|
|
|
|
দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দুই রাজ্যে জয় শাসকদেরই |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
আগে কখনও মেঘালয়ে এত বেশি আসন পায়নি কংগ্রেস। কিন্তু তাও ২টি আসনের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অধরাই রইল তাদের। সরকার গড়তে হলে দলে টানতে হবে আরও দুই বিধায়ককে। ভোটের আগে অস্ত্র-অর্থ বিতর্কে মুখ পুড়লেও, নাগাল্যান্ডে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন নেফিয়ু রিও। তাঁর দল নাগা পিপল্স ফ্রন্ট (এনপিএফ) কংগ্রেসের সমস্ত প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে তাদের একেবারে কোণঠাসা করে দিয়েছে।
মেঘালয়ে নবম বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইউডিপি (৮)। এনপিপি ও এনসিপি পেয়েছে ২টি করে আসন। নির্দল বিধায়কের সংখ্যা ১২। গত বার কংগ্রেস ২৫, ইউডিপি ১৪ ও এনসিপি ১১টি আসন পেয়েছিল। ইন্দ্রপতন বলতে খাসি পাহাড় তথা শিলংয়ে বাঙালির প্রতিনিধি মানস চৌধুরীর পরাজয়। সেই সঙ্গে গারো পাহাড়ে এত দিনের অবিসংবাদী নেতা পূর্ণ সাংমার মুছে যাওয়া।
দু’বার নির্দল হিসাবে জেতা মানসবাবুর জয়ের পথে প্রধান দুটি বাধা ছিল বিধানসভা কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাস ও বাঙালির ক্ষোভ। এ বার আর নিজের দুর্গ মাওপ্রেন নয়, দক্ষিণ শিলং থেকে মানসবাবু কংগ্রেসের হয়ে ভোটে দাঁড়ান। লড়াই ছিল লাবানের বর্তমান, জনপ্রিয় বিধায়ক এনসিপির সানবর সুলাইয়ের সঙ্গে। ভোটের আগে বাঙালিদের বড় অংশই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। অভিযোগ ছিল বাঙালির জন্য সে ভাবে কাজ করেননি তিনি। সেই ক্ষোভই হয়তো কাল হল। কংগ্রেসের হেভিওয়েট মন্ত্রী আবু তাহের মণ্ডল অবশ্য গারো পাহাড়ের ফুলবাড়িতে বাঙালির জয়ের ধারা বজায় রেখেছেন। আরও ছয় বাঙালির সঙ্গে লড়াই করে, শেষ অবধি তিনি ৩৯৯টি ভোটে জিতেছেন।
গারো পাহাড়ের লড়াই ছিল সাংমা বনাম সাংমার। ‘রথ’ বানিয়ে গারো পাহাড়ে বিস্তর ধুলো ওড়ালেও, শেষ অবধি ভূপতিত গারো পাহাড়ের রাজা পূর্ণ সাংমা। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা এনপিপি দল গড়ে লড়তে নামা পূর্ণর লড়াইয়ের জন্য সে ভাবে জমি রাখেননি। গারো পাহাড়ে, মুকুল, তাঁর স্ত্রী ডিকাঞ্চি মারাক ও ভাই জেনিথ জিতেছেন। ভূপতিত পূর্ণপুত্র তথা মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কনরাড। অন্য ছেলে জেম্স অবশ্য জিতেছেন।
২৫ জন মহিলা প্রার্থীর মধ্যে কংগ্রেস সভাপতি দেবোরা মারাক, ডিকাঞ্চি ও আমপারিন লিংডো জেতায় মেঘালয় এ বার তিন জন মহিলা বিধায়ক পাচ্ছে।
গত পাঁচ বছরে, মেঘালয়ে তিন জন মুখ্যমন্ত্রী, চারটি জোটের সরকার গড়েছেন। মুকুলের আশা, পরের পাঁচ বছর রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা অন্তত থাকবে না।
নাগাল্যান্ডে, গত বার এনপিএফ ২৬টি ও কংগ্রেস ২৪টি আসন পেয়েছিল। এ বার, বহু বিতর্কের ধাক্কা সামলেও, এনপিএফ ৬০টির মধ্যে ৩৭টি আসন দখল করেছে। ভোটের ঠিক আগে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ও ন’টি রাইফেল-সহ গ্রেফতার হওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইমকং এল ইমচেন কারিডং কেন্দ্রে সহজেই জিতেছেন। হেলিকপ্টারে কোটি টাকাসহ ধরা পড়া এনপিএফ প্রার্থী নেমলি ফোমও লংলেং থেকে জিতেছেন। তবে নারীহীন হবে নাগাল্যান্ডের দ্বাদশ বিধানসভা।
গত পাঁচ বছরে, দুই রাজ্যেই, শাসক দলের বিরুদ্ধে নাগাড়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয় দেখিয়ে দিল, পরিবর্তন অপেক্ষা চেনা শত্রুর সঙ্গেই ঘর করা নিরাপদ মনে করছেন আম-আদমি। |
|
|
|
|
|