টানাটানি, তা-ও প্রতিরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ালেন অর্থমন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভিআইপিদের জন্য হেলিকপ্টার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে নতুন সমরাস্ত্র বা প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি বাড়তি সতর্ক হচ্ছেন। ফলে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কেনার মতো যে সব চুক্তি পাকা হওয়ার পথে, সেগুলি নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও আজ বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। এই মন্ত্রকে বরাদ্দ ৫.৩ শতাংশ বাড়িয়ে প্রায় ২ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যার মধ্যে নতুন সমরাস্ত্র-সরঞ্জাম ও পরিকাঠামোর জন্য খরচ হবে ৮৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সেই সঙ্গে তাঁর প্রতিশ্রুতি, প্রয়োজন হলে আরও বেশি টাকা দেওয়া হবে। |
|
বাজেট পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার। ছবি: রয়টার্স |
টানাটানির সংসারেও চিদম্বরমের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অ্যান্টনি। তাঁর বক্তব্য, “প্রতিকূল আর্থিক পরিস্থিতিতেও অর্থমন্ত্রী প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে কার্পণ্য করেননি।” মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, বাজেট থেকে এ কথাই স্পষ্ট যে যুদ্ধবিমান কেনার মতো চুক্তিগুলি পাকা করার পরিকল্পনা নিচ্ছে মনমোহন সরকার।
কিন্তু অ্যান্টনি নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বিষয়ে অতিরিক্ত স্পর্শকাতর। তাই কপ্টার-দুর্নীতির তদন্তের মধ্যেই সেই পরিকল্পনা কতখানি বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তবে উত্তর-পূর্ব ভারতের চিন সীমান্ত বরাবর পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা খরচ হবে বলেই আশা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের মতো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকেও গুরুত্ব দিয়েছেন চিদম্বরম। অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার আগে চিদম্বরম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে ছিলেন। কাজেই ওই মন্ত্রকে কোথায় কী প্রয়োজন, তা তাঁর অজানা নয়। বিশেষ করে রাজ্যের পুলিশ ও বিশেষ জঙ্গি-দমন বাহিনীর জন্য দরাজ হাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছেন তিনি। পুলিশ বাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য ১,৮৪৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যা গত বাজেটের তুলনায় ৩০০ কোটি টাকা বেশি। রাজ্যগুলিকে নিরাপত্তা বিষয়ক খরচের জন্যও প্রায় ৭৯০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এই খাতে গত বারের থেকে ১১ শতাংশ বাড়িয়েছেন তিনি। একই ভাবে মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতে বিশেষ পরিকাঠামো তৈরির জন্য অনুদানও ২০ কোটি বাড়িয়ে ৭৪ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মাওবাদী দমনে সাহায্য বাবদ বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। জঙ্গি-দমন বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরিতে বরাদ্দ হয়েছে ২০ কোটিরও বেশি টাকা। মাওবাদী দমনের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের জন্যও ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে বাজেটে। থানাগুলির নিরাপত্তা মজবুত করার জন্য বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। সিআরপিএফের আবাসন তৈরিতেও বরাদ্দ বাড়িয়েছেন তিনি। |
|
বাজেটের দিনে লোকসভায় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের পরিবার। ছবি: পি টি আই |
ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স গ্রিড, সিসিটিএনএস (ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক সিস্টেম)-এর মতো নিজের মস্তিষ্কপ্রসূত প্রকল্পগুলির জন্য দরাজ হাতে অর্থ বরাদ্দ করেছেন চিদম্বরম। তবে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) নিয়ে এখনও বিতর্ক অব্যহত থাকায় এর জন্য পৃথক ভাবে অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। |
|