|
|
|
|
লগ্নি টানতে অর্থমন্ত্রীর বাজি পরিকাঠামো উন্নয়ন |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরাতে ইউপিএ সরকার গত কয়েক বছরে বার বারই বলেছে, লগ্নি টানতে পরিকাঠামোর উন্নতি হওয়া দরকার। এ বছরের বাজেটে সে বক্তব্যটাই ফের স্পষ্ট করে দিলেন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম। জানালেন, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি বাড়াতে লগ্নির প্রয়োজন। আর লগ্নি টানতে চাই উন্নত পরিকাঠামো। আর তাই পরিকাঠামো খাতে ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন চিদম্বরম।
অনেক সময়ই দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এলেও, পরিকাঠামো ক্ষেত্র তেমন ভাবে লগ্নি টানতে পারেনি। তাই চিদম্বরমের এই পরিকল্পনা-প্রস্তাব। সরকার আশা করছে, ভারতীয় বাজার এতটাই লোভনীয় যে বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে ৪৭ শতাংশ লগ্নি আসবে। বাকি লগ্নি আনতে, সরকারি-বেসরকারি যৌথ ভাবে নতুন কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
যেমন, এক, পরিকাঠামো ঋণ তহবিল (আইডিএফ) তৈরি করা। এই তহবিলগুলো পরিকাঠামো প্রকল্পে কম সুদে ঋণ দেবে। চিদম্বরম বলেন, “ইতিমধ্যেই ৪টি আইডিএফ সেবি-র কাছে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি তহবিল ফেব্রুয়ারিতেই খুলেছে।
দুই, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী সংস্থা, যারা বাজারে বন্ড ছাড়তে চায়, তাদের সাহায্য করবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং আইআইএফসিএল।
তিন, বাজারে ফের কর-মুক্ত বন্ড ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ৫০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত কর-মুক্ত বন্ড ছাড়তে পারবে সংস্থাগুলি।
চার, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করার কথা উঠে এসেছে এ বছরের বাজেটে। সেই সঙ্গে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় মায়ানমারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ তৈরির কথা বলা হয়েছে।
পাঁচ, ২০,০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল তৈরি।
ছয়, পণ্য মজুত করতে গুদাম তৈরির জন্য নাবার্ডকে পাঁচ হাজার কোটি অর্থসাহায্য।
এ ছাড়াও পরিকাঠামো বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে ইউপিএ সরকার। বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছে তারা। কারণ, এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার মুখে পড়তে দেখা যায়। যেমন, সড়ক তৈরিতে চটজলদি লাভের মুখ দেখে না লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। ফলে খুব বেশি সংস্থা এগিয়েও আসে না। এ জন্যই সড়ক তৈরিতে একটি নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তৈরি করার কথা ভাবছে সরকার। আগামী ছ’মাসের মধ্যে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং উত্তরপ্রদেশে অন্তত ৩০০০ কিলোমিটার সড়ক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। মন্ত্রিসভায় লগ্নি বিষয়ক কমিটিও তৈরি করা হয়েছে।
চেন্নাই-বেঙ্গালুরু শিল্প করিডর তৈরির করার কথা ভাবা হচ্ছে। বেঙ্গালুরু-মুম্বই শিল্প করিডরের প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে দিল্লি-মুম্বই শিল্প করিডর তৈরিতে অতিরিক্ত অর্থসাহায্য দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এ সবের সঙ্গে সাতটা নতুন শিল্পনগরী তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। এর মধ্যে গুজরাতের ধুলেরা এবং মহারাষ্ট্রের শেন্দ্রা বিডকিন শিল্পনগরী তৈরির কাজ এই আর্থিক বছরেই শুরু হবে।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বন্দর-নির্মাণ। তাতে নাম উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গেরও। এক হাজার লক্ষ টন পরিবহণ ক্ষমতা রয়েছে, এমন দু’টি নতুন বন্দর তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সাগর এবং অন্ধ্রপ্রদেশে। |
|
|
|
|
|