বাজারে অগ্নিরোধে ঘড়িবাবু হয়ে রক্ষী জাগবেন সারা রাত
খুড়োর কলের কথা শুনেছিল বাঙালি। এ বার শুনল ঘড়ির কলের কথা। সৌজন্য, কলকাতা পুরসভা।
পুর-বাজারে অগ্নি-নিরাপত্তা মজবুত করতে আস্তিন থেকে মোক্ষম ঘড়ি-অস্ত্র বার করছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছে, বাজারের দেওয়ালে-দেওয়ালে বসবে নানান দেওয়াল ঘড়ি। সময় দেখতে নয়, দম দেওয়ার জন্য। এক বার দম দিলে কোনওটা চলবে পাঁচ মিনিট, কারও মেয়াদ সাত মিনিট, কারও বা দশ মিনিট। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকলে ঘড়ি আর চলবেই না। রক্ষীদের কাজ, সব ঘড়ি সব সময়ে চালু রাখা। সারা রাত ঘুরে-ঘুরে সব ঘড়িতে দম দেওয়া। অর্থাৎ রাতভর সতর্ক থাকতে হবে। কারও চোখ লেগে গিয়েছিল কি না, বন্ধ ঘড়ি দেখেই তা ধরা পড়বে!
আর এই ঘড়িরূপী নজরদারের ঠেলায় পড়ে রাত পাহারা জোরদার হতে বাধ্য। এমন অভিনব চিন্তা মাথায় এসেছে যার, তিনি বলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ। যাঁর কথায়, “রক্ষীরা সব সময়ে সতর্ক থাকলেই আগুন এড়ানো যাবে।” তবে উদ্ভাবনের কৃতিত্ব তারকবাবু একা নিতে চাননি। রক্ষীদের সজাগ রাখতে বিভিন্ন সংস্থায় এমন বন্দোবস্ত চালু আছে বলে তাঁর দাবি।
এ দিকে সূর্য সেন স্ট্রিট বাজারের আগুনে আহতদের মধ্যে শঙ্কর দেবনাথ ও দীনেশ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে বৃহস্পতিবার। কালাচাঁদ পুরকায়েতের অবস্থা একই। এ দিন দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের উল্টো দিকে দেবেন্দ্র মল্লিক স্ট্রিটের এক বাড়িতে মজুত দাহ্য রাসায়নিকে আগুন লাগে। পাঁচটি ইঞ্জিন যায়। দুপুরে লিন্ডসে স্ট্রিটের এক রেস্তোরাঁতেও আগুন লেগে গিয়েছিল। দু’টো ইঞ্জিন আধ ঘণ্টায় পরিস্থিতি সামলায়।
সূর্য সেন স্ট্রিটের ঘটনাটি নিয়ে মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন পুর-কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরে পুর-কর্তারা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। স্থির হয়, সব বাজারে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ওয়্যারিং-সহ সুরক্ষার খুঁটিনাটি দেখা হবে। এ দিন পুর-অধিবেশনেও বিরোধীরা সরব হনে। সিল করা বাজার-চত্বরের বাইরে ছিল ব্যবসায়ীদের ভিড়। পিছনের চাতালে মৃতদের স্মৃতির উদ্দেশে গড়ে উঠেছে বেদি। গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “তদন্তের ভার নিয়েছি। অভিযুক্তেরা কেউ গ্রেফতার হয়নি।”
তবে কোনও বড় অগ্নিকাণ্ডের পর দিন যা হয়, এ দিন সেই প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বা বিরোধী-রাজনীতির বাইরে মেয়র পারিষদের ‘ঘড়ি-ভাবনায়’ নিঃসন্দেহে স্বতন্ত্রতার ছাপ। এমনকী, প্রশাসনিক জরুরি বৈঠকেও প্রসঙ্গটি নিয়ে জল্পনা হয়েছে। “সেকেলে জমিদারবাড়ির ঘড়িবাবুরা দিনভর নানা কিসিমের ঘড়িতে দম দিতেন। রাতভর দম দেওয়ার হিড়িকে বাজার পাহারাটা মাথায় উঠবে না তো,” মন্তব্য এক পুর-আধিকারিকের।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.