|
|
|
|
ভারসাম্য দেখে সন্তুষ্ট শিল্পমহল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
১০০ কোটি টাকার বেশি নতুন লগ্নিতে বিশেষ আর্থিক সুবিধার (ইনভেস্টমেন্ট অ্যালাওয়েন্স) দাওয়াই। সেই সঙ্গে পরিকাঠামোয় গুরুত্ব এবং আর্থিক ঘাটতিতে রাশ টানার ব্যবস্থায় আস্থা ফিরবে লগ্নিকারীদের সার্বিক ভাবে এমনটাই আশা করছে শিল্পমহল। বণিকসভাগুলির মতে, বাধ্যবাধকতার মধ্যেও এটা ভারসাম্যের বাজেট।
শিল্প মহল লক্ষ করেছে, চিদম্বরম একটি ব্যাপারে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের থেকে ভিন্ন পথে হেঁটেছেন। কর ফাঁকি প্রতিরোধ আইন (জিএএআর) বা ভোডাফোন-চুক্তির উপর কর বসানোর মতো কোনও ঘোষণা করেননি, যাতে বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে ভুল বার্তা যায়। বরং চিদম্বরম প্রথমেই বলে দিয়েছেন, স্বচ্ছ-স্থিতিশীল এবং বন্ধুমনোভাবাপন্ন কর ব্যবস্থা তৈরির পথেই চলবেন তিনি।
নতুন লগ্নি টানতে চিদম্বরম এ দিন জানান, আগামী অর্থবর্ষে ১০০ কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি নতুন লগ্নির (কারখানা ও যন্ত্রপাতিতে) ক্ষেত্রে ১৫% ‘ইনভেস্টমেন্ট অ্যালাওয়েন্স’ মিলবে। তাঁদের সুপারিশপত্রে এই প্রস্তাব ছিল বলে দাবি করে সিআইআই-এর প্রেসিডেন্ট আদি গোদরেজ-এর আশা, কর্পোরেট জগতকে নতুন লগ্নির পথে সাহস জোগাবে এই সিদ্ধান্ত। তাঁর সঙ্গে সহমত হলেও বেঙ্গল চেম্বারের কর্তা কল্লোল দত্ত ও ফিকি-র পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা গৌরব স্বরূপ অবশ্য মনে করছেন, ১০০ কোটি টাকার কিছুটা কম লগ্নিতে আর্থিক সুবিধা দিলে আরও বেশি শিল্প সংস্থা, বিশেষ করে ছোট-মাঝারি শিল্প উপকৃত হত। ছোট-মাঝারি শিল্প তাই হতাশ হয়ে জানিয়েছে, এই বাজেটে তাদের তেমন প্রাপ্তি কিছু নেই।
সে ভাবে শিল্প সহায়ক বড়সড় কোনও নীতি বা সংস্কারের পদক্ষেপ নেই এ বারের বাজেটে। তবুও শিল্প-কর্তারা মনে করছেন, আর্থিক বৃদ্ধিই গুরুত্ব পেয়েছে বাজেটে। ফিকি-র প্রেসিডেন্ট নয়নালাল কিদোয়াই এ দিন বলেন, “আর্থিক বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির উপর জোর দেওয়া হয়েছে।” অ্যাসোচ্যামের কর্তা ডি এস রাওয়াত বলেন, “অর্থমন্ত্রী সাহসী ও বাস্তববাদী বাজেট পেশ করেছেন।” লেনদেনের ঘাটতি মেটাতে বিদেশি লগ্নি টানার উপর জোর দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, “তিনটে রাস্তাই আছে। বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ, বিদেশি সংস্থাগুলির বিনিয়োগ এবং বিদেশ থেকে ঋণ। তাই কষ্ট করে বারবার বলতে হয়, বিদেশি লগ্নিকে স্বাগত জানাব, না পায়ে ঠেলব তা নিয়ে ভাবার কোনও জায়গা নেই। বিদেশি লগ্নি বাধ্যতামূলক। আমাদের অর্থনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতেই বিদেশি লগ্নি টানতে হবে।”
পরিকাঠামো ক্ষেত্রে লগ্নি টানতে করমুক্ত বন্ড-সহ বিশেষ তহবিল গড়ার একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে বাজেটে। চিদম্বরম জানিয়েছেন, ছ’মাসের মধ্যেই দেশ জুড়ে তিন হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির বরাত দেওয়া হবে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মায়ানমারে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশে দুটি বন্দর গড়ার কথা বলেছেন। ইন্ডিয়ান চেম্বারের কর্তা রাজীব মুন্দ্রা ও সুমিত মজুমদারের মতে, এই সব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গতি পাবে আর্থিক বৃদ্ধির হার।
বেঙ্গল চেম্বারের অন্যতম কর্তা অম্বরীশ দাশগুপ্ত, ভারত চেম্বারের কর্তা অশোক আইকত কিংবা মার্চেন্ট চেম্বারের কর্তা দীপক জালানের মতে, প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ভারসাম্য রক্ষার প্রয়াস নিয়েছেন চিদম্বরম। তবে পরিকল্পনা খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দের জন্য অর্থ সংস্থানের বিষয়টিও জরুরি মনে করছেন অম্বরীশবাবু। ব্যবসায়ীদের জন্য অবশ্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই বলে ক্ষুব্ধ ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন। |
|
|
|
|
|