দাম গড় ভিত্তিতে
দেশি-বিদেশি কয়লা মিশিয়ে বিদ্যুৎ
সংস্থাকে জোগানের পক্ষেই সওয়াল
বিদ্যুৎ শিল্পের চাহিদা মেটাতে গেলে আপাতত বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করা ছাড়া বিকল্প কোনও উপায় নেই বলে বাজেট ভাষণে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পালানিয়প্পন চিদম্বরম।
আর সে ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আনা দামি কয়লার সঙ্গে সস্তার দেশি কয়লা মিশিয়ে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে তা বিক্রি করার পক্ষেই অর্থমন্ত্রী সওয়াল করেছেন।
তবে চিদম্বরম এও মনে করেন, অদূর ভবিষ্যতে আমদানি করা কয়লার উপরে নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশের উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে কোনও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কোল ইন্ডিয়া তা করতে পারে বলে বৃহস্পতিবার বাজেট পেশ করতে গিয়ে মত প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। চিদম্বরমের এই পরামর্শ দেশের কয়লা শিল্পের অগ্রগতি এবং সংস্কারের পথ সুগম করবে বলে সহমত প্রকাশ করেছে কোল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া। বেশ কিছু দিন ধরেই কেন্দ্রীয় সরকার দেশি-বিদেশি কয়লা মিশিয়েই বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে বিক্রি করার কথা ভাবছে। এ ক্ষেত্রে ওই দুই ধরনের কয়লার যে গড় দাম হবে তাই বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির কাছ থেকে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল। কয়লা মন্ত্রক যাকে ‘প্রাইস পুলিং’ বলছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশার মতো বেশ কয়েকটি রাজ্য প্রথম থেকেই কেন্দ্রের এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। রাজ্যগুলির বক্তব্য, সস্তার দেশি কয়লার সঙ্গে দামি বিদেশি কয়লা মিশিয়ে বিক্রি করার সিদ্ধান্তে কয়লার দাম বাড়তে বাধ্য। সে ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ আরও বাড়বে। আর সেই বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের উপরে। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক-সহ খোদ কোল ইন্ডিয়ার পরিচালন পর্ষদের সদস্যদের মধ্যেও কেউ কেউ কেন্দ্রীয় সরকারের এই পরিকল্পনার পরোক্ষ ভাবে বিরোধিতা করেছে। কিন্তু বাজেট ভাষণে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে এ দিন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার কয়লার ‘প্রাইস পুলিং’-এর দিকেই হাঁটতে চলেছে।
চিদম্বরম এ দিন জানিয়েছেন, নতুন-পুরনো সব বিদ্যুৎ সংস্থার চাহিদা মেটাতে গেলে এই মুহূর্তে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করা ছাড়া বিকল্প কোনও উপায় নেই। যৌথ উদ্যোগে কোল ইন্ডিয়ার উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে কয়লা মন্ত্রকই সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিদ্যুৎ শিল্পমহল জানাচ্ছে, দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী যোজনায় (২০১২-’১৭) সারা দেশে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য কম-বেশি ৭৪ কোটি টনের মতো কয়লার প্রয়োজন হবে। কিন্তু যা দেখা যাচ্ছে, ওই সময়ের মধ্যে খুব বেশি হলে ৫২ কোটি টনের বেশি কয়লা পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ ঘাটতি থেকে যাবে ২২ কোটি টনের কিছু বেশি। এ ক্ষেত্রে অনেকেই কোল ইন্ডিয়ার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। বিদ্যুৎ-কর্তাদের বক্তব্য, চাহিদা মতো কোল ইন্ডিয়া কয়লা উৎপাদন বাড়াতে পারছে না বলেই বিদেশি কয়লার উপরে নির্ভরশীলতা বাড়ানো হচ্ছে। যদিও কোল ইন্ডিয়া বারবার দাবি করে আসছে, কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র না-পাওয়ার জন্য তারা বহু জায়গায় নতুন খনন কার্য শুরু করতে পারছে না। অর্থমন্ত্রী নিজেও এ দিন বলেছেন, গত বছর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১০ কোটি টন কয়লা আমদানি করতে হয়েছে। চাহিদা মেটাতে গেলে আগামী তিন বছরের মধ্যে কমপক্ষে ১৮ কোটি টন কয়লা আমদানি করতে হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.