এক খাতের টাকা অন্য খাতে নয়, কড়া অর্থমন্ত্রী
ঠোর আর্থিক শৃঙ্খলা। ২০১৩-১৪ আর্থিক বর্ষের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের অন্যতম জোরের জায়গা এটাই।
রাজকোষ ঘাটতি সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও দফতরকে অর্থমন্ত্রীর কড়া বার্তা যার যেমন কাজ করার ক্ষমতা সেই অনুযায়ী বরাদ্দ তারা পাবে। কিন্তু স্বচ্ছ আর্থিক ব্যবস্থাপনা, তীক্ষ্ম নজরদারি এবং টাকা ঠিক সময়ে খরচ করার দায়িত্ব সেই মন্ত্রক বা দফতরের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ কোনও ভাবেই করা যাবে না। বরাদ্দ খরচের ব্যাপারে কঠোর শৃঙ্খলা আমদানি করতে চাইছেন তিনি।
অর্থের যথাযথ খরচের লক্ষ্যে চিদম্বরম যে কতটা কঠোর, তার আরও একটি উদাহরণ ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যে কোনও ভাবেই ধার শোধ করতে খরচ করা হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন চিদম্বরম। ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড-এ এই টাকা জমা রেখে তা রেল বা অন্য স্থায়ী মূলধনী প্রকল্পে খরচ করাই সরকারের লক্ষ্য হবে। অর্থাৎ একটি স্থায়ী সম্পদ বিলগ্নির অর্থ দিয়ে গড়ে তোলা হবে আরও অনেক স্থায়ী সম্পদ।
বাজেট পেশের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর ভূমিকা যে স্রেফ অর্থ বিতরণ নয় তা স্পষ্ট করে দিয়ে চিদম্বরমের বক্তব্য, “আমার কাজ একটি আর্থিক আবহ তৈরি করা, পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য প্রয়োজনীয় স্থায়ী সম্পদ গড়ে তোলা।” গত বারের বাজেট যিনি তৈরি করেছিলেন, নাম না করে সেই পূর্বসূরি সম্পর্কে চিদম্বরমের কটাক্ষ, “২০১২-১৩ আর্থিক বছরের বাজেটের ক্ষেত্রে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বরাদ্দের কথা ভাবা হয়েছিল। পাশাপাশি পরিকল্পনা বহির্ভূত বরাদ্দের ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মনোভাব নেওয়া হয়েছিল।” বছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন চিদম্বরম। সেই সময় বিপুল রাজকোষ ঘাটতি মেটাতে যুক্তিযুক্ত ব্যয়ের দিকে নজর দেওয়া ছাড়া তাঁর আর কোনও উপায় ছিল না চিদম্বরম তাঁর বাজেট ভাষণে স্পষ্ট করে দিয়েছেন সে কথা। মেনে নিয়েছেন, “কিছু তেতো ওষুধ খেতে হয়েছিল।”
চিদম্বরমের দাবী, মোট বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ তিনি পরিকল্পনা বাবদ বরাদ্দ করেছেন। টাকার অঙ্কে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লক্ষ ২১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত সংশোধিত বাজেটে সেই বরাদ্দ কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষ ২৯ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা। পাশাপাশি চলতি আর্থিক বছরে বেড়ে গিয়েছে পরিকল্পনা-বহির্ভূত বরাদ্দের পরিমাণ। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। বছর শেষে সংশোধিত বাজেটে এই পরিমাণ ৩১ হাজার কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লক্ষ ১ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা। চিদম্বরম পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতের বরাদ্দের লক্ষ্য ধার্য করেছেন ১১ লক্ষ ৯ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। এই খাতে ব্যয় কমানোটা রাজকোষের ঘাটতি পূরণের জন্যও জরুরি, যা আবার চিদম্বরমের অন্যতম পাখির চোখ।
তার জন্য উপায়? হাত দিতে হবে সংসদীয় গণতন্ত্রের সব থেকে স্পর্শকাতর দিকটিতে, ভর্তুকিতে। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে ভর্তুকি বাবদ খরচ ধরা হয়েছিল এক লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বছর শেষে সংশোধিত হয়ে সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৫৭ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ‘রাজনীতিক’ চিদম্বরম বেশি উচ্চাভিলাষী হননি। ভর্তুকি বাবদ খরচ তিনি ধরেছেন ২ লক্ষ ৩১ হাজার কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকা কম। ডিজেল ও এলপিজি নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত সরকারকে ভর্তুকি কমাতে সাহায্য করবে। কেরোসিনেও ভর্তুকি কমতে পারে বলে অর্থমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.