির বেশি দোকান এবং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দোতলায় দু’টি হোটেল চলে। বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর দোকানে স্টোভ জ্বালিয়ে রান্না চলে। কোথাও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র নেই। নেই সর্বত্র জলের সংযোগও। সিঁড়ি এবং বিভিন্ন কোণে জমে থাকে দোকানের আবর্জনার স্তূপ। আগুন লাগলে দমকলের পরিষেবা সর্বত্র পৌঁছবে না। নীচে পাশেই বাসস্ট্যান্ড থাকায় দমকলের ইঞ্জিনের যাতায়াতেও সমস্যা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে মিটার-ঘরটি।
একই অবস্থা বি কে রায় সুপার মার্কেট, নজরুল মাকের্ট, সুকান্ত মার্কেট বা বসন্তপুরের মিনি মার্কেটেরও। হাসপাতাল রোডের উপরে পুরসভা মার্কেটেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। মিটার-ঘর গুদাম ঘরের চেহারায়। সদরঘাটের কাছে ব্যক্তি-মালিকানাধীন প্রাচীন সব্জি-বাজারটি জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। কয়েক বার আগুন লাগলেও পাল্টায়নি পরিস্থিতি। ব্যবসায়ীদের বিশেষ হেলদোল নেই।
মিটার-ঘরের হাল। ছবি: মোহন দাস।
রোজ কার্যত জীবন হাতে নিয়ে এই সব বাজারগুলিতে কেনাবেচায় যোগ দেন কয়েক লক্ষ ক্রেতা-বিক্রেতা। যাঁদের অনেকেই শিয়ালদহের সূর্য সেন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে চমকে উঠেছেন। প্রথমেই মনে এসেছে, যদি এখানেও এ রকম কিছু হয়? কিন্তু ঘুম ভাঙেনি প্রশাসনের। অভিযোগ, সব জেনেও নির্বিকার দর্শকের ভূমিকায় পুরসভা ও প্রশাসন।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আমরি-কাণ্ডের পরে মহকুমা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন মার্কেটের যথাযথ ট্রেড লাইসেন্স, অগ্নিবিধি মানার শংসাপত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। সে সব না থাকলে ওই সব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা না নিয়ে তাঁর কী করা উচিত তা সুপারিশ করা হবে। কিন্তু মাস খানেক সেই কাজ চলার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
দমকলের আরামবাগের ওসি সুনীতরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “মহকুমাশাসক নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সম্ভাব্য বিপজ্জনক জায়গাগুলি পরিদর্শন করতে পারছি না।” মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা পেলে অভিযান হবে। তবে, পুরসভা সচেষ্ট হলে ভাল।” পুরপ্রধান গোপাল কচ বলেন, “সুপার মাকের্টগুলির ভিতর রান্না বন্ধ করা হবে। বিভিন্ন মাকের্ট ঘুরে দেখে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কোথাও বড় দুর্ঘটনা ঘটলেই এক বার করে নানা আশ্বাস মেলে প্রশাসনের কর্তাদের। তার পরে যে-কে-সেই। এ বার তার ব্যত্যয় হবে কি?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.