|
|
|
|
আয়করে অল্প খুশি মধ্যবিত্ত, বোঝা ধনীদের |
শঙ্খদীপ দাস • নয়াদিল্লি |
ভোটের বছর। তবু নিছক জনমোহিনী রাজনীতির পথে না-হেঁটে কর প্রস্তাবে সংযম ও স্থিতাবস্থাই বজায় রাখতে চাইলেন পি চিদম্বরম। ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ও হারে কোনও পরিবর্তন করলেন না। তবে মধ্যবিত্তদের একটা বড় অংশকে খুশি করতে ২ হাজার টাকা ‘ট্যাক্স ক্রেডিট’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। গৃহঋণের ক্ষেত্রেও কিছুটা সুরাহা দিয়ে করের বোঝা কমালেন তাঁদের। পাশাপাশি, বছরে ১ কোটি টাকা করযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে বসালেন ১০ শতাংশ সারচার্জ।
অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর দাওয়াই হিসেবে শিল্পমহলের একাংশ আয়করে ছাড় চেয়েছিল। যুক্তি ছিল, আয়কর কমলে সাধারণ লোকের হাতে বাড়তি টাকা আসবে। যেটা বাজারে খরচ করলে পণ্যের চাহিদা বাড়বে, উৎপাদন বাড়বে। লাভ হবে অর্থনীতির। কিন্তু চিদম্বরম বলেন, “সঙ্কটাপন্ন অর্থনীতিতে করের হার বাড়িয়ে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের সুযোগ যেমন কম, তেমনই কর ছাড়ের সুযোগও কম। কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা সামান্য বাড়ালেও লক্ষাধিক করদাতা করের আওতা থেকে বেরিয়ে যাবেন। তাতে কর ব্যবস্থার ভিতই নড়বড়ে হয়ে যাবে।”
এ কথা বলেও অবশ্য ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা কর ছাড়ের (ট্যাক্স ক্রেডিট) কথা ঘোষণা করেছেন চিদম্বরম। যে ছাড়ের সুযোগ পাবেন ১ কোটি ৮০ লক্ষ করদাতা। রাজস্ব আদায় কমবে ৩৬০০ কোটি টাকা।
গৃহঋণের সুদের উপরেও কর ছাড় বাড়িয়ে মধ্যবিত্তের মন কাড়ার চেষ্টা করেছেন চিদম্বরম। বর্তমানে গৃহঋণে বছরে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদের জন্য আয়করে ছাড় পাওয়া যায়। চিদম্বরম তা বাড়িয়ে আড়াই লক্ষ টাকা করেছেন। যদিও প্রথম বার বাড়ি কিনছেন এমন কেউ ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাবেন। তবে স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম বাবদ ছাড় বা টিউশন ফি-র মতো ক্ষেত্রে কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমার পরিবর্তন হয়নি।
অন্য দিকে, ধনকুবেরদের ওপর আরও বেশি হারে কর চাপানোর দাবি মেনে অর্থমন্ত্রী আজ বলেছেন, “যখন অর্থের প্রয়োজন, তখন অপেক্ষাকৃত সচ্ছলরা ছাড়া আর কাদের কাছে যেতে পারি।” চিদম্বরম জানান, বছরে এক কোটি টাকার বেশি করযোগ্য আয় করেন এমন লোকের সংখ্যা গোটা দেশে মাত্র ৪২,৮০০। তাঁদের দেয় করের উপর আরও ১০% সারচার্জ বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই সারচার্জ বিত্তবানদের বিরক্তির কারণ হলে, বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য অনেক গোপন বোঝা রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাঁদের মতে, প্রত্যক্ষ করে প্রতীকী ছাড় দিয়ে পরোক্ষ করে মধ্যবিত্তদের কাছ থেকে অনেক বেশি কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন অর্থমন্ত্রী। যেমন দু’হাজার টাকার বেশি দামের মোবাইলের উপর উৎপাদন শুল্ক ১% থেকে বাড়িয়ে ৬% করার প্রস্তাব রেখেছেন চিদম্বরম।
পাশপাশি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যে সব রেস্তোরাঁয় মদ পরিবেশন করা হয়, এত দিন সেখানেই পরিষেবা কর ধার্য করা হত। কিন্তু চিদম্বরম আজ জানান, এখন থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সব রেস্তোরাঁতেই পরিষেবা কর ধার্য হবে। |
|
|
|
|
|